রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান একথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি নির্দেশনা দিয়েছেন যে, অনেকে এমনকি
মধ্যবিত্তরাও দরিদ্রসীমার মধ্যে চলে আসবে এই করোনাভাইরাসের সময়। তারা হয়ত লজ্জায় বলতে
পারবে না।
“সেজন্য ৩৩৩ নম্বরটি প্রচার করছি। যে কেউ খাদ্য কষ্টে থাকলে এই নম্বরে
ফোন করলে তাকেও তালিকাভুক্ত করে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে।”
প্রতিমন্ত্রী জানান, গত বছর করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুতে ত্রাণ মন্ত্রণালয়,
আইসিটি মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক ‘এটুআই’ প্রকল্পের
মাধ্যমে ডাটাবেইজ করা হয়েছে। সেই তালিকা এবারও ব্যবহার করা হচ্ছে।
সিটি করপোরেশনে ভাসমান মানুষের অনেকেরই অন্য জেলার জাতীয় পরিচয়পত্র হওয়ায়
কাউন্সিলররা তাদের তালিকায় নিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ পাওয়ার কথা জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন “আমাদের নির্দেশনা হচ্ছে খাদ্য কষ্টে যে থাকবে, তাকে
তালিকাভুক্ত করে খাদ্য সহায়তা করা।”
মানবিক সহায়তায় এ পর্যন্ত সরকার বরাদ্দ দিয়েছে ৫৭৪ কোটি
৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা, যা থেকে প্রায় এক কোটি ২৪ লাখ পরিবার উপকৃত হবে বলে তিনি জানান।
গত বছরের চেয়ে খাদ্যের মজুদ কম থাকার কথা স্বীকার করে প্রতিমন্ত্রী বলেন,
ইতোমধ্যে সরকার সেটা কাটিয়ে উঠেছে। আমদানি ও লোকাল মার্কেট থেকে সংগ্রহ ২০ লাখ টন
ছাড়িয়ে যাবে।
“এটা যথেষ্ট, কারণ ১৪ থেকে ১৫ লাখ টন খাদ্য সরকারের গুদামে থাকলে এটা দিয়ে
যেকোনো সংকট মোকাবেলা করা যায়।”
তিনি বলেন, চাল, গম মজুদ ছাড়াও নগদ অর্থ রয়েছে। এই নগদ অর্থ দিয়ে মার্কেট
থেকে খাবার কিনে বিতরণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে।
গত বছর একাধিক মোবাইল নম্বর ব্যবহারের মাধ্যমে অনিয়মের কারণে অনেকের বঞ্চিত
হওয়ার কথা তুলে ধরলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত বছর ৫০ লাখ পরিবারকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে
দেওয়ার যে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল, সেখানে মোবাইল নম্বরের মিসইউজের জন্য অথবা অনিচ্ছকৃত
ভুলের জন্য ১৪ লাখ পরিবার সহযোগিতা পায়নি।
“এই ১৪ লাখ পরিবারের জাতীয় পরিচয়পত্রসহ অন্যান্য তথ্য ঠিক করা হচ্ছে। সংশোধন
করা হলেই বাকি পরিবারের মতো তাদেরও সহযোগিতা করা হবে।”
স্বচ্ছ ও সঠিকভাবে খাদ্য বিতরণের লক্ষ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে সমন্বয়
করা হবে জানিয়ে বলেন, করোনাভাইরাসসহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসকদের
অনুকূলে সব সময় অর্থ বরাদ্দ বা মজুদ রাখা হয়।
তিনি জানান ‘এ’ ক্যাটাগরির জেলার জন্য তিন লাখ টাকা আর ‘বি’ ক্যাটাগরি
জেলার জন্য আড়াই লাখ টাকা আর ‘সি’ ক্যাটাগরি জেলার জন্য দুই লাখ টাকা সব সময় মজুদ থাকে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর
মাঝে বিতরণের জন্য সাড়ে ৭ কোটি টাকার প্যাকেটজাত খাবার ক্রয় করা হয়েছে। প্রতিটি প্যাকেটে
চাল, ডাল, তেল, লবন, চিনি, নুডুলস, চিরাসহ বিভিন্ন খাবার রয়েছে।”
প্রতিটি প্যাকেটের মধ্যে প্রায় ১৭ কেজি ওজনের খাদ্যসমাগ্রী থাকবে যা দিয়ে
একটি পরিবার প্রায় এক সপ্তাহ চলবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও ১০ কোটি টাকার খাদ্যসামগ্রী কেনা হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান প্রতিমন্ত্রী
এনামুর রহমান।