অথচ অনেকেই এক বাক্যে স্বীকার করবেন,
‘শিশুর ঘুমিয়ে থাকার অবস্থা দেখতেই শান্তিময়।’ বিশেষ করে সেই শিশু যদি হয় অসম্ভব চঞ্চল।
আর যে কোনো শিশুর ঘুম ভালো না হলে সারাদিন
খিটখিটে আচরণ করবেই। বাড়ন্ত শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশেও ঘুম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করে।
শিশু-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন
অবলম্বনে শিশুর ভালো ঘুমে জন্য করণীয় কয়েকটি
বিষয় সম্পর্কে জানানো হল।
ছক নির্ধারণ করা: শিশুর উন্নত ঘুমের জন্য তার ঘুম চক্রকে ছকে আবদ্ধ করতে হবে। এতে ঘুমের পরিমাণ
ও মান ভালো থাকে। শিশুর ভালো ঘুমের জন্য শীতল ও অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরের প্রয়োজন। এছাড়াও,
বাড়তি শব্দ শিশুর নিরবিচ্ছিন্ন ঘুমে ব্যঘাত ঘটায়।
ঘুমের আগে ভালো মতো খাইয়ে নেওয়া উচিত।
ভরা পেটে ঘুম ভালো হয়। দুগ্ধজাত খাবার, কলা, ডিম, মুরগির মাংস দিয়ে রান্না করা খাবার
মস্তিষ্ক থেকে ঘুমের হরমন মেলাটোনিন নিঃসরণে সহায়তা করে।
শিশুকে মালিশ করা ও কুসুম গরম পানিতে গোসল: বড়দের মতো শিশুদেরও মালিশ করলে আরাম
অনুভূত হয়। ফলে ভালো ঘুম হয়। যে কোনো সময়েই শিশুকে মালিশ করা যেতে পারে। তবে শিশুর
ঘুমের আগের সময়ে তাকে মালিশ করা হলে ভালো ঘুম হয় তার।
এছাড়াও, কুসুম গরম পানিতে গোসল শিশুকে
আরাম দেয়। এতে শিশুর শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকে ফলে ঘুম ভালো হয়। অন্যথায়, গরমে ঘুমে
ব্যঘাত ঘটে।
স্ক্রিন টাইম কমানোর: যন্ত্রপাতির নীল আলো যে কারোর ঘুমে বিঘ্ন ঘটায় এবং শিশুদের ক্ষেত্রে
এর প্রভাব বেশি। কারণ এই সময় তাদের চোখ ও মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে থাকে। ২০১৭ সালের শিশুদের
ওপর করা এক গবেষণা থেকে দেখা গেছে, শিশু কিশোররা বৈদ্যুতিক স্ক্রিনের কারণে দেরিতে
ঘুমায়। এছাড়াও, টেলিভিশন ও মোবাইল ফোন শিশুদের শোবার সময়কে আরও বিলম্বত করে, ঘুমের পরিমাণ ও গুণগত মান নষ্ট করে।
সময় নির্ধারণ করা: সাধারণত, ছয় মাস বয়সের ওপরে শিশুদের প্রতিদিন তিনবার অল্প সময়ের জন্য ঘুমের
প্রয়োজন হয়। সকাল, দুপুর ও বিকালের পরে অল্প সময়ের জন্য ঘুম শিশুর জন্য উপকারী।
সাত আট মাসের শিশুদের মধ্যে বিকালের ঘুমের
প্রবণতা কমে যায়। ফলে শিশু দিনের শুরু বা শেষের
দিকে ৯০ মিনিটের মতো লম্বা একটা ঘুম দেয়।
শিশুরা সাধারণত সাড়ে ৫টা ও সাড়ে ৬টার
দিকে ঘুমাতে যায় ও ভোর ছয়টা সাতটার দিকে উঠে এবং দিনের প্রথম ‘ন্যাপ’ নেয় সকাল আটটা.
নয়টার দিকে।
শিশুকে সুযোগ দিন: রাতের ভালো ঘুম চক্রে অভ্যস্ত হতে সময় লাগে। আপনার শিশু যদি আশানুরূপভাবে
ঘুমচক্রে অভ্যস্ত না হয়ে ওঠে তাহলে হাল ছেড়ে দেবেন না।
প্রতিটা শিশুই আলাদা। তাই জোড়াজুড়ি না
করে বরং একটু সময় নিন। সে ঠিকই তার মতো করে ঘুম চক্রে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে।
আরও পড়ুন
লকডাউনে শিশুর অ্যালার্জি সামলাতে