ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রশাসনকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়ার বিষয়ে জনগণকে আস্বস্ত করতে রীতিমত বেগ পেতে হচ্ছে। এমনই একজন ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের সিটি হলের কর্মী লিও মার্টিন।
টিকাদান কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্যারিসের একটি বাজারে প্রচারপত্র বিলি করছিলেন মার্টিন। এক নারী তার কাছে জানতে চান এটি কাদের টিকা? অ্যাস্ট্রাজেনেকার নাম শুনতেই ওই নারী বলেন, “না, আমি এটি চাই না।”
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে নানা জনমত জরিপ এবং সরকারের টিকাদান কর্মসূচির পরিসংখ্যানে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়ে জনমনে ব্যাপক সন্দেহ তৈরি হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। যদিও এই টিকা নেওয়ার পর রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা খুবই বিরল। কিন্তু তাতেই জনমনে এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে মার্টিন বলেন, “অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়ে জনমনে অবশ্যই অনীহা তৈরি হয়েছে। যদিও আমরা লোকজনকে এর ঝুঁকি খুবই কম বলে আস্বস্ত করার চেষ্টা করছি। কিন্তু এই মুহূর্তে জনমন থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়ে শঙ্কা দূর করতে আমরা খুব বেশি কিছু করতে পারিনি।”
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা সমানে আসার পর ডেনমার্ক এই টিকার ব্যবহার বন্ধ করে দেয়। আর ফ্রান্সসহ ইইউভুক্ত আরও বেশ কয়েকটি দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়ার বিষয়ে বয়সসীমা বেঁধে দিয়েছে।
ইইউ’র ওষুধ নজরদারি সংস্থা অবশ্য বলছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে সামান্য ঝুঁকির তুলনায় লাভ অনেক বেশি। তাই টিকাদান কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া উচিত। বেশিরভাগ দেশের সরকারও জনগণকে এই টিকা নিতে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে।
তবে একেবারে কেউ যে টিকা নিচ্ছেন না বিষয়টি তেমনও নয়। প্যারিসে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় একটি কেন্দ্র থেকে টিকা নেয়ার পর ৭০ বছরের দাবো মামাদোউ বলেন, “আমি আশপাশের সবাইকে টিকা নিতে উৎসাহ দিয়েছি। কিন্তু রক্ত জমাট বাঁধার খবর শুনে পরিচিত বেশ কয়েকজনই অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।”
ফ্রান্সে ফাইজার এবং মডার্নার কোভিড-১৯ টিকাও দেওয়া হচ্ছে।