ক্যাটাগরি

‘একাত্তরের মত জনযুদ্ধ’ চান গয়েশ্বর

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “বতর্মানে
যে ফ্যাসিবাদী সরকার আছে, এই সরকারের কাছ থেকে গণতন্ত্র আদায় করতে হলে, এই সরকারের
পতন ঘটাতে হলে, সেই একাত্তরের মতই একটা জনযুদ্ধ জরুরি।

“একাত্তরের যুদ্ধে অস্ত্রের প্রয়োজন হয়েছিল, আজকে গণতান্ত্রিক
যুদ্ধ হয়ত অস্ত্রে হবে না। কিন্তু মানসিকভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে, দলমত জাতি-ধর্ম
নির্বিশেষে… আমার মনে হয়, পাকিস্তানি সামরিক জান্তা থেকে ভয়াবহ বর্তমান সরকার,
তাকে তাড়াতে হবে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে।”

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের পর জাতীয় সরকার গঠনের যে
‘ফর্মুলা’ নিয়ে বিএনপি ইদানিং কথা বলছে, সে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে গয়েশ্বর বলেন, “আমাদের
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব যে আহ্বানটা করেছেন জাতীয় সরকারের, তিনি
কিন্তু সেটা নির্বাচনের আগে করার কথা বলেন নাই। তিনি বলেছেন, আগে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ
সরকারের অধীনে নির্বাচন, তারপরে জাতীয় সরকারের মাধ্যমে দেশটাকে বিনির্মাণ করতে হবে।
এটা কোনো তর্কের বিষয় নয়।

“আন্দোলনকারী দলের পক্ষ থেকে তারেক রহমান বলেছেন, জাতীয় সরকার
মাস্ট। বাট আফটার ইলেকশন। বিএনপি দেশটাকে একটা গণতান্ত্রিক ট্র্যাকে আনতে চায়। কত
হাইয়েস্ট সেক্রিফাইস, কত হাইয়েস্ট ঝুঁকি নিতে পারলে এরকম আহবান করা যায়। জাতীয়
সরকার মিনস সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাইট ট্র্যাকে আনতে হবে।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, “দেশে বাজারে সব জিনিসপত্রের
দাম বেড়েছে। একটা জিনিসের দাম ডে বাই ডে কমছে, সেটা হচ্ছে এই সরকার, এই সরকারের
চাটুকার, লুটপাটকারীদের। যেদিন এদেরকে বাজারে ওঠানো হবে, অকশনে দেবেন, কেনার লোক
পাওয়া যাবে না।”

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) একাংশের উদ্যোগে ‘নিরপেক্ষ
নির্বাচন এবং আলোচিত জাতীয় সরকার’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় দুদকেরও সমালোচনা করেন গয়েশ্বর
চন্দ্র রায়।

তিনি বলেন, “দুর্নীতি দমন কমিশন চোখে দেখে না, কানে শোনে না। দেখে
কারে? বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক দলকে। তাদেরকে কাহিল করার জন্য সরকার এই কমিশনকে
ব্যবহার করছে।

“আর দুর্নীতি দমন কমিশন যদি তার নিজের ইচ্ছায়, তার দায়িত্ববোধ থেকে
নজর দেয়, তাহলে তো সচিবালয়ে যা আছে, সবটি বোধহয় আসামি হবে, সব মন্ত্রী, সব এমপি
আসামি হবে। তারা কী সেটা পারছে? দুদককে দুর্নীতি নির্মূলের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে
হবে।”

‘টিপ প্রসঙ্গ’

কপালে টিপ পরার কারণে এক শিক্ষককে হেনস্তা করার ঘটনা ধরে গয়েশ্বর বলেন,
“একজন কনস্টেবল একজন মহিলা অধ্যাপিকাকে, একজন টিচারকে- তাকে কিনা বলে, ‘তুই টিপ দিছস
ক্যান’। আমি কথা বললে দোষ, এখন সুবর্ণা মুস্তাফা তার দলের লোক, পার্লামেন্টে
বলছে। আবার এখন তারে (পুলিশ কনস্টেবল) বরখাস্ত করছে। ক্যান, আগে করতে পারে নাই?”

পুলিশের আইজি এবং ঢাকার পুলিশ কমিশনারের বক্তব্যের সমালোচনা করে গয়েশ্বর
বলেন, “আপনাদের যদি রাজনীতি করার, রাজনৈতিক ভাবনা থাকে, তাহলে ইউনিফর্মটা খুলে এসে
মুজিব কোট পড়ে নামেন। কিন্তু রাষ্ট্রের ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় আপনারা রাজনৈতিক
বক্তব্য রাখতে পারেন কিনা, আপনাদের সার্ভিস রুলে বা সার্ভিস কনডাক্টে এটা এলাউ করে
কিনা, তা একটু পড়ে দেখেন।”

এলডিপির একাংশের সভাপতি আব্দুল করিম আব্বাসীর সভাপতিত্বে আলোচনা
সভায় জাতীয় দলের সভাপতি সৈয়দ এহসানুল হুদা, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম,
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বক্তব্য দেন।