টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এই সংস্করণে দুই দলের প্রথম দেখায় ৩ উইকেটে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। লাহোরে মঙ্গলবার একমাত্র টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের ১৬২ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা ছাড়িয়ে গেছে ৫ বল বাকি থাকতে।
দুই দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক দুই অধিনায়ক। পাকিস্তানের হয়ে ৪৬ বলে ২ ছক্কা ও ৬ চারে ৬৬ রান করেন বাবর। ৪৫ বলে ফিঞ্চের ব্যাট থেকে ৬ চারে আসে ৫৫ রান। ম্যাচের সেরাও তিনিই।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই ট্রাভিস হেডকে ছক্কায় ওড়ান মোহাম্মদ রিজওয়ান। পরের ওভারে অভিষিক্ত বেন ডোয়ার্শিসকে চার মারেন বাবর। পরে ন্যাথান এলিসকে মারেন টানা তিন চার, ওভার থেকে আসে ১৪ রান।
ডোয়ার্শিসকে চমৎকার শটে রিজওয়ানের চারের পর দারুণ ড্রাইভে বাবরের ছক্কায় পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে পাকিস্তান তোলে ৫৬ রান।
তবে ভালো শুরুটা কাজে লাগাতে পারেনি স্বাগতিকরা। ধরে রাখতে পারেনি রানের গতি। অষ্টম ওভারে রিজওয়ানকে বোল্ড করে ৬৭ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন ক্যামেরন গ্রিন। পরের বলেই ফেরেন ফখর জামান। বেরিয়ে এসে ফুলটস বলে চড়াও হওয়ার চেষ্টায় ধরা পড়েন মিড অনে।
পরপর দুই বলে উইকেট হারানো দলকে টানা চেষ্টায় ৩৩ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন বাবর। খুশদিল শাহর সঙ্গে জমে উঠতে শুরু করে তার জুটি। কিন্তু অ্যাডাম জ্যাম্পাকে স্লগ সুইপে ছক্কায় ওড়ানোর পর আবার ড্রাইভ করে ছক্কার চেষ্টায় সীমানায় ধরা পড়েন বাবর।
ঝড় তোলার আগেই আসিফ আলিকে বিদায় করা এলিস পরের ওভারে দুই বলের মধ্যে বিদায় করেন খুশদিল ও শাহিন শাহ আফ্রিদিকে। মাঝে শন অ্যাবটকে ছক্কা-চার মেরে সেই ওভারেই বিদায় নেন হাসান আলি।

ছবি: আইসিসি
পাকিস্তানের ইনিংস দেড়শ ছাড়ায় উসমান কাদিরের ব্যাটে। ডোয়ার্শিসকে চার ও ছক্কার পর মারেন আরেকটি চার। ৬ বলে কাদির অপরাজিত থাকেন ১৮ রানে।
শুরুতে খরুচে বোলিং করা এলিস শেষ পর্যন্ত ২৮ রানে নেন ৪ উইকেট।
রান তাড়ায় উড়ন্ত সূচনা করে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ৩ ওভারে আসে ৩৩ রান। চতুর্থ ওভারে হারিস রউফকে ছক্কা মারার পর এর পুনরাবৃত্তির চেষ্টায় ধরা পড়েন হেড। ভাঙে ৪০ রানের জুটি।
এরপর শট খেলতে শুরু করেন অধিনায়ক ফিঞ্চ। তাকে খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি জশ ইংলিস। কাদিরকে ছক্কা মেরে পরের বলে ধরা পড়েন কাভারে।
টি-টোয়েন্টি অভিষেকে মার্নাস লাবুশেনের দ্রুত বিদায়ের পর ক্রিজে গিয়ে লেগ স্পিনার কাদিরকে টানা তিনটি চার মারেন মার্কাস স্টয়নিস। পরের ওভারে মোহাম্মদ ওয়াসিমকে টানা দুই চার মেরে ফিরে যান বোল্ড হয়ে। স্রেফ ৯ বলে পাঁচটি চারে ২৩ রান করেন স্টয়নিস।
পরের ওভারে গ্রিনকে দ্রুত বিদায় করে ম্যাচে উত্তেজনা ফেরান ওয়াসিম। তবে বেন ম্যাকডারমটকে নিয়ে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন ফিঞ্চ। ৩৭ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে অবশ্য যেতে পারেননি বেশিদূর। ছক্কায় ম্যাচ শেষ করার চেষ্টায় ধরা পড়েন সীমানায়।
দুই বল পর অ্যাবটের অফ স্টাম্প উপড়ে ফেলেন আফ্রিদি। সেই ওভারে বাঁহাতি এই পেসার দেন কেবল ১ রান। তবে তার দারুণ বোলিং ব্যবধানই কমিয়েছে কেবল। রউফের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে চার মেরে ম্যাচ শেষ করে দেন ম্যাকডারমট। তিন চারে ১৯ বলে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
২৪ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পাকিস্তান সফর জয় দিয়েই শেষ করল অস্ট্রেলিয়া। ১-০ তে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ জেতার পর তারা ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল ওয়ানডে সিরিজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৬২/৮ (রিজওয়ান ২৩, বাবর ৬৬, ফখর ০, ইফতেখার ১৩, খুশদিল ২৪, আসিফ ৩, হাসান ১০, আফ্রিদি ০, ওয়াসিম ২*, কাদির ১৮*; হেড ২-০-১৭-০, ডোয়ার্শিস ৩-০-৪২-০, অ্যাবট ৪-০-২৮-১, এলিস ৪-০-২৮-৪, জ্যাম্পা ৪-০-২৯-১, গ্রিন ৩-০-১৬-২)
অস্ট্রেলিয়া: ১৯.১ ওভারে ১৬৩/৭ (হেড ২৬, ফিঞ্চ ৫৫, ইংলিস ২৪, লাবুশেন ২, স্টয়নিস ২৩, গ্রিন ২, ম্যাকডারমট ২২* অ্যাবট ০, ডোয়ার্শিস ০*; আফ্রিদি ৪-০-২১-২, হাসান ৩-০-৩০-০, রউফ ৩.১-০-৩৫-১, কাদির ৪-০-৩৩-২, খুশদিল ১-০-৯-০, ওয়াসিম ৪-০-৩০-২)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৩ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: অ্যারন ফিঞ্চ।