সেঞ্চুরিয়নে বুধবার তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৯ উইকেটে জিতেছে
পাকিস্তান। এইডেন মারক্রাম ও ইয়ানেমান মালানের ফিফটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা করে ২০৩
রান। সফরকারীরা সেটি পেরিয়ে যায় দুই ওভার বাকি থাকতেই।
টি-টোয়েন্টিতে এটি পাকিস্তানের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে
জয়ের রেকর্ড। এই সিরিজেরই প্রথম ম্যাচে ১৮৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জয় ছিল তাদের আগের
রেকর্ড।
এই সংস্করণে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিতে মাত্র ৫৯ বলে ১২২ রান
করেন
অধিনায়ক বাবর। আহমেদ শেহজাদের অপরাজিত ১১১ ছাড়িয়ে পাকিস্তানের কোনো ব্যাটসম্যানের
ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস এটিই।
বাবরের সঙ্গে ১৯৭ রানের উদ্বোধনী জুটির পথে ৪৭ বলে
অপরাজিত ৭৩ রান করেন রিজওয়ান। টি-টোয়েন্টিতে যেকোনো উইকেটে চতুর্থ সর্বোচ্চ জুটি
এটি, রান তাড়ায় সর্বোচ্চ। পাকিস্তানের
আগের সর্বোচ্চ জুটি ছিল দ্বিতীয় উইকেটে শেহজাদ ও মোহাম্মদ হাফিজের
১৪৩, ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
চার ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল সফরকারীরা।
নিয়মিত খেলোয়াড়দের বেশ কয়েক জনকে ছাড়াই সিরিজটি খেলছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
সুপারস্পোর্ট পার্কের ব্যাটিং উইকেটে রান তাড়ায় ঠিক যেন
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের মতোই এগোয় পাকিস্তান। পাওয়ার প্লেতে স্বাগতিকদের রান ছিল
বিনা উইকেটে ৬৫, পাকিস্তান তোলে ৬৪। দুই দলেরই উদ্বোধনী জুটির রান একশ স্পর্শ করে
ঠিক ৬০ বলে।
দারুণ সব শটের পসরা সাজিয়ে বাবর ফিফটি পূর্ণ করেন ২৭ বলে।
পরের পঞ্চাশে যেতে তার লাগে কেবল ২২ বল। ৯০ থেকে তাবরাইজ শামসিকে টানা ছক্কা-চারে
স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক। বাবর-শেহজাদ ছাড়া এই সংস্করণে পাকিস্তানের হয়ে সেঞ্চুরি আছে
কেবল রিজওয়ানের।

সেঞ্চুরির পর বাবরকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন রিজওয়ান। ছবি: পিসিবি
জুটি ভাঙতে পারতো অবশ্য ১৩৫ রানে। কিন্তু বিউরান
হেনড্রিকসের বলে পয়েন্টে রিজওয়ানের ক্যাচ ফেলেন পিট ফন বিলিয়োন।
টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের প্রথম ১০ উইকেটে জয়ের পথেই
এগোচ্ছিল পাকিস্তান। তবে জয় থেকে ৭ রান দূরে থাকতে বিদায় নেন বাবর। তার ১২২ রানের
ইনিংস গড়া ১৫ চার ও ৪ ছক্কায়।
লিজাড উইলিয়ামসের পরের দুই বলে দুই বাউন্ডারিতে জয়
নিশ্চিত করেন ফখর জামান। রিজওয়ানের ৭৩ রানের ইনিংসে ৫টি চারের সঙ্গে ছক্কা ২টি।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে মারক্রাম ও মালানের ব্যাটে
উড়ন্ত সূচনা পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। পঞ্চম ওভারে হাসান আলির টানা চার বলে তিনটি চারের
সঙ্গে একটি ছক্কা হাঁকান মারক্রাম।
দুই ওপেনারের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে বাড়তে থাকে রান। মারক্রাম
২৫ বলে পূর্ণ করেন ফিফটি, সিরিজে তার টানা তৃতীয়। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এই ব্যাটসম্যানকে
বোল্ড করে ১০৮ রানের জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ নওয়াজ। মারক্রামের ৩১ বলে ৬৩ রানের ইনিংস সাজানো ৪ ছক্কা ও
৬ চারে।
তিন নম্বরে সুযোগ পেয়ে ঝড় তোলার ইঙ্গিত
দিয়ে থামেন জর্জ লিন্ডে (১১ বলে ২২)। প্রথম দুই ম্যাচে ইনিংস বড় করতে না পারা মালান এবার ফিফটি তুলে নেন
৩৬ বলে। এরপরই ফেরেন তিনি। ৪০ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৫৫ রান।
বেশিক্ষণ টেকেননি ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হাইনরিখ
ক্লাসেন। দলের স্কোর দুইশ ছাড়ায় মূলত রাসি ফন ডার ডাসেনের
ব্যাটে। চোট কাটিয়ে সিরিজে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা এই ব্যাটসম্যান ২০ বলে ২ ছক্কা
ও একটি চারে ৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে
দুইশ বা এর বেশি রান করল কোনো দল। সেই রানও পাকিস্তান পেরিয়ে গেল অনায়াসেই।
একই মাঠে আগামী শুক্রবার সিরিজের চতুর্থ ও শেষ ম্যাচে
মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ২০৩/৫ (মালান ৫৫, মারক্রাম ৬৩, লিন্ডে ২২, ডাসেন ৩৪*, ক্লাসেন ১৫, ফেলুকওয়ায়ো ১১, আফ্রিদি ৪-০-৩৯-১, নওয়াজ ৪-০-৩৮-২, হাসান ৪-০-৪৭-১, রউফ ৪-০-৪০-০,
ফাহিম ৪-০-৩৭-১)।
পাকিস্তান: (লক্ষ্য ২০৪) ১৮ ওভারে
২০৫/১ (রিজওয়ান ৭৩*, বাবর ১২২, ফখর ৮*; লিন্ডে ৪-০-৩৮-০, হেনড্রিকস ৪-০-৫৫-০,
উইলিয়ামস ৪-০-৩৪-১, শামসি ৩-০-৩৯-০, মাগালা ৩-০-৩৮-০)
ফল: পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: চার টি-টোয়েন্টির সিরিজে তিন ম্যাচ শেষে ২-১-এ এগিয়ে
পাকিস্তান
ম্যান অব দা ম্যাচ: বাবর আজম।