ক্যাটাগরি

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া পদত্যাগ করবেন না

মঙ্গলবার গোটাবায়া তার দলের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের এমনটি জানিয়েছেন বলে খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএনআই।

তবে কোনো দল যদি পার্লামেন্টে ১১৩ আসনের সমর্থন দেখিয়ে নিজেদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারে তাহলে তাদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে তিনি প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন গোটাবায়া। 

শ্রীলঙ্কাজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি হওয়ার পর মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টের অধিবেশন আহ্ববান করা হয়েছে। ২২৫ আসনের পার্লামেন্টে কোন দলের পক্ষে ১১৩ আসনের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, তা নির্ধারণের জন্য এদিন ভোট হবে।

শ্রীলঙ্কার ডেইলি মিররের তথ্য অনুযায়ী, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও ব্যাপক লোডশেডিং নিয়ে ক্ষুব্ধ জনতার ধারাবাহিক প্রতিবাদের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া সোমবার রাজনৈতিক বৈঠক করেছেন।

গোটাবায়া সব দলকে নতুন সরকারে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, কিন্তু বিরোধীদলগুলো তা প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রেসিডেন্টের এ প্রস্তাবকে ‘অর্থহীন’ বলে অভিহিত করেছে তারা।

শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার ২৬ সদস্য রোববার একযোগে পদত্যাগ করেন। তবে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে এবং তার ভাই প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া পদত্যাগ করেননি।

শ্রীলংকাজুড়ে উত্তাল বিক্ষোভে স্লোগান আর প্ল্যাকার্ডগুলো মূলত একজন মানুষকে উদ্দেশ্য করেই লেখা; আর তা হচ্ছে ‘চলে যাও গোটা’, ‘চলে যাও গোটা’। গোটাবায়াকে সংক্ষিপ্ত নামে ডাকা হয় ‘গোটা’। বিতর্কিত এই প্রেসিডেন্টকেই দেশের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের জন্য দায়ী করছেন অনেকে।

রাস্তায় নামা বিক্ষোভকারীরা বলছে, প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা থামবে না।

পুরো মন্ত্রিসভাকে নিয়োগ দেওয়ার আগ পর্যন্ত পার্লামেন্টের স্থিতিশীলতা ও বৈধতা ধরে রাখতে নতুন করে চার মন্ত্রীকে নিয়োগ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া।

শ্রীলঙ্কাজুড়ে মারাত্মক ওষুধ সংকট চলায় মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি ঘোষণা করা হয়েছে।

১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ তলানিতে নেমে যাওয়া এর একটি বড় কারণ।

এ বছর কলম্বোকে প্রায় ৬৯০ কোটি ডলারের ঋণ পরিশোধ করতে হবে, অথচ জ্বালানি তেল, খাদ্য, কাগজের মতো নিত্যপণ্য আমদানির মত যথেষ্ট বৈদেশিক মুদ্রা সরকারের হাতে নেই।

প্রয়োজনীয় জ্বালানির অভাবে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন বন্ধ থাকায় দেখা দিয়েছে চরম বিদ্যুৎ সংকট। প্রতিদিন ১০ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং হচ্ছে, বন্ধ রাখতে হচ্ছে সড়ক বাতি।

শ্রীলঙ্কার পরিসংখ্যান বিভাগ জানিয়েছে, মার্চে মূল্যস্ফীতি হয়েছে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ১৮.৭ শতাংশ বেশি। খাদপণ্যের মূল্যস্ফীতি ৩০.২ শতাংশে পৌঁছেছে।