মঙ্গলবার
সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের
সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্র
ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের
প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি চিঠি দিয়েছেন।
তথ্যমন্ত্রী
বলেন, “সেই
চিঠিতে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতিকে উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য উদাহরণ হিসেবে
উল্লেখ করে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র
বিশ্বশান্তি রক্ষা, সন্ত্রাসবাদ দমন এবং রোহিঙ্গাদের সহায়তাদানসহ অনেকগুলো
ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করছে।
“গত
৫০ বছরের মতো ভবিষ্যত ৫০ বছর এবং তার পরও দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক
উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন জো বাইডেন।”
যুক্তরাষ্ট্রের
সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও দৃঢ় হবে তা এই চিঠির মাধ্যমে প্রমাণিত বলে
মন্তব্য করেছেন হাছান মাহমুদ।
তার
ভাষায়, “যুক্তরাষ্ট্র
আমাদের উন্নয়ন সহযোগী, আমাদের উন্নয়ন অভিযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ
অবদান রয়েছে এবং তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার।
“ভবিষ্যতেও
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর হবে এবং দেশের অগ্রগতির ক্ষেত্রে এই
সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।”
নিষেধাজ্ঞার
বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা
দেওয়ার এক সপ্তাহের পরেই যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ দমনে র্যাবের ভূমিকার
প্রশংসা করেছিল। এ বিষয়ে উভয় দেশ কাজ করছে এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়েও
আলোচনা হচ্ছে।
“এখন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠির
পরে নিশ্চয়ই তারা চুপসে গেছেন।”
দ্রব্যমূল্যের
বিষয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, “মানুষের মধ্যে স্বস্তি
আসলে বিএনপির মধ্যে অস্বস্তি বেড়ে যায়। এক কোটি মানুষকে ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া এবং
বিভিন্ন স্থানে ট্রাকে করে স্বল্প আয়ের মানুষকে স্বল্প মূল্যে পণ্য দেওয়ায় মানুষের
মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি এসেছে, এতে বিএনপির অস্বস্তি বেড়েছে।
“বিএনপি
দ্বি-চারিতা করে, প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলনে দ্রব্যমূল্য নিয়ে কথা বলে আর ভেতরে
ভেতরে অসাধু ব্যবসায়ী ও মজুতদারদের পণ্যের দাম বাড়াতে উৎসাহ দেয়।”
দেশের
আইন-আদালত নিয়ে বিএনপি নেতাদের মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, “দেশের আইন এবং আদালত
স্বাধীন বিধায় অনেক আওয়ামী লীগের এমপির বিরুদ্ধেও আদালতের রায় হয়, তারা হাজতে এবং
জেলখানায় যায়। আইন এবং আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছে বিধায় মির্জা ফখরুল
ইসলাম আলমগীর সাহেবরা অনেক মামলায় জামিন পায়।
“আমি
মনে করি দেশে বিএনপির নেতৃত্বে যে অগ্নিসন্ত্রাস হয়েছে, সেগুলোর হুকুমের আসামি
হচ্ছে মির্জা ফখরুলসহ তাদের আরও অনেক নেতা। এ সমস্ত মামলায় তারা জামিন পেয়েছে,
যেটি সমীচীন নয় বলে আমি মনে করি।”
বিদ্যুৎখাতে
ভর্তুকি দেওয়ার প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, “ভর্তুকি দেওয়া না হলে বিদ্যুতের দাম আরও বাড়াতে
হয়, সাধারণ মানুষের অসুবিধা বিবেচনায় রেখে বিদ্যুৎখাতে ভর্তুকি দেওয়া হয়। সরকার
কৃষিখাতেও হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ অবশ্য ভিন্ন
পরামর্শ দিয়েছিল।
“কৃষিখাতে
ভর্তুকি দেওয়ার সুফল হচ্ছে আজকে বাংলাদেশ আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীর ৯২তম হলেও ধান,
সবজি ও মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয়, আলু উৎপাদনে সপ্তম। আলু এখন আমরা বিদেশে
রপ্তানি করি। ভর্তুকি দেওয়ার কারণে আমাদের অর্থনীতি, কৃষি ও সার্বিকভাবে দেশ উপকৃত
হচ্ছে।”