ক্যাটাগরি

ফটো স্টোরি: স্মৃতিতে বৈশাখ

করোনাভাইরাস মহামারী ঠেকানোর যুদ্ধে দ্বিতীয়বারের মতো থমকে গেল বাঙালির নতুন বছর উদযাপনের উৎসব। বহুবছরের ঐতিহ্যে পরিণত হওয়া রমনা বটমূলের প্রভাতী সঙ্গীত আর চারুকলার মঙ্গলশোভাযাত্রার আয়োজন গতবছরের মতো এবারও তুলে রাখতে হয়েছে বৃহত্তর মঙ্গলের প্রত্যাশায়। বঙ্গাব্দ ১৪২৮ এর প্রথম দিন আমাদের আলোকচিত্রীরা আর্কাইভ থেকে ফিরিয়ে এনেছেন বৈশাখী উৎসবের পুরনো কিছু স্মৃতি।

  • নববর্ষের সকাল সুনসান রমনা বটমূল। বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ছায়ানটের বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রতিবছর এখানে জড়ো হন প্রচুর মানুষ। ১৯৬৪ সালে শুরু হওয়া ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করোনাভাইরাস সঙ্কটের কারণে বন্ধ ছিল গত বছর, মহামারী ভয়ানক রূপ নেয়ায় এ বছরও বন্ধই থাকল।

  • করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত বছর বন্ধ রাখা হয়েছিল বাংলা নববর্ষের সব অনুষ্ঠান। মঙ্গল শোভাযাত্রাও বের হয়নি বলে বৈশাখের দিনে জনমানবহীন ছিল চারুকলা অনুষদ।

  • ১৪১২ সালের মঙ্গল শোভাযাত্রা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ১৯৮৯ সাল থেকে নিয়মিতভাবে এ শোভাযাত্রার আয়োজন করে আসছিল।

  • ১৪১৩ সালে মঙ্গল শোভাযাত্রায় মূল আকর্ষণ ছিল বিশাল এই ময়ূর। বৈশাখের প্রথম সকালে চারুকলার এই মঙ্গল শোভাযাত্রা এখন ইউনেস্কোর ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ’।

  • বিশাল এ বাঘ শোভা পেয়েছিল ১৪১৪ সালের মঙ্গল শোভাযাত্রায়। লক্ষ প্রাণের উচ্ছ্বল এই শোভাযাত্রায় এবার ছেদ টেনেছে করোনাভাইরাস।

  • বিশাল আকৃতির পেঁচা আর হাতি ছিল ১৪১৬ সালের মঙ্গল শোভাযাত্রার পুরোভাগে। কোনো ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই চারুকলার শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের নিজেদের প্রয়াসে প্রতিবছর এ শোভাযাত্রার আয়োজন হচ্ছিল।

  • ১৪১৮ সালের মঙ্গল শোভাযাত্রায় স্থান পাওয়া নানান মোটিফের মধ্যে অন্যতম ছিল দানবাকৃতির বিশাল একটি কুমির। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়টি এই প্রতীকের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছিল সেবার।

  • মঙ্গল শোভাযাত্রা ১৪১৭। সেবার মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল আকর্ষণ ছিল হাতি, সওয়ারসহ ঘোড়া, ময়ূর ও পাখির প্রতিকৃতি।

  • ১৪২১ সালের মঙ্গল শোভাযাত্রার আকর্ষণ ছিল হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের দুঃসময়ের কাণ্ডারির প্রতীক ‘গাজী ও বাঘ’; সমৃদ্ধির প্রতীক লক্ষ্মী পেঁচা, শিশু হরিণ, মা ও শিশু, হাঁস ইত্যাদি।

  • ১৪১৯ সালের মঙ্গল শোভাযাত্রার বিশাল এ নৌকা ব্যবহৃত হয়েছিল সমুদ্র বিজয় আর যুদ্ধাপরাধের বিচারের প্রতীক হিসেবে।

  • মঙ্গল শোভাযাত্রা ১৪২২। প্রতিটি মঙ্গল শোভাযাত্রায় থাকে শত শত রঙ্গিন মুখোশ। চারুকলার শিক্ষার্থীদের তৈরি এসব মুখোশ বিক্রির অর্থ দিয়ে খরচ মেটানো হয় শোভাযাত্রার।

  • মঙ্গল শোভাযাত্রা ১৪২৪। জাতিসংঘের সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর মঙ্গল শোভাযাত্রাকে তাদের ‘রিপ্রেজেনটেটিভ লিস্ট অব ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।

  • মঙ্গল শোভাযাত্রা ১৪২৬। ত্রিশ বছরে পা দেয়া এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার স্লোগান ছিল ‘মস্তক তুলিতে দাও অনন্ত আকাশে।’

  • রমনা বটমূল ১৪১৩। বৈশাখের প্রথম সকালে ছায়ানটের শিল্পীদের গানে গানে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার এই অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল ১৯৬৪ সালে।

  • রমনা বটমূল ১৪২৫। শুরুর পর থেকে মুক্তিযুদ্ধের কারণে কেবল ১৯৭১ সালে বন্ধ ছিল বাঙলির প্রাণের এ অনুষ্ঠান। এরপর করোনাভাইরাস মহামারীতে ২০২০ ও ২০২১ সালে পর পর ২ বছর বন্ধ হল আবার। তবে এবারও টিভিতে সম্প্রচারের মাধ্যমে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান করেছে ছায়ানট।