রোববার
বাম গণতান্ত্রিক জোটের এই ভার্চুয়াল সভায় দলগুলোর নেতারা ছাড়াও বেশ কয়েকজন
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক বক্তব্য রাখেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো
হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক নজরুল
ইসলাম আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে অপরিকল্পিত লকডাউন
কাজে আসবে না।
করোনাভাইরাস
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকায় ১৪
এপ্রিল থেকে দুই সপ্তাহ কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সরকার। তবে তাতে কাঙ্ক্ষিত ফল
আসা নিয়ে সন্দিহান অনেক বিশেষজ্ঞ।
অধ্যাপক
নজরুল চলমান ‘লকডাউন’কে ‘নন মেডিকেল লকডাউন’ আখ্যায়িত করে স্বাস্থ্য বিধি মেনে
চলাচল স্বাভাবিক রেখে ‘লকডাউন’ দেওয়ার পরামর্শ দেন।
বিএমএ’র
সাবেক সভাপতি ও ডক্টরস প্ল্যাটফর্ম ফর পিপলস হেলথ’র সভাপতি অধ্যাপক রশীদ-ই-মাহবুব
বলেন, “আমরা লকডাউন দিচ্ছি, কিন্তু জীবিকার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি না, ফলে এটা
কার্যকর হচ্ছে না।”
অধ্যাপক
নজরুল ইসলাম ‘মুভমেন্ট পাশ’র নামে পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবি জানান।
জনস্বাস্থ্য
বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, “আমাদের প্রধান দুর্বলতা দৃষ্টিভঙ্গির ও সামগ্রিক
পরিকল্পনার। ক্যাটাগরি করে অধিক, মাঝারী, কম, শূন্য সংক্রমণ এলাকা নির্ধারণ করে
ব্যবস্থা না নিয়ে সারাদেশে ঢালাও লকডাউন অপরিকল্পনার পরিচায়ক। যেখানে ৩ মাসে ১ জনও
রোগী নাই, সেখানে লকডাউন কেন?”
জনস্বাস্থ্য
বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ স্বাস্থ্য বিষয়ক সঙ্কটেও সরকারের আমলা নির্ভরতার
সমালোচনা করেন।
তিনি
বলেন, “জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি স্বাস্থ্যে না থেকে কখনও পুলিশ, কখনও আমলানির্ভর করে
করতে চেয়েছে (সরকার)। ফলে কাঙ্ক্ষিত ফল আসছে না।”
ডা.
বে-নজির বলেন, শুরু থেকেই কাজটি সমন্বয়হীনভাবে চলছে।
“সময়
পেয়েও আমরা প্রস্তুতি নেইনি, গত বছর মার্চে পদক্ষেপ নিলে করোনা দেশে ঢুকতে পারতো
কিনা সন্দেহ। ইতালি, ইউকে থেকে জীবাণুবাহী রোগী ঢুকতে না দিলেই হত।”
স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের সাবেক এই পরিচালক দুর্নীতির বিষয়ে তিনি বলেন, “পদের বদল হয়েছে, দায়িদের
শাস্তি না হওয়ায় স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়নি।”
অধ্যাপক
রশীদ-ই-মাহবুব বলেন, শুধু ভারতের উপর নির্ভর না করে টিকার বিকল্প উৎস খুঁজে রাখা
দরকার ছিল।
ডা.
লেনিন চৌধুরী বলেন, “আমাদের স্বাস্থ্যের কর্তাব্যক্তিদের নজর শুধু কেনা কাটায়,
প্রকল্প গ্রহণে, সর্বজনের স্বাস্থ্য জনগণকে সম্পৃক্ত করার দিকে তাদের আগ্রহ নাই।”
“আমলা
দিয়ে হবে না, জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে,” বরেন তিনি।
সুপ্রিম
কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক, ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সাধারণ
সম্পাদক অধ্যাপক ডা. কাজী রকিবুল ইসলাম, প্রগতিশীল চিকিৎসক ফোরামের সংগঠক ডা.
মনীষা চক্রবর্ত্তী আলোচনায় অংশ নেন।
সিপিবি
সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী
ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকও আলোচনায় যুক্ত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব
করেন বাম জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ।