শনিবার সকাল সাড়ে দশটার
দিকে বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নে ১৩২০ মেগাওয়াটের এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টে সংঘর্ষের
ঘটনা ঘটে। যাতে পাঁচজন শ্রমিক নিহত হন।
২০১৬ সালেও গণ্ডামারা
ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনা এলাকায় এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এ কয়লা
বিদ্যুৎকেন্দ্রের জায়গা অধিগ্রহণ নিয়ে স্থানীয়দের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন নিহত
হয়েছিলেন।
বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী
ফেডারেশন (স্কপ) এক বিবৃতিতে বলে, “বিদ্যুৎকেন্দ্রে বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে শ্রমিকরা দাবি জানিয়ে
আসলেও মালিকপক্ষ বরাবর এড়িয়ে গেছে এবং তাদের উপর নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। আজ
তাদের ন্যায্য বেতন-বোনাসের দাবিতে আন্দোলনের এক পর্যায়ে মালিকপক্ষ তাদেও উপর চড়াও
হয়। পরে মালিকের নির্দেশে পুলিশ এসে শ্রমিকদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়।”
তিনি বলেন, “শ্রমিকদের দাবি নিয়ে
কথা বলার অধিকার ন্যায়সম্মত। ফলে তাদের ন্যায্য দাবি নিয়ে গড়ে উঠা গণতান্ত্রিক
আন্দোলনে পুলিশ গুলি করার অধিকার কোথায় পেল?
“পুলিশের উচিত ছিল, মালিকপক্ষকে চাপ দিয়ে শ্রমিকদের দাবি আদায় করা। অথচ সেখানে আমরা দেখলাম,
মালিকের মদদে একটা রাষ্ট্রীয় বাহিনী জনগণের পক্ষে কাজ না করে
সরকারি নির্দেশে নিরীহ নিরস্ত্র শ্রমিকের উপর নির্বিচারে গুলি চালালো।”
বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি) এক
বিবৃতিতে বলে, বকেয়া
বেতন-ভাতাসহ কতিপয় দাবিতে শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবি না মেনে কোনো যৌক্তিক সমাধান
না করে এহেন হত্যাকাণ্ড চালিয়ে শ্রমিকদের দমন করার অপচেষ্টা রুখে দিয়ে হত্যার
বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে রক্তাক্ত বাঁশখালী
বাঁশখালীর ঘটনা রাজনৈতিক ইন্ধনে: সাংসদ
বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ, নিহত ৫
এক বিবৃতি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)
বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত হত্যাকারীদের চিহ্নিত করা এবং দোষীদের
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন
১৪ দলের শরিক জাতীয়
সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এক বিবৃতিতে নিহত শ্রমিকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, আহতদের
সুচিকিৎসা, শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার দাবি জানান।
তারা অবিলম্বে বিচার
বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে নিরীহ শ্রমিক ও গ্রামবাসীদের উপর গুলিবর্ষণ ও নির্মম
হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান।
বাম গণতান্ত্রিক জোট এক
বিবৃতিতে বলে, বাঁশখালীতে
পরিবেশ ধ্বংস করে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের শুরুতেও এলাকাবাসী
প্রতিবাদ করতে গেলে ৬ জনকে হত্যা করা হয়।
১০ দফায় শ্রমিকদের দাবির
মধ্যে ছিল মাসের শুরুতে ৫-১০ তারিখের মধ্যে বেতন, রমজানে বিকেল ৫টার মধ্যে ছুটি এবং রমজানে ইফতারের জন্য বরাদ্দ, যখন তখন ছাঁটাই বন্ধ, ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের আইন অনুযায়ী পাওনা পরিশোধ করা।
/এসএইচ/ আইএস/