রোববার সংসদে সরকারি দলের সংসদ সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী চিনিকলগুলোর তথ্য অধিবেশনে দেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
মন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে দেশে চিনিকলের সংখ্যা ১৫টি। এর মধ্যে একটি চিনিকল (কেরু অ্যান্ড কোং) লাভজনক এবং অলাভজনক চিনিকলের সংখ্যা ১৪টি।”
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২০-২০২১ মাড়াই মৌসুম থেকে অলাভজনক ১৪টি চিনিকলের মধ্যে ছয়টিতে আখ মাড়াই কার্যক্রম স্থগিত আছে বলে সংসদকে জানান শিল্পমন্ত্রী।
স্থগিত থাকা এই ৬টি চিনিকল পঞ্চগড়, সেতাবগঞ্জ, শ্যামপুর, রংপুর, পাবনা ও কুষ্টিয়ায়।
বগুড়া ৫-আসনের সংসদ সদস্য হাবিবর রহমানের প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশে কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তুলতে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) পাঁচ জেলায় কৃষিভিত্তিক শিল্পনগরী/শিল্পপার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।
সেগুলো হল- ঠাকুরগাঁওয়ের বিসিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী; টাঙ্গাইলের বিসিক মধুপুর শিল্প পার্ক (আনারসসহ কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ), বগুড়ার বিসিক উত্তরাঞ্চল কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পপার্ক; রংপুরের বিসিক কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পনগরী এবং মেহেরপুরের বিসিক কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প পার্ক।
চট্টগ্রাম ৪-আসনের সাংসদ দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে চট্টগ্রামের বাড়বকুণ্ডের ‘চিটাগাং কেমিকেল কমপ্লেক্স কারখানা’ ফের চালুর উদ্যোগ নেওয়ার খবর জানান শিল্পমন্ত্রী।
“কারখানা প্রাঙ্গণে একটি নতুন ক্লোর-অ্যালকালি এবং ক্লোরিন সম্পর্কিত বেসিক কেমিকেল, কমপাউন্ড (পিভিসি) প্ল্যান্ট স্থাপনের লক্ষ্যে পেশাদার উপযুক্ত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আর্থ-কারগরি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পাদনের নিমিত্তে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে আরএফপি-এর প্রস্তাব পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত প্রস্তাবটি মূল্যায়নের কার্যক্রম চলমান।”
জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে বিসিকের মোট ৭৯টি শিল্পনগরী আছে।
আরেক সাংসদ মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নে বিসিকের মাধ্যমে ২০০৯ থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭১৫টি বন্ধ শিল্প কারখানা চালু করার তথ্য জানান মন্ত্রী।
জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারীর প্রশ্নের উত্তরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের মোট স্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার ৫১৪ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভ ও অফগ্রিড নয়ানযোগ্য জ্বালানিসহ)। আর চাহিদা প্রতিদিন গড়ে ১৩ থেকে সাড়ে ১৩ হাজার মেগাওয়াট। ‘চাহিদা অনুযায়ীই’ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।
সরকারি দলের এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, এলএনজি আমদানিতে ২০২১-২২ অর্থবছরে পেট্রোবাংলাকে অর্থ বিভাগ থেকে চার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি/অনুদান দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, “সমুদ্রাঞ্চলে অবস্থিত ব্লকগুলো নিজেরা খনন করার পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। অগভীর এবং গভীর সমুদ্রাঞ্চলে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও উৎপাদনকার্যক্রম উচ্চ প্রযুক্তিনির্ভর, অত্যধিক ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় উৎপাদন বণ্টন চুক্তি (পিএসসি) এর আওতায় আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানির মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়ে থাকে।”
প্রতিমন্ত্রী জানান, পেট্রোবাংলার আওতাধীন দেশীয় অনুসন্ধান কোম্পানি বাপেক্সের স্থলভাগে সক্ষমতা থাকলেও সমদ্রাঞ্চলে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও উৎপাদন বিশেষভাবে প্রযুক্তিনির্ভর ও ব্যয়বহুল হওয়ায় সে সক্ষমতা নেই।