রোববার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চে জামিন আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ হয়েছে।
ওই অধ্যক্ষ হলেন লক্ষীপুরের চন্দ্রগঞ্জ উপজেলার আত-তামরীন ইন্টারন্যাশনাল হিফযুল কোরআন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ মোহাম্মদ ইউসুফ।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি মাদ্রাসার শিক্ষক মাসুম বিল্লাহের যৌন নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত না করে উল্টো ঘটনা প্রকাশ করায় নির্যাতনের শিকার শিশু শিক্ষার্থীকে মারধর করেন।
আবেদনের শুনানিতে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি অধ্যক্ষের ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, “এ ধরনের জঘন্য ঘটনায় যারা জড়িত তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করা উচিত। যেখানে যৌন নির্যাতনকারী শিক্ষককে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া প্রয়োজন ছিল, সেখানে উল্টো শিশুটিকেই নির্যাতন করা হয়েছে। উল্টো বিচার করেছে সে (অধ্যক্ষ)। ওই অধ্যক্ষও সমানভাবে দোষী। তাই তিনি এ মুর্হূর্তে জামিন পেতে পারেন না। তার আরও কিছুদিন কারাগারে থাকা উচিত।“
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান।
মাইনুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অধ্যক্ষের ভূমিকা নিয়ে আদালত উষ্মা প্রকাশের পাশাপাশি আইনজীবীদের নৈতিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা স্মরণ করিয়ে দেন। আদালত বলেছেন, যৌন নির্যাতন বা মাদকের মামলার আসামিদের ক্ষেত্রে আইনজীবীদের দেখেশুনে মামলা নেওয়া উচিত।”
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নির্যাতনের শিকার শিশুটি আত-তামরীন ইন্টারন্যাশনাল হিফযুল কোরআন মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী। আবাসিকভাবে থেকে সে পড়ালেখা করত। মাদ্রাসার শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ খাওয়ার রুমে ডেকে নিয়ে শিশুকে যৌন নির্যাতন করে।
এ ঘটনা কাউকে জানালে শিশুটিকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। এর মধ্যে মাদ্রাসা সাতদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।
ছুটি শেষে শিশুটি বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় যেতে চায় না। কিন্তু শিশুটির মা শিশুটিকে যেতে বাধ্য করলে সে সবকিছু খুলে বলে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ওই শিশুর মা ও আত্মীয়-স্বজন মাদ্রাসায় গিয়ে অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদকে ঘটনাটি জানান।
ঘটনাটি তদন্ত করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
কিন্তু অধ্যক্ষ ওই ঘটনার তদন্ত বা অভিযোগ ওঠা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ঘটনা প্রকাশ করে মাদ্রাসার সুনাম ক্ষুন্ন করার অভিযোগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শিশুটিকে মারধর করে আটকে রাখে।
খবর পেয়ে গত ১ মার্চ নির্যাতনের শিকার শিশুর মা ও আত্মীয়-স্বজনরা মাদ্রাসায় যান। শিশুটিকে আহত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন।
পুলিশ এসে অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ মোহাম্মদ ইউসুফ ও মাসুম বিল্লাহকে আটক করে।
এ ঘটনায় ওই শিশুর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। এতে দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।