বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “এই লকডাউনকে কেন্দ্র করে তারা (সরকার) একটা ক্র্যাকডাউনে নেমেছে। এই ক্র্যাকডাউনে নেমে তারা সমস্ত বিরোধী দলের নেতা-কর্মী, আমাদের দলের নেতা-কর্মী, অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী, অন্যান্য সংগঠনের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে, হয়রানি করছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।”
“ক্র্যাকডাউনের এই সুযোগটা (লকডাউন) নিয়ে তারা (সরকার) বিরোধী দলের বাড়িতে হামলা করছে। সারাদেশে দলের নেতা-কর্মীরা কেউ বাড়িতে থাকতে পারছে না।“
সংবাদ সম্মেলন থেকে নেতা-কর্মীদের মুক্তি
ও মামলা প্রত্যাহারের আহবান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “দেশে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করুন, গণতান্ত্রিক স্পেস তৈরি করুন। অন্যথায় এর খেসারত আপনাদেরকে অবশ্যই দিতে হবে। জনগণের কাছে তার দায়-দায়িত্ব আপনাদেরকে বহন করতে হবে।“
২৬ মার্চে স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর দিন থেকে বিভিন্ন ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে, বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাক্ষণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করতে শুরু করেছে।”
“এখন পর্যন্ত আমরা যে হিসাব পেয়েছি, তাতে বিএনপির ১৮১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, পাবনায় একজন গ্রেপ্তার হওয়ার পরে তার মৃত্যৃ হয়েছে। ছাত্রদলের ৮১ জন, যুব দলের ৩০ জন, স্বেচ্ছাসেবক দলের গ্রেপ্তার হয়েছেন ১১ জন। আগে গ্রেপ্তার হওয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু গতকাল জামিনে মুক্ত হলেও জেলগেট থেকে গ্রেপ্তার করে আবার পুলিশ নতুন করে মামলা দিয়েছে। দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরীকেও একইভাবে নতুন করে আরেকটি মামলায় জড়িত করে চারদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।”
ফখরুল বলেন, “এই যে অবস্থাটা তৈরি হয়েছে এটাকে হালকা করে দেখার অবকাশ নেই। আমরা যেটা দেখছি, আওয়ামী লীগ বরাবরই যেটা করে এসেছে তা হচ্ছে, যেহেতু জনগণ তাদের কাছে নেই, গণভিত্তি নেই এবং এভাবে অত্যাচার-নির্যাতন-গ্রেপ্তার-হত্যার মধ্য দিয়েই তাকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হবে। সেই কারণে এই পবিত্র রমজান মাসেও তারা এই ধরনের হীন কার্যক্রমের সঙ্গে লিপ্ত হয়েছে।”
সরকার হেফাজত ইসলামকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে বিএনপির ওপর নির্যাতন বাড়াচ্ছে কিনা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে একটা কর্তৃত্ববাদী এক দলীয় সরকারকে পুরোপুরিভাবে প্রতিষ্ঠা করা। সেই লক্ষ্যে তারা শুধু বিএনপি নয়, শুধু বাম জোট নয় বা অন্যান্য দল নয় বা ইসলামী দলগুলো নয় বা হেফাজত নয়। সকলের উপরে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে, যাতে করে কোনো বিরোধী কন্ঠ উচ্চারিত না হয়, ভিন্ন মত না আসে –এটাই হচ্ছে তাদের প্রধান লক্ষ্য।“
তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে জনগণ যে স্বপ্ন নিয়ে, আশা-আকাংখা নিয়ে এদেশে যুদ্ধ করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মধ্য দিয়ে, সেই জাতি সেই দেশের জনগণ কখনোই এই ধরনের কর্তৃত্ববাদী, একনায়কতন্ত্র, একদলীয় শাসনব্যবস্থা মেনে নেবে না।“