এক প্রতিবেদনে ব্যাংকক পোস্ট
জানিয়েছে, ‘সামাজিকভাবে রক্ষণশীল’ সিঙ্গাপুরে এতদিন চিকিৎসাজনিত কারণ ছাড়া নারী তার
ডিম্বাণু সংরক্ষণ করতে পারতেন না। ওই নীতিমালা এবার শিথিল করতে চলেছে দেশটি।
নতুন নীতিমালায় ২১ থেকে ৩৫
বছরের যে কোনো নারী চিকিৎসাজনিত কারণ ছাড়াও ‘এগ ফ্রিজিং’ সুবিধা বেছে নিতে পারবেন।
আগামী বছর থেকে এ সুযোগ কার্যকর করার কথা ভাবছে দেশটির সরকার।
গতবছর সিঙ্গাপুরে নারীদের
সন্তান প্রসবের হার ছিল এক দশমিক ১২; যেখানে বিশ্বে এই হার গড়ে দুই দশমিক তিন। জনসংখ্যার
বিপদ এড়াতেই সেখানে নীতিমালা সংশোধনের এ উদ্যোগ।
অবশ্য সমালোচকরা বলছেন,
‘এগ ফ্রিজিং’ সুবিধা দিয়ে পরিস্থিতি পরিবর্তনের খুব বেশি আশা নেই। কর্মব্যস্ত এই শহরে
প্রজনন হার বাড়ানোর জন্য এর আগে নানা প্রচেষ্টা নেওয়া হলেও ফলাফল আশাব্যঞ্জক ছিল না।
বিভিন্ন দেশেই এখন ডিম্বাণু
সংরক্ষণ বা এগ ফ্রিজিং পদ্ধতি বেছে নিচ্ছেন নারীরা। তাতে করে একটু বয়স বাড়লেও সন্তান
ধারণের সম্ভাবনা থেকেই যায়।
অনেক নারী ব্যক্তিগত পরিস্থিতির
কারণে ডিম্বাণু সংরক্ষণ করে রাখতে চান; তাদের কথা ভেবেই নীতিমালায় বদল আনছে সিঙ্গাপুর।
বিষয়টির ব্যাখ্যা করে নতুন
নীতিমালায় বলা হয়েছে, “ধরা যাক, তরুণ বয়সে কেউ সঙ্গী খুঁজে পেলেন না, পরে বয়স হলে যদি
তারা বিয়ে করেন তখন সন্তান নেওয়ার কথা তারা ভাবতে পারেন।”
তবে বিবাহিত হলে তবেই একজন
নারী এগ ফ্রিজিং সুবিধা নিতে পারবেন। সন্তান পালনে বিয়ের রীতিকে উৎসাহ যোগাতেই নীতিমালায়
ওই শর্ত রাখার কথা বলেছে সিঙ্গাপুর।
পাশাপাশি ডিম্বাণু সংরক্ষণের
আগে অবশ্যই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়ে এ প্রক্রিয়ার ঝুঁকি ও সীমাবদ্ধতাগুলোর
জেনে নিতে হবে, নীতিমালায় সে পরামর্শও রয়েছে।
নতুন নীতিমালাকে স্বাগত জানালেও
কিছু শর্ত নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন নারী অধিকারভিত্তিক সংগঠন অ্যাওয়ারের গবেষণা ও পরামর্শ
বিষয়ক প্রধান শাইলি হিংগোরানি। তার মতে, বয়স নির্ধারণ করে দেওয়ায় এই সুবিধার সুফলপ্রাপ্তি
সীমিত করে দেবে।
হিংগোরানি বলেন, “যদিও বেশি
বয়সে সন্তান নেওয়ায় অনেক জটিল ঝুঁকি রয়েছে, কিন্তু কোনো নারীকে যদি এ সম্পর্কে সঠিকভাবে
জানানো যায়, এরপর সন্তানধারণ করবেন কি না তা একান্তই তার ইচ্ছার বিষয়।”
কেবল বিবাহিত নারীর ক্ষেত্রে
‘এগ ফ্রিজিংয়ের’ সুযোগ রাখার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এতে করে অবিবাহিত নারী ও সমকামীদের,
যারা কোনো সম্পর্কে রয়েছে এবং সন্তান নিতে আগ্রহী, তাদের সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হল।
“এটা খুবই হতাশাজনক যে এখানে
পরিবার বলতে একটি ধারণাকেই উৎসাহিত করা হচ্ছে।”