ক্যাটাগরি

বেহুদা মামলা করে বিচারের মুখে হুদা

ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান বুধবার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আগামী ১৭ মে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর দিন ধার্য করে দেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা এ মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেছিলেন এক সময়ের বিএনপি নেতা হুদা। বিচারক তা নাকচ করে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন বলে দুদকের আইনজীবী এম এ সালাউদ্দিন ইস্কান্দার জানান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রী নাজমুল হুদা ওই দল ছেড়ে নতুন দল গড়েছিলেন। পরে ক্ষমতাসীন জোটে ভেড়ার চেষ্টা করেও হালে পানি পাননি। 

বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে মামলা করার পর নাজমুল হুদা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ২০১৭ সালে তার কাছে সোয়া তিন কোটি টাকা ঘুষ দাবি করেন বিচারপতি এস কে সিনহা।

“সে সময় তিনি আমাকে বলেছিলেন, টাকা না দিলে আমার বিরুদ্ধে করা সবকটি মামলার রায় বিরুদ্ধে যাবে। ঘটনার তারিখ ছিল ২০ জুলাই। ওই দিন দুপুরে প্রধান বিচারপতি তার খাস কামরায় ডেকে ঘুষ দাবি করেন।”

সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘খবরের অন্তরালে’র জন্য মীর জাহের হোসেন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে এক মামলায় নাজমুল হুদার ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। জরুরি অবস্থার সময় দেওয়া ওই মামলার রায়ে হুদার স্ত্রী সিগমা হুদারও তিন বছর কারাদণ্ড হয়েছিল।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হুদা ও সিগমা হুদা আপিল করলে ২০১১ সালের ২০ মার্চ হাই কোর্ট তাদের খালাস দেয়। কিন্তু দুদকের আপিলে আপিল বিভাগ ওই রায় বাতিল করে পুনঃশুনানির নির্দেশ দেয়। তখন আপিল বিভাগে ছিলেন বিচারপতি সিনহা।

মামলার পুনঃশুনানি শেষে হাই কোর্টের আরেকটি বেঞ্চ নাজমুল হুদাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয়।

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের তোপের মুখে থাকা প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ২০১৭ সালের নভেম্বরে পদত্যাগ করেন। তার এক বছরের মাথায় ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর শাহবাগ থানায় তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির একটি মামলা করেন নাজমুল হুদা। পরে মামলাটি যায় দুদকের হাতে।

ওই মামলায় হুদা অভিযোগ করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে হওয়া সেই মামলা উচ্চ আদালতে ’খারিজ’ করার পরও প্ররোচিত হয়ে মামলাটির রায় পরিবর্তন করা হয়েছিল।

“মামলাটি ডিসমিস করতে দুই কোটি টাকা ও অন্য একটি ব্যাংক গ্যারান্টির আড়াই কোটি টাকার অর্ধেক ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা উৎকোচ চান এসকে সিনহা।”

পরে হুদার মামলাটি তদন্তের জন্য দুদকে আসে। দেড় বছর তদন্ত করে এসকে সিনহার বিরুদ্ধে নাজমুল হুদার মামলাটি ’মিথ্যা অভিযোগে’ করা হয়েছে বলে প্রমাণ হয়। তখন ‘মিথ্যা তথ্য দেওয়ার’ অভিযোগে উল্টো ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়।

২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন। তদন্ত শেষে গত বছরের অক্টোবরে হুদার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদক পরিচালক বেনজীর আহম্মেদ।

 

পুরনো খবর:

এস কে সিনহা: বিচারাঙ্গনের চূড়া থেকে দণ্ডিত অপরাধী
 

বেহুদা মামলা করে বিপদে হুদা
 

সিনহার বিরুদ্ধে হুদার মামলা