শ্রাবণের (ডানে) সঙ্গে নাদিম (বাঁয়ে)
বলিউডের জনপ্রিয় সুরকার নাদিম সাইফি বৃহস্পতিবার নিজের সহকর্মীর মৃত্যুর দুঃসংবাদটি জানানোর সময় কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, “আমার শ্রাবণ আর বেঁচে নেই।”
শ্রাবণ রাঠোরের বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত কিছু দিন ধরে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
সেখানেই বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে।
সংবাদপত্রটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শ্রাবণের স্ত্রী এবং ছেলে সুরকার সঞ্জীব রাঠোরও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরেকটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তিন দশক আগে মহেশ ভাটের ‘মিউজিক্যাল ফিল্ম’ আশিকি দিয়ে বলিউডে ঝড় তোলেন নাদিম-শ্রাবণ। দারুণ হিট হয়েছিল আশিকীর গানগুলো। আর সেই সঙ্গে তুমুল জনপ্রিয় করে তুলেছিল নাদিম-শ্রাবণ জুটিকে।
তারপর একে একে সাজন, সড়ক, ফুল আউর কাটে, দিল হ্যায় কি মানতা নেহি, দিওয়ানা, পরদেশ, হাম হ্যায় রাহি পেয়ার কে, রাজা হিন্দুস্থানির মতো অনেক চলচ্চিত্রের গানে সুর দিয়ে প্রায় দশক কাল বলিউডে রাজত্ব করেন তারা।
২০০০ সালের দিকে তারা আলাদা হলেও ডেভিড ধাওয়ানের ডোন্ট ডিসটার্ব চলচ্চিত্রে ২০০৯ সালে আবার এক হয়েছিলেন তারা। আশিকি দিয়ে বাঙালি গায়ক কুমার শানুরও বলিউডে অভিষেক হয়েছিল। নাদিম-শ্রাবণের ফের জোড়া লাগানোয় এই গায়কেরও ভূমিকা ছিল।
শ্রাবণের শোকে অভিভূত নাদিম টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, “আমরা পুরোটা জীবন বলতে গেলে একসঙ্গে কাটিয়েছি। সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য দেখেছি একসঙ্গে। দূরে থাকলেও একজনের সঙ্গে আরেকজন কখনও আলাদা ছিলাম না।
“এখন আমার মনে গভীর শূন্যতা। তার ছেলের সঙ্গে কথা হত, সে হাসপাতালে। শ্রাবণের স্ত্রীও হাসপাতালে। আমার নিজেকে খুব অসহায় লাগছে যে তাদের পাশে থাকতে পারছি না। আমার বন্ধুর পাশে দাঁড়িয়ে তাকে শেষ বিদায় জানাতে পারছি না।”
শ্রাবণের ডায়বেটিস ছিল। করোনাভাইরাস সংক্রমণে তার ফুসফুস পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তাকে রাখা হয়েছিল আইসিইউতে। গত এক দিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।
সুরকার শ্রাবণের মৃত্যুতে বলিউডে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শ্রেয়া ঘোষাল, জিৎ গাঙ্গুলি, প্রীতম, আদনান সামির মতো গায়ক-সুরকারদের শোকে ভারী হয়ে উঠেছে টুইটার।