ঘটনার তিন দিন পর অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার কথা থাকায় সাবমেরিনটির ৫৩ নাবিকের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ, এমন আশঙ্কার মধ্যেই শনিবার ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
৪৪ বছরের পুরনো সাবমেরিনটির সঠিক অবস্থান জানা না গেলেও এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে এবং তল্লাশি অব্যাহত থাকবে, ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনী প্রধান ইউডো মারগোনো এমনটি বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
কেআরআই নাংগালা-৪০২ সাবমেরিনটি বুধবার বালি সাগরে এক সামরিক মহড়ায় টপের্ডো অনুশীলনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে নিখোঁজ হয়।
স্ক্যান করে সাগরের ৮৫০ মিটার (২৭৯০ ফুট) গভীরে সাবমেরিনটির উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে এবং এটি জলযানটির স্বাভাবিক সীমার অনেক নিচে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এক সংবাদ সম্মেলনে ইউডো বলেন, “আমরা এখনও অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছি। ওই জায়গায় সাগরের গভীরতা ৮৫০ মিটার বলে শনাক্ত করেছি আমরা। এই গভীরতায় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তাই অত্যন্ত দক্ষতা ও সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হয়।”
তার ধারণা, যে গভীরতায় জলযানটি চলে গেছে তাতে এটিতে ফাটল ধরে যাওয়া কথা।
“সাবমেরিনটির শেষ অবস্থানের আশপাশে ভাসমান ধ্বংসাবশেষ পেয়েছি আমরা,” বলেছেন ইউডো।
এসব ধ্বংসাবশেষের মধ্যে সাবমেরিনের অংশ ছাড়া জায়নামাজও আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শেষ যে এলাকায় থাকা অবস্থায় সাবমেরিনটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সাগরের ওই এলাকায় উদ্ধারকারীরা এক ডজনেরও বেশি তল্লাশি হেলিকপ্টার ও জাহাজ পাঠিয়েছে। উদ্ধারকাজে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ভারত সহায়তা দিচ্ছে।
ইউডোর ভাষ্য অনুযায়ী, সাবমেরিনটিতে যে বাতাস আছে তাতে বিদ্যুৎ না থাকলে শনিবার ভোর পর্যন্ত চলবে আর বিদ্যুৎ থাকলে তাতে পাঁচ দিন চালানো যাবে।
তবে বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য অনুযায়ী, অক্সিজেন সম্পর্কিত এই হিসাবটি আশাবাদী মূল্যায়ন, কারণ এতে ধরে নেওয়া হয়েছে সাবমেরিনটি পানির চাপে পিষ্ট হয়ে যায়নি।
ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর মুখপাত্র জুলিয়াস উইদজোজোনো জানিয়েছেন, ডিজেল-বিদ্যুৎ চালিত সাবমেরিনটি ৫০০ মিটার গভীর পর্যন্ত যেতে পারে, এর বেশি গভীরে গেলে পানির চাপে তা ধ্বংস হয়ে যাবে।
বালি সাগরের গড় গভীরতা এক হাজার ৫০০ মিটার।