রোববার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি একথা জানান।
পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি প্রধানমন্ত্রীর
বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দেওয়ার পর ইমরান জাতির উদ্দেশে এ ভাষণ দেন
বলে জানিয়েছে ডন।
ডেপুটি স্পিকার পার্লামেন্টে বলেন, ইমরানের বিরুদ্ধে আনা
অনাস্থা প্রস্তাব পাকিস্তানের সংবিধানের ধারা ৫ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সংবিধানের ওই ধারায় বলা হয়েছে- রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য
প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক দায়িত্ব।
ভাষণে ইমরান অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল হওয়ায় দেশবাসীকে অভিনন্দন
জানিয়েছেন। বলেছেন, ডেপুটি স্পিকার বিদেশি চক্রান্তে সরকার বদলের চেষ্টা ভণ্ডুল করে
দিয়েছেন।
ইমরান জানান, তিনি প্রেসিডেন্টকে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার
পরামর্শ দিয়ে লিখেছেন।
“গণতন্ত্রীদের জনগণের কাছে যাওয়া উচিত এবং নির্বাচন হওয়া
উচিত; জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে তারা কাকে ক্ষমতায় চায়,” বলেছেন তিনি।
অনাস্থা প্রস্তাব বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম
কোর্টে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিরোধী দলগুলো।
“নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন। কোনো দুর্নীতিবাজ শক্তি দেশের
ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার রাখে না। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পরপরই নতুন
নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে,” বলেছেন ইমরান।
তার ভাষণের পর তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী জানান, সংবিধানের
৫৮ ধারা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ প্রেসিডেন্টের কাছে
পাঠানো হয়েছে।
পরে আরেক টুইটে তিনি জানান, মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছে,
তবে সংবিধান মোতবেক প্রধানমন্ত্রী তার কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন।
পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী ও
বিরোধী দলীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন। দেশটির
সংবিধানে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন করার কথা রয়েছে।
ইমরানের সরকারের ভাষ্য, পাকিস্তানে সরকার পরিবর্তনে বিদেশি
একটি রাষ্ট্র মদদ দিচ্ছে। তারা পাকিস্তানের এক রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নিয়ে বলেছে, পাকিস্তানের
সঙ্গে সম্পর্ক কেমন থাকবে তা নির্ধারণ করবে প্রধানমন্ত্রীর বিরদ্ধে ওঠা অনাস্থা প্রস্তাব।
অনাস্থা প্রস্তাব পাস না হলে ইসলামাবাদের পথ কঠিন হয়ে যাবে
বলেও তারা হুমকি দিয়েছে, অভিযোগ তাদের।
রোববার পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরুর
পরপরই ফাওয়াদ এই অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করে স্পিকারকে সংবিধানের আলোকে প্রস্তাবের ব্যাপারে
সিদ্ধান্ত নিতে বলেন।
এরপরই কাসিম সুরি প্রস্তাবটি বাতিল করে দেন।
এ পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে পাকিস্তানের
বিরোধী দলগুলো।
বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন, তারা স্পিকারের এই সিদ্ধান্ত
মানেন না।
“ঐক্যবদ্ধ বিরোধীরা পার্লামেন্ট ছাড়ছে না। আমাদের আইনজীবীরা
সুপ্রিম কোর্টের পথে রয়েছেন। সকল প্রতিষ্ঠানকে পাকিস্তানের সংবিধান রক্ষা, সমুন্নত
ও কার্যকর করার আহ্বান জানাচ্ছি,” বলেছেন তিনি।