ক্যাটাগরি

অস্থাবর সম্পদ বন্ধক রেখেও ঋণ মিলবে, আইন হচ্ছে

বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘সুরক্ষিত লেনদেন (অস্তাবর সম্পত্তি) আইন ২০২২’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি নতুন আইন।

“আমরা ব্যাংক থেকে যেসব লোন দিই, তার বিপরীতে একটা ইক্যুইটি দিতে হয়। স্থাবর সম্পত্তি বা ক্যাপিটাল ইকুইপমেন্ট থেকে সেগুলো দেওয়া হয়। নতুন আইনে অস্থাবর সম্পত্তিকে ইক্যুইটি হিসেবে নেওয়ার জন্য ব্যাংকিং ডিভিশন থেকে একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।… খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তার মানে এখন থেকে অস্থাবর সম্পত্তিও ইক্যুইটি (বন্ধক) হিসেবে গ্রহণ করা যাবে।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, এ আইন পাস হলে অস্থাবর সম্পত্তির বিপরীতেও ঋণ নেওয়া যাবে। অর্থাৎ ব্যাংকে রাখা স্থায়ী আমানত, বন্ড, দামি গাড়ি, সোনা-রুপা এমনকি মেধাস্বত্ব বন্ধক রেখেও মিলবে ঋণ।

এছাড়া খনিজ সম্পদ, কৃষিজাতপণ্য, প্রক্রিয়াজাত মাছ ও জলজ প্রাণী, গবাদি পশু, রপ্তানি আদেশ অনুযায়ী পণ্য প্রস্তুতের কাঁচামাল, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত, নিবন্ধিত কোম্পানির শেয়ার সার্টিফিকেট, কোনো সেবার প্রতিশ্রুতির বিপরীতে সেবা গ্রহীতার মূল্য পরিশোধের স্বীকৃতিও ঋণের জন্য বন্ধক হিসেবে নিতে পারবে ব্যাংক।

ব্যাংক যখন কাউকে ঋণ দেয়, সেই অর্থের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই জমি বা বাড়ির মত স্থাবর সম্পদ বন্ধক রাখা হয়, যাতে তিনি নির্ধারিত সময়ে ঋণ শোধ করতে ব্যর্থ হলে ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।  

অস্থাবর সম্পদ বন্ধক রাখার নিয়ম অনেক দেশেই রয়েছে, তবে এ ধরনের ঋণ তুলনামূলকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত।

এখন বাংলাদেশে অস্থাবর সম্পদ বন্ধক রাখার সুযোগ দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “মধ্যম ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বন্ধক দেওয়ার মত স্থাবর সম্পত্তি নেই। তারা যেন তাদের অস্থাবর সম্পত্তি জমা দিয়ে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করতে পারে… এটা বিনিয়োগের ভিত্তিটাকে অনেক বড় করবে।”

অস্থাবর সম্পত্তি বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে জালিয়াতির ঝুঁকি বেড়ে যাবে কি না, সেই প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “এটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আপনি শিল্প স্থাপন করতে গেলে তো ব্যাংকের আলাদা ক্রাইটেরিয়া আছে। এটা মধ্যম ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সুবিধা দেবে।

“ব্যাংকের অ্যাপ্রাইজাল (মূল্যায়ন) সিস্টেম আছে, সেটা যদি ফেয়ারলি করে, কেউ স্বর্ণ দিলে ব্যাংক সেটা চেক করে নেবে।”

দ্বৈত কর পরিহার এবং
রাজস্ব ফাঁকি রোধে ইরান ও মালদ্বীপের সঙ্গে আলাদা দুটি চুক্তির খসড়ায় এদিন অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব
বলেন, “ইতোপূর্বে অন্যান্য দেশের সাথে যে দ্বৈত করারোপণ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে, এ দুটি সেরকমই।”

এছাড়া বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০২২ এর খসড়াতেও বুধবার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।