বৃহস্পতিবার রাতে পরিবারটির সড়কে
অবস্থানের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে
পড়লে তা মহানগর পুলিশের নজর আসে। শুক্রবার পুলিশের হস্তক্ষেপে তাদের লালখান বাজারের দুবাই কলোনির ওই ভাড়া বাসায় তুলে দেয়া হয়েছে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) আবু বক্কর সিদ্দিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মহামারীকালে বকেয়া ভাড়ার জন্য ঘর থেকে বের করে দেওয়া এবং রাস্তায় রাত কাটানো একপ্রকার অমানবিক কাজ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
থেকে এ ঘটনা জানার পর বাড়িওয়ালার সঙ্গে
কথা বলে তাদের বাসায় তুলে দেয়া হয়েছে।“
দুবাই কলোনির মোহাম্মদ মোস্তফার দোতলা ভবনে ভাড়া থাকতেন নোয়াখালীর বাসিন্দা কানাই দেবনাথ। স্ত্রীসহ দুই সন্তান, মা ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছোটভাই নিয়ে
তাদের পরিবার।
কানাই চট্টগ্রাম ওয়াসাতে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকের কাজ করলেও গত বছরর করোনাভাইরাসের কারণে সাধারণ ছুটির
সময় চাকরি চলে যায়। পরে স্থানীয় একটি ডেকোরেটার্স প্রতিষ্ঠানে স্বল্প টাকায় কাজ নেন।
কানাইয়ের ছোটভাই শ্রীধাম দেবনাথ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মহামারীর সময়ে দাদার কাজ চলে যাওয়ায় তিন মাসের ভাড়া মিলিয়ে ২১ হাজার টাকা বকেয়া পড়ে। বিভিন্ন সময়ে ভাড়া দেয়ার জন্য চাপ দেয়া হলেও তা পরিশোধ করা যায়নি।“
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক পাশ করা শ্রীধাম জানান, তিনি
টিউশনি করে পরিবারের সাহায্য করার চেষ্টা করতেন। মহামারীর কারণে সেটাও কঠিন হয়ে গেছে। চাকরির চেষ্টা
করেও পাচ্ছেন না।
বাড়িওয়ালা বিভিন্ন সময়ে বাসা ছেড়ে দিতে চাপ
দিচ্ছিল জানিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, “বৃহস্পতিবার বাড়ি ভাড়ার টাকা বকেয়ার কথা বলে তাদের সবাইকে বাড়িওয়ালা মোস্তফা বের করে দিয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে দেন।
“বিকেলের দিকে তারা ঘরের সামনে থাকলেও
গভীর রাতে নগরীর ওয়াসার মোড়ে এসে অবস্থান নেন।“
তিনি বলেন, “এরপর তাদের অবস্থানের কেউ ফেইসুবকে পোস্ট করলে তা ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে বাড়িওয়ালার সঙ্গে কথা বলে শুক্রবার সকালে ওই বাসায় তুলে
দেয়।“
পুলিশ কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, “আমরা বিষয়টি দেখবো। শুক্রবার রাতে ওই পরিবার ও বাড়িওয়ালে ডাকা হয়েছে। তাদের সঙ্গে
কথা বলে বিষয়টি ফয়সালা করা হবে। প্রয়োজনে পুলিশ ওই পরিবারের পাশে থাকবে।“
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের লালখান বাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল হাসনাত বেলাল বলেন, “ঘটনার পর ওই পরিবারের পক্ষ থেকে কাউন্সিলর কার্যালয়ে অভিযোগ করা না হলেও
বিষয়টির দিকে নজর রাখছি।“