এই বৃদ্ধার জামিন প্রশ্নে দেওয়া রুলে তার আইনজীবীরা শুনানি করবেন না বলে জানালে মঙ্গলবার রুলটি খারিজ করে দেয় বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাই কোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন, তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ আল মামুন ভূঁইয়া। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম ফজলুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
পরে আইনজীবী আলতাফ হোসেন বলেন, “উনার জামিন আবেদনটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখন আয়েশা আক্তারকে জামিন পেতে হলে ফের নিম্ন আদালতে আবেদন করতে হবে। সেখানে জামিন আবেদন নাকচ হলে তিনি আবার হাই কোর্টে এসে জামিন চাইতে পারবেন।”
২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।
২০২১ সালের শুরুর দিকে এ মামলায় তাদের দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। শামীমের বিরুদ্ধে মাদক, মুদ্রা পাচার ও অস্ত্র আইনেইও তিনটি মামলা রয়েছে।
অনুসন্ধানে জি কে শামীমের মা আয়েশা আক্তারের কোনো বৈধ আয়ের উৎস খুঁজে না পাওয়ায় এ মামলায় তাকেও আসামি করে দুদক।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ গত বছরের ১৬ নভেম্বর এ মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় আয়েশা ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। গত ২৫ জানুয়ারি সে আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
এরপর হাই কোর্টে এসে জামিন চান আয়েশা আক্তার। ওই আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রুল দেন হাই কোর্ট। আয়েশা আক্তারকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেই সঙ্গে ১০ দিনের মধ্যে কারা কর্তৃপক্ষকে আয়েশা আক্তারের শারীরিক অবস্থার চিকিৎসা প্রতিবেদন চাওয়া হয়।
সে ধারাবাহিকতায় রুলটি শুনানির জন্য উঠলে আয়েশা আক্তারের আইনজীবীরা শুনানিতে অনাগ্রহ দেখালে রুলটি খারিজ করা হয়।
ঢাকায় জুয়াবিরোধী অভিযানের মধ্যে ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর জি কে শামীমকে সাত দেহরক্ষীসহ গ্রেপ্তার করে র্যাব।
সেদিন গুলশানের নিকেতনে জি কে শামীমের অফিসে কয়েক ঘণ্টার অভিযানে প্রায় দুই কোটি টাকা, পৌনে দুইশ কোটি টাকার এফডিআর, আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পাওয়ার কথা জানানো হয়।
যুবলীগের সমবায় সম্পাদক পরিচয়ে ঠিকাদারি ব্যবসা চালিয়ে আসা শামীমের বিরুদ্ধে সেসময় টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজির অভিযোগ করা হয়।
তার মালিকানাধীন জিকেবি অ্যান্ড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের হাতে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫৩টি প্রকল্প ছিল। এসব প্রকল্পের চুক্তিমূল্য চার হাজার ৫৫০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন
আত্মসমর্পণের পর কারাগারে জিকে শামীমের মা
দুর্নীতি মামলায় জিকে শামীমের মায়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা