স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বুধবার আগের ২৪
ঘণ্টায় ৯৬ জন কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে।
গত বছর মহামারীর প্রাদুর্ভাবের পর এক
দিনে এত মৃত্যু আর কখনও দেখেনি বাংলাদেশ। এর আগে সর্বাধিক মৃত্যুর রেকর্ডটি হয়েছিল
গত সোমবার। সেদিন ৮৩ জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল।
গত ৩১ মার্চ ৫২ জনের মৃত্যুর পর থেকে
দৈনিক মৃত্যু কখনোই ৫০ এর নিচে নামেনি। বরং বাড়ছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে মৃত্যু
ও আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ায় বুধবার থেকে সর্বাত্মক ‘লকডাউন’ শুরু
করেছে সরকার। এর মধ্যে সর্বাধিক মৃত্যু এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার
খবর এল।
আরও ৯৬ জনের মৃত্যুতে দেশে মোট মৃতের
সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৯৮৭ জন।
মাঝে দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার
ছাড়ালেও গত ২৪ ঘণ্টায় সেই সংখ্যাটি নেমে এসেছে। এই সময়ে ৫ হাজার ১৮৫ জন রোগী শনাক্তের
খবর জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এনিয়ে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে
দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৩ হাজার ১৭০ জন।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত কয়েক দিন
ধরেই দিনে ৬ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়ে আসছিল। এর মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার
৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম
সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ; তা ৬ লাখ পেরিয়ে যায় গত ১ এপ্রিল। সে হিসেবে
১৬ দিনেই আক্রান্ত হল আরও ১ লাখ লোক।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ৩৩৩ জনের সেরে
ওঠার তথ্য এসেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে। তাদের নিয়ে সুস্থ রোগীর সংখ্যা
দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৯১ হাজার ২৯৯ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায়
শনাক্ত রোগীর হার ২০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এই পর্যন্ত শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক
৮০। আর শনাক্ত রোগীদের মৃত্যুর হার দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৪২ শতাংশে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪
ঘণ্টায় সারা দেশে ২৫৫টি ল্যাবে ২৪ হাজার ৮২৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত
পরীক্ষা হয়েছে ৫০ লাখ ৯৫ হাজার ৬১৩টি নমুনা।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তালিকায়
বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৯তম
অবস্থানে।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত
বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ৩১
মার্চ তা ৯ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের
মধ্যে ৫৯ জন পুরুষ আর নারী ৩৭ জন। তাদের মধ্যে ২ জন বাড়িতে মারা গেছেন, বাকিদের
মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে।
মৃতদের মধ্যে ৫৫ জনের বয়স ছিল ৬০
বছরের বেশি, ২৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ১২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, ২ জনের বয়স
৩১ থেকে ৪০ বছর এবং ২ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০
বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ৬৮ জন ঢাকা বিভাগের, ১২
জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৫ জন খুলনা বিভাগের, ৫ জন বরিশাল বিভাগের, ৩ জন সিলেট বিভাগের
এবং ৩ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৯ হাজার ৮২২
জনের মধ্যে ৭ হাজার ৪৩৫ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ৫৫২ জন নারী।