সোমবার রাতে ফেইসবুক পেইজে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় এই আহ্বান জানানোর পাশাপাশি
গ্রেপ্তার হেফাজত নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তিও দাবি করেন তিনি।
হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে রোববার গ্রেপ্তারের পর বাবুনগরী এই
ভিডিও বার্তা দিলেন।
ভিডিও বার্তায় হেফাজত আমির বলেন, “প্রিয় দেশবাসী, হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী
ও তৌহিদি জনতা আপনাদের উদ্দেশ্যে- আপনারা সবুর করুন, ধৈর্য্য ধারণ করুন। কোনো সংঘাতে
যাবেন না, কোনো ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও করবেন না।
“হেফাজতে ইসলাম ভাঙচুর আর জ্বালাও-পোড়াওতে বিশ্বাস করে না বরং হারাম মনে
করে। এগুলোকে জায়েজই মনে করে না।”
‘কিছু কুচক্রী মহল’ গুজব রটাচ্ছে অভিযোগ করে বাবুনগরী বলেন, “মাননীয় সরকারের
প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা এ গুজবে কান দেবেন না যে হেফাজতের উদ্দেশ্য হলো অমুক অমুক
দলকে ক্ষমতায় বসানো। এটা ডাহা মিথ্যা কথা, নির্জলা মিথ্যাচার।
প্রতিষ্ঠার ১১ বছরের কোনো দলের সঙ্গে ‘হেফাজতে ইসলামের কোনো সম্পর্ক’ কেউ
প্রমাণ করতে পারবে না বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন আমির।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর
সফরের বিরোধিতায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালায়
হেফাজত।
এর মধ্যে সুবর্ণজয়ন্তীর দিন ২৬ মার্চ ঢাকায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ
এলাকায় সংঘাত-নাশকতার ঘটনায় মামুনুল হকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।
এসব ঘটনাকে ‘দুর্ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করে ওই দিন তাদের কোনো কমর্সূচি ছিল
না এবং সেগুলোতে তাদের ‘কমান্ড’ ছিল না বলে দাবি করেন হেফাজত আমির।
হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী, আলেম-ওলামা ও দেশের তৌহিদি ছাত্র জনতাকে প্রশাসন
হয়রানি ও গ্রেপ্তার করছে অভিযোগ করে বাবুনগরী বলেন, অবিলম্বে এই ধরপাকড়, গ্রেপ্তারি,
মিথ্যা মামলা হয়রানি বন্ধ করুন।
গতবছরের নভেম্বরে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের
বিরোধিতা করে আলোচনায় আসেন মামুনুল হক।
ভাস্কর্য বিরোধিতা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী
ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়েছে।
এরপর গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁওয়ের একটি রিসোর্টে এক নারীসহ আটক হয়ে আবারও
আলোচনায় আসেন হেফাজতের এই নেতা, যাকে তিনি নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেছেন।
১২ এপ্রিল পিবিআই’র দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনে হেফাজতের প্রয়াত আমীর শাহ আহমদ
শফীর মৃত্যুর ঘটনায় বাবুনগরীসহ হেফাজতের ৪৩ নেতার দায় আছে বলে উল্লেখ করা হয়।