সিএনএন জানায়, বুধবার ঘোষিত এই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের দুই প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েসহ দুটি বৃহত্তম ব্যাংক, কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি এমনকী রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের স্ত্রী এবং মেয়েও।
ঊধ্র্বতন এক মার্কিন প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেছেন, “আজ আমরা রাশিয়ার বৃহত্তম আর্থিক প্রতিষ্ঠান সার্বব্যাংক এবং বৃহত্তম প্রাইভেট আলফা ব্যাংকের ওপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নাটকীয়ভাবে অর্র্থনৈতিক চাপ বাড়াচ্ছি।”
অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের দুই মেয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গে এই কর্মকর্তা বলেন, পুতিন তার কিছু সম্পদ এই মেয়েদের নামে লুকিয়ে রেখেছেন – এমন বিশ্বাস থেকেই যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে নিষেধাজ্ঞার নিশানা করেছে।
তবে পুতিন তার কোন সম্পদ দুই মেয়ে মারিয়া পুতিনা ও ক্যাটেরিনা তিকোনোভার নামে লুকিয়ে রেখেছেন সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে তিনি বলেন, রুশ এলিটদের মধ্যে এই চর্চা আছে। পুতিন, তার সহযোগীদের অনেকে এবং ধনকুবেররা তাদের সম্পদ লুকান।
পরিবারের সদস্যদের দিয়ে তাদের এই সম্পত্তি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায়ই কেবল নয়, বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশেই লুকানো থাকে জানিয়ে প্রশাসনিক এই কর্মকর্তা বলেন, “একারণেই সমন্বিতভাবে তাদের সম্পত্তি এবং বিলাসবহুল সব জিনিস জব্দ করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা সবাই একযোগে ব্যবস্থা নেওয়াটা এজন্যই গুরুত্বপূর্ণ।”
নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার আগে মঙ্গলবারেই সিএনএন জানিয়েছিল, জি-৭ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা আসতে চলেছে।
ঊর্ধ্বতন ওই মার্কিন প্রশাসনিক কর্মকর্তা জি-৭ এবং ইইউ এর ব্যবস্থাপনায় রাশিয়ায় কোনওরকম নতুন বিনিয়োগের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একটি নির্বাহী আদেশ সই করার পর রাশিয়ার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
তাছাড়া, রাশিয়ার অন্যান্য যেসব ব্যক্তিবর্গ নতুন নিষেধাজ্ঞা কবলিত হয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন, সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভসহ দেশটির নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা এবং প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন।
যুক্তরাষ্ট্র এর আগে ১৪০ জনের বেশি রুশ ধনকুবের এবং তাদের পরিবারের সদস্যসহ ৪ শতাধিক রুশ সরকারি কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ওদিকে, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস বলেছেন, পুতিনের ৬০ শতাংশের বেশি সমর তহবিল এরই মধ্যে জব্দ করা হয়েছে। টুটি চেপে ধরা নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতিকে ‘সোভিয়েত যুগে নিয়ে যাচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
ট্রাস জানান, রাশিয়ার ৬০৪ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ৩৫০ বিলিয়নের বেশি ডলারই এখন রুশ সরকার আর পাবে না।