ডানহাতি ব্যাটসম্যানের লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা বল। দারুণ ড্রিফট ও অবিশ্বাস্য বাঁক খেয়ে ব্যাটসম্যানের ডিফেন্সকে ফাঁকি দিয়ে অফ স্টাম্পে ছোবল। ২৮ বছর আগে মাইক গ্যাটিংকে যেভাবে বিভ্রান্ত করেছিলেন ওয়ার্ন, শুক্রবার যেন একইরকম ঐন্দ্রজালিক মুহূর্ত উপহার দিলেন পার্কিনসন। এবার শিকার হওয়া ব্যাটসম্যান অ্যাডাম রোজিংটন।
ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে ৮৭ রানে ৮ উইকেট হারানো নর্থ্যাম্পটনশায়ারের হয়ে লড়াই করছিলেন অধিনায়ক রোজিংটন। পার্কিনসনের সেটি ছিল ১৯তম ওভার, ইনিংসের ৬০তম। লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরে পিচ করা বলে ব্যাক ফুট ডিফেন্সে টার্ন কাভার করার চেষ্টা করেন ব্যাটসম্যান। কিন্তু বিশাল ও তীক্ষণ টার্নে ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে আঘাত হানে অফ স্টাম্পের মাথায়।
হতভম্ব ব্যাটসম্যান একবার নিজের ডিফেন্স, আরেকবার বোলারের দিকে এক পলক তাকিয়ে হাঁটা দেন ড্রেসিং রুমের পথে।
পার্কিনসনের সেই ডেলিভারি ঝড় তোলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ডেলিভারিটির ভিডিও টুইটারে পোস্ট করে ওয়ার্নকে ট্যাগ করে ধারাভাষ্যকার ও সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভন লেখেন, ‘হাউ গুড ইজ দিস, শেন ওয়ার্ন?’
ওয়ার্ন পরে টুইটারে স্কাই স্পোর্টস ও ভনকে ট্যাগ করে প্রশংসা করেন পার্কিনসনের ডেলিভারির।
“ওয়াও! তারও কি এটা গ্রীষ্মের প্রথম ডেলিভারি? হাহাহাহা। দারুণ লেগেছে, অভিনন্দন, ভালো বল করেছো। স্পিনেই জয়!!!”
‘গ্রীষ্মের প্রথম ডেলিভারি’ কিনা জানতে চেয়ে ওয়ার্ন আরও মিল খুঁজতে চেয়েছেন নিজের সঙ্গে। তার ডেলিভারিটি যে ১৯৯৩ অ্যাশেজে নিজের প্রথম বলই ছিল!
অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ বোলার হিসেবে অধিনায়ক অ্যালান বোর্ডার সেদিন বল তুলে দিয়েছিলেন ওয়ার্নের হাতে। স্পিনে বেশ দক্ষ মাইক গ্যাটিং ছিলেন স্ট্রাইকে। ডানহাতি গ্যাটিংয়ের লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরে পিচ করে বল তীক্ষ্ণ বাঁকে ভেঙে দিয়েছিল ইংলিশ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের অফ স্টাম্প।
কী ঘটে গেল, বুঝে উঠতে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন গ্যাটিং। অস্ট্রেলিয়ানদের উল্লাস দেখে বুঝে নিতে হয়েছিল বোল্ড তিনি! আনন্দময় বিস্ময়ে কিপার ইয়ান হিলি লাফিয়ে উঠলেন।
ওই ইনিংসের চারটির সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসে আরও চার উইকেট নেন ওয়ার্ন। পান ম্যাচ সেরার পুরস্কার। অস্ট্রেলিয়া ১৭৯ রানে জিতে এগিয়ে যায় সিরিজে।
২৪ বছর বয়সী পার্কিনসন অবশ্য এখনও টেস্ট ক্রিকেটের স্বাদ পাননি। ইংল্যান্ডের হয়ে এখনও পর্যন্ত খেলতে পেরেছেন দুটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি।