মিরপুর
শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ৬ উইকেটে জিতেছে গত তিন আসরের চ্যাম্পিয়নরা।
মোহামেডানের ২৫৫ রান ছাড়িয়ে গেছে ২২ বল বাকি থাকতে।
আফিফের
সঙ্গে ক্রিজে মোসাদ্দেক যোগ দেওয়ার সময় ১৩ ওভারে আবাহনীর প্রয়োজন ছিল ৮৫ রান। ক্রিজে
গিয়েই ঝড় তোলেন অধিনায়ক। চারটি করে ছক্কা ও চারে ৩৭ বলে অপরাজিত ৫২ রানের ইনিংসে দলকে
নিয়ে যান জয়ের বন্দরে।
বোলিংয়ে
৩৬ রানে ২ উইকেটের পর ৩৮ বলে ৪৮ রানের ইনিংসে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন আফিফ।
টস
জিতে ব্যাট করতে নেমে ষষ্ঠ ওভারে ভাঙে মোহামেডানের উদ্বোধনী জুটি। সৌম্য সরকারের
জায়গায় আসরে প্রথমবারের মতো নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন আব্দুল মজিদ। তবে বড় করতে
পারেননি ইনিংস। তানজিম হাসানের বলে ব্যকওয়ার্ড পয়েন্টে ধরা পড়েন শামীম হোসেনের হাতে।
নিজের
মতো খেলছিলেন রনি তালুকদার। মোহাম্মদ হাফিজ ছিলেন সাবধানী। রনির আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে
সচল থাকে রানের চাকা। দুই ছক্কা ও চারটি চারে ৩৯ বলে ৩৪ রান করা ওপেনারকে এলবিডব্লিউ
করে থামান বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানি।
৫৯
রানে ২ উইকেট হারানো দলকে টানেন হাফিজ ও রুবেল মিয়া। সাবধানী ব্যাটিংয়ে দুই জনে গড়েন
১১৪ রানের জুটি। ৬৩ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে বেশি দূর এগোতে পারেননি রুবেল। ৬৫ বলে এক ছক্কা
ও তিন চারে ৫১ রান করেন তিনি।
মন্থর
ব্যাটিংয়ে ৮৮ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন হাফিজ। বাঁহাতি স্পিনার
তানভির আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে থামেন ৭০ রানে। তার ১০১ বলের ইনিংস গড়া দুই ছক্কা ও
ছয় চারে।
শতরানের
জুটিতে পাওয়া ভিত কাজে লাগাতে পারেননি পরের ব্যাটসম্যানরা। তুলতে পারেননি প্রত্যাশিত
ঝড়। নিয়মিত উইকেট হারিয়ে এক ওভার বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় মোহামেডানের ইনিংস।
শেষ
দিকে ৩৭ বলে ৪২ রানের ইনিংসে দলকে আড়াইশ রানে নিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ।
প্রথম
তিন ম্যাচের ব্যর্থতায় দলে জায়গা হারানো মুনিম শাহরিয়ার একাদশে ফিরেই তোলেন ঝড়।
বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুকে ম্যাচের প্রথম তিন বলে মারেন তিন চার। অন্য প্রান্তে
নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। শেষ পর্যন্ত রানের খাতা খুলতে পারেননি
তিনি। রনি তালুকদারের সরাসরি থ্রোয়ে ফেরেন রান আউট হয়ে।
ভালো
শুরুটা বড় করতে পারেননি মুনিম। মুশফিক হাসানের বলে কাভারে নাজমুল অপুর দুর্দান্ত ক্যাচে
থামেন এই বিস্ফোরক ওপেনার। ৬ চারে ২৫ বলে তিনি করেন ৩১।
অষ্টম
ওভারে ৩৯ রানে দুই ওপেনারকে হারানো আবাহনীকে পথ দেখান হনুমা বিহারি ও জাকের আলি। দায়িত্বশীল
ব্যাটিংয়ে দুই জনে গড়েন ৯৮ রানের জুটি। হাফিজের স্টাম্পের বল অফে উড়িয়ে খেলার চেষ্টায়
হাসান মাহমুদকে ক্যাচ দিয়ে থামেন বিহারি। ৭ চারে ভারতের টেস্ট দলের এই ব্যাটসম্যান
৮০ বলে করেন ৫৯।
ক্রিজে
গিয়েই রানের গতি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেন আফিফ। নিজের মতো করেই খেলে যাচ্ছিলেন
জাকের। শুভাগতর বলে ছক্কার চেষ্টায় সীমানায় ধরা পড়েন জাকের। এই কিপার-ব্যাটসম্যানের
৮৯ বলে খেলা ৬০ রানের মন্থর ইনিংসে চার তিনটি।
ক্রিজে
যাওয়ার একটু পরেই শুভাগতকে ছক্কার পর চার মারেন মোসাদ্দেক। পরে চড়াও হন মাহমুদউল্লাহর
উপর। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ৩৬ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন আবাহনী অধিনায়ক। পরের বলে সিঙ্গেল
নিয়ে শেষ করে দেন খেলা।
৩৮
বলে দুই ছক্কা ও চারটি চারে ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন বাঁহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান
আফিফ।
৭
ম্যাচে পঞ্চম জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে আবাহনী আছে তিনে। ৭ ম্যাচে টানা তৃতীয় পরাজয়ে ৬
পয়েন্ট নিয়ে আটে আছে মোহামেডান।
সংক্ষিপ্ত
স্কোর:
মোহামেডান
স্পোর্টিং ক্লাব: ৪৯ ওভারে ২৫৫ (রনি ৩৪, মজিদ ১৪, হাফিজ ৭০,
রুবেল ৫১, আরিফুল ১২, শুভাগত ১৪, জাহিদউজ্জামান ১, নাজমুল অপু ২, হাসান ১, মুশফিক ৫*;
সাইফ ১০-০-৬৯-১, তানজিম ৯-০৬৯-১, আরাফাত ১০-২-৫২-১, তানভির ১০-১-৪১-১, আফিফ ৭-০-৩৬-২,
শামীম ৩-০-২২-০)
আবাহনী
লিমিটেড: ৪৬.২ ওভারে ২৫৬/৪ (মুনিম ৩১, নাঈম ০, বিহারি ৫৯, জাকের
৬০, আফিফ ৪৮*, মোসাদ্দেক ৫২*; নাজমুল অপু ১০-০-৪৭-০, শুভাগত ৮-০-৩৮-১, হাফিজ ১০-১-৪০-১,
হাসান ৭.২-১-৫০-০, মুশফিক ৫-০-৪০-১, রুবেল ৪-০-২১-০, মাহমুদউল্লাহ ১-০-১৯-০)
ফল:
আবাহনী লিমিটেড ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যান
অব দা ম্যাচ: আফিফ হোসেন