ক্যাটাগরি

বুচার মতো নৃশংসতার শিকার আরও অনেক নগরী আছে: জাতিসংঘকে জেলেনস্কি

ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর মঙ্গলবার জেলেনস্কি প্রথম ভিডিও লিংকের মাধ্যমে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এই ভাষণ দেন।

তিনি বলেন, “বুচার মতো এমন আরও অনেক নগরী আছে এবং আমাদের দেশের অবরুদ্ধ অন্যান্য নগরী ও অঞ্চলে [রাশিয়ানরা] কী করেছে তা এখনও বিশ্বের দেখার বাকি।”

ইউক্রেইনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হচ্ছে উল্লেখ করে জেলেনস্কি বলেন, “এর জন্য রাশিয়াকে জবাবদিহিতা করতে হবে।” জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার সদস্যপদ বাতিলেরও আহ্বান জানান তিনি।

তার মতে, নিরাপত্তা পরিষদ ইউক্রেইনে রাশিয়ার নৃশংসতা বন্ধে সহায়তা করার পথ বের করতে না পারলে, এই পরিষদই ‘ভেঙে যাওয়া উচিত’। কারণ তাদের ব্যর্থতাই প্রমাণ করে দেবে যে, এই পরিষদ কেবল আলোচনা ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না।

বিবিসি জানায়, ইউক্রেইনের বুচায় রুশ বাহিনীর নারকীয় হত্যাযজ্ঞের খবরে সোমবার শহরটি পরিদর্শন করে আসার পর প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জাতিসংঘ ভাষণে এসব কথা বলেন।

বুচায় রাশিয়ার হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অনেক দেশই এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে। ইউরোপের দেশগুলো একের পর এক রুশ কূটনীতিকদেরকে বহিষ্কার করছে।

ছবি: বিবিসি/মাক্সার

ছবি: বিবিসি/মাক্সার

ইউক্রেইনের রাজধানী কিইভের কাছের শহর বুচার রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েকশ মৃতদেহ পাওয়ার পর ইউক্রেইন কর্তৃপক্ষ রাশিয়ার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু করেছে।

ওই মৃতদেহগুলোর কয়েকটির হাত পিছমোড়া করে বাঁধা এবং তাদেরকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে। কিইভ অঞ্চল থেকে রাশিয়ার বাহিনীগুলো সরে যাওয়ার পর সেখানকার কয়েকটি ছোট শহরে অসংখ্য লাশ পাওয়া যাচ্ছে।

জাতিসংঘে রুশ বাহিনীর নৃশংসতার কয়েকটি ভিডিও দেখিয়ে জেলেনস্কি অভিযোগ করে বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদেরকে রাস্তায় গুলি করে মারা হচ্ছে, কুয়ায় ছুড়ে ফেলা হচ্ছে এবং ট্যাংক দিয়ে পিষে ফেলা হচ্ছে।

ইউক্রেইনের রাজধানী কিইভের কাছে বুচা শহরে রাস্তায় রাস্তায় যেমন লাশ দেখা গেছে, তেমন চিত্র দেশটির অন্যান্য অংশেও দেখা যাচ্ছে। গত ৪১ দিনে রাশিয়া কী করেছে তার বহু উদাহরণের মধ্যে বুচার ‘হত্যাযজ্ঞ’ কেবল একটি, বলেন জেলেনস্কি।

ওদিকে, রাশিয়া ইউক্রেইনে কোনওরকম যুদ্ধাপরাধ করা কিংবা বুচা শহরে নৃশংস কোনোকিছু করার কথা অস্বীকার করেছে। বুচার রাস্তায় লাশের যে সমস্ত ছবি সাংবাদিকরা তুলেছে, তা রুশ বাহিনী শহর ছেড়ে যাওয়ার আগে ছিল না বলে দাবি রাশিয়ার।

কিন্তু স্যাটেলাইটের ছবি বিশ্লেষণ করে এবং যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, রুশ বাহিনী মার্চের শেষে বুচার যে রাস্তা ছেড়ে চলে গেছে, সেই একই রাস্তায় ১৯ মার্চে লাশগুলো পড়ে ছিল।