কিন্তু মিয়ানমারের জান্তা প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং বেসামরিক বিক্ষোভকারীদের হত্যা বন্ধের দাবিতে পরিষ্কার সম্মতি জানাননি বলে জানিয়েছেন তারা; বলা হয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে।
অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান ন্যাশনস্ (আসিয়ান) নেতাদের বৈঠকের পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহিইদ্দিন ইয়াসিন সাংবাদিকদের বলেন, “এটি আমাদের প্রত্যাশার বাইরে ছিল। আমরা তার পক্ষকে খুব বেশি অভিযুক্ত করার চেষ্টা করিনি কারণ কে এটি করছে তা নিয়ে আমরা ভাবছিলাম না। সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে, আমরা শুধু এতেই জোর দিয়েছি।
“তার দিক থেকে, অন্যপক্ষই সমস্যা তৈরি করছে। তারপরও তিনি একমত হয়েছেন, সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।”
তিনি তার নিরাপত্তা বাহিনীকে সামলাবেন, মিং হ্লাইংয়ের কাছে থেকে এমন প্রতিশ্রুতি চেয়েছিলেন আসিয়ান নেতারা। এই বাহিনী ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে দেখা দেওয়া গণবিক্ষোভ দমনের চেষ্টায় এ পর্যন্ত ৭৪৫ জন মানুষকে হত্যা করেছে বলে দেশটির একটি মানবাধিকার আন্দোলনকারী গোষ্ঠী জানিয়েছে। আসিয়ান নেতারা রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তিও চেয়েছিলেন।
“আমি ও আমার অন্যান্য অনেক সহকর্মী যেসব দাবি তুলেছি তিনি সেগুলো প্রত্যাখ্যান করেননি,” বলেন মুহিইদ্দিন।
আসিয়ানের বর্তমান সভাপতি দেশ ব্রুনেইয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, পাঁচটি পয়েন্টে ঐক্যমত্য হয়েছে। এগুলো হল, সহিংসতার অবসান, সব পক্ষের মধ্যে একটি গঠনমূলক সংলাপ, এই সংলাপ সহজতর করতে আসিয়ানের বিশেষ দূত, সহায়তা গ্রহণ ও ওই দূতের মিয়ানমার সফর।
তবে বিবৃতিতে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
“তিনি বলেছেন, তিনি (মিং অং হ্লাইং) আমাদের কথা শুনেছেন, তিনি যে পয়েন্টগুলোকে উপকারী হবে বলে মনে করছেন সেগুলোই নেবেন,” সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি শেন লং এমনটি বলেছেন বলে চ্যানেল নিউজএশিয়া টেলিভিশন জানিয়েছে।
“তিনি আসিয়ানের গঠনমূলক ভূমিকা পালনের, আসিয়ান প্রতিনিধির সফরের ও মানবিক সহায়তার বিরোধিতা করেননি।”
কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় অনেক দিন লাগবে বলেও জানিয়েছেন লি; বলেছেন, “কারণ তোমাকে সহিংসতা বন্ধ করতে হবে বলা একটি বিষয় আর রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে; এটি বাস্তবায়ন করার মতো আরেকটি বিষয়।”
এসব বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মিং হ্লাইংয়ের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে সৃষ্ট মিয়ানমারের সংকট হ্রাসে প্রথম আন্তর্জাতিক সমন্বিত উদ্যোগ আসিয়ানের এ বৈঠক। মিয়ানমার ১০ জাতির আসিয়ানের সদস্য দেশ। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর এ জোটের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ও সদস্য দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি আছে।