নতুন সপ্তাহের ‘কঠোর’ লকডাউনে সকাল থেকে কড়াকড়িই দেখা গেছে রাজধানীতে। প্রায় সবখানেই চলাচল ছিল খুবই সীমিত। যারা বের হয়েছেন, পুলিশের সামনে পড়লেই জেরার মুখে পরতে হয়েছে। মুভমেন্ট পাস দেখতে চেয়েছে পুলিশ।
তবে দুপুরের পর ইফতারের কথা যারা বলেছেন, তাদের ‘একটু সুযোগ’ দিয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। যদিও কাউকে প্রধান সড়ক ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। শুধু সংযোগ সড়কে কেনাকাটা করার জন্য ছাড় দেওয়ার কথা বলছে পুলিশ।
এমন প্রেক্ষাপটে কড়াকড়ির এই লকডাউনে রাজধানীবাসীর ভরসা অলিগলির হোটেল ও রেস্তোরাঁর ইফতার। পুরান ঢাকার চকবাজারেও বসেনি ঐতিহ্যবাহী ইফতারের বাজার। নামিদামি রেঁস্তোরা ও বেকারিগুলো খোলা থাকলেও অনেক দূর থেকে সেগুলোতে যাওয়ার সুযোগ ছিল না।
এ কারণে চকের সড়ক যেমন হাকডাকবিহীন ফাঁকা পড়েছিল, তেমনি এসব রেস্তোরাঁও হোটেলগুলোর ইফতারি কেনাকাটাতেও চিরচেনা সেই ভিড় ছিল না। রসনা বিলাসে নগরবাসীকে প্রথম রোজায় তাই একটু রয়েসয়েই থাকতে হয়েছে।
পুরান ঢাকার বাসিন্দা মোস্তাক আহমেদ সব সময় চকবাজার থেকে ইফতারি কেনেন। গত বছরের মতো এবারও কিনতে না পারায় একটু নিরাশার কথাই জানালেন। ইফতারি জমাতে তাই একটু বিকল্প পথই বেছে নিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, “সমস্যা নাই, ইসলামপুর ও পাটুয়াটুলীর ডিসেন্ট, দিল্লী হোটেল, গ্রামীণ বেকারী, মোঘল হোটেল থেকে ইফতারি কিনব। এগুলোতে ভালো ইফতারি পাওয়া যায়।“
বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীন ফকির বলেন, তাদের থানাধীন এলাকার আনন্দ বেকারি, নাজিরাবাজার বিরিয়ানী দোকান থেকে পার্সেল নেওয়া যাবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাই এসব স্থান থেকে ইফতারি কিনতে পারবেন।
প্রথম রোজায় অনেকে চকবাজার শাহী মসজিদের সামনের সড়কে এসে চকের ইফতারি না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, এখানকার ঐতিহ্যবাহী ইফতারি ছাড়া ঠিক জমে না। যেহেতু সড়কের মধ্যে ইফতারি দোকান বসে, বেচাকেনা হয় তাই ঝুঁকিও থাকে কম। সে বিবেচনায় সুযোগ দেওয়ার কথা বলেন তাদের কেউ কেউ।
চকবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (পেট্রোল) আবদুল্লাহ আল মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, খোলা জায়গায় কোনো দোকান থাকবে না। তবে হোটেল ও বেকারি থেকে পার্সেল নেওয়া যাবে।
সরেজমিনে আজিমপুর, লালবাগ ও চকবাজার ঘুরে দেখা যায়, অলিগলির সব হোটেল ও রেস্তােরাঁয় কেনাবেচা হচ্ছে।
আজিমপুরের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ বছর অলিগলির হোটেল, এমন কি নামিদামি রেস্তােরাঁ খোলা থাকছে। কিন্তু গত বছর কিছুই খোলা ছিল না।
তিনি বলেন, লালবাগের রয়েল হোটেল খোলা রয়েছে। এখানে অনেক ভালো ইফতারি পাওয়া যায়।
দেলোয়ার হোসেন নামে একজন অবশ্য বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার তাগিদ দেন সবাইকে। তিনি বলেন, এই লকডাউন প্রয়োজন ছিল। ইফতারিতো কিছু পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের তেমন কষ্ট হচ্ছে না।
গুলশান বিভাগের পুলিশের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, লকডাউনের প্রথমদিন সকাল থেকেই কড়াকড়ি চলেছে। তবে বিকালে ইফতারি কেনাকাটায় একটু নমনীয়তা প্রদর্শন করা হচ্ছে।
কাউকে মুভমেন্ট পাস ছাড়া প্রধান সড়ক দিয়ে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, নামিদামি রেস্তোরাঁ ও হোটেল খোলা রয়েছে। এখান থেকে নগরবাসী পার্সেল নিতে পারবেন।
আরও পড়ুন:
এবার রোজায় কখন সেহেরি, কখন ইফতার