মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে বুধবার ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন কামিন্স। সাত নম্বরে নেমে আইপিএলে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডে এখন তিনি লোকেশ রাহুলের সঙ্গী। দুইজনের পঞ্চাশ ১৪ বলে।
চতুর্দশ ওভারের প্রথম বলে আন্দ্রে রাসেল যখন বিদায় নিলেন কলকাতা তখনও লক্ষ্য থেকে বেশ দূরে। ৪১ বলে তাদের চাই ৬১ রান, হাতে পাঁচ উইকেট। দুশ্চিন্তার ছাপ তখন স্পষ্ট দলটির শিবিরে।
সে সময় উইকেটে যান কামিন্স। ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালিয়ে সব শঙ্কা যেন উড়িয়ে দেন তুড়ি মেরে। ১৫ বলে ছয় ছক্কা ও চারটি চারে ৫৬ রান করে ফেরেন দলের জয়কে সঙ্গে নিয়ে।
প্রথম বলে নেন সিঙ্গেল। পরের বলেই টাইমাল মিলসকে ফাইন লেগ দিয়ে ওড়ান ছক্কায়। ঝড়ের সেই শুরু। এরপর যেন আর কোনো থামাথামি নেই।
মিলসকে চার মারার পর জাসপ্রিত বুমরাহর ওভারে স্ট্রাইক পেয়ে প্রথম দুটি বল খেলেন ‘ডট।’ মুম্বাইয়ের বোলিং আক্রমণের সেরা অস্ত্রকে চার-ছক্কা মারার পর সিঙ্গেল নিয়ে ধরে রাখেন স্ট্রাইক। শেষ ৫ ওভারে কলকাতার প্রয়োজন ছিল ৩৫ রান।
কামিন্স যেন ভাবছিলেন, এতো অপেক্ষা কেন। এক ওভারেই মিলিয়ে দিলেন সমীকরণ। ঝড় বইয়ে দেন স্বদেশী পেসার ড্যানিয়েল স্যামসের উপর দিয়ে।
ওভারের প্রথম চার বলে তিনটি ছক্কার সঙ্গে কামিন্স হাঁকান একটি চার। পরের বলে হতে পারত ছয়, কিন্তু ‘বিমার’ ঠিক মতো খেলতে পারেননি কামিন্স। পরের বলেই চার মেরে স্পর্শ করেন আইপিএলে সবচেয়ে কম বলে ফিফটির কীর্তি।
এতদিন যা ছিল শুধুই রাহুলের, সেখানে এবার ভাগ বসালেন কামিন্স। ২০১৮ সালের আসরে তখনকার কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে সেসময়ের দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিপক্ষে রেকর্ডটি গড়েছিলেন রাহুল।
স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এটি কামিন্সের তৃতীয় ফিফটি। এই সংস্করণে এটি যৌথভাবে তৃতীয় দ্রুততম ফিফটি।
স্যামসের ওই ওভারের শেষ বলে ছক্কায় উড়িয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন কামিন্স। ওভারটি থেকে রান আসে মোট ৩৫! আইপিএলের ইতিহাসে এর চেয়ে খরুচে ওভার আছে কেবল দুটি। সেই দুই ওভারেই এসেছিল ৩৭ করে।
কামিন্সের বিধ্বংসী ব্যাটিং এক প্রান্তে দর্শক হয়ে দেখেন ভেঙ্গাটেশ আইয়ার। এক ছক্কা ও ৬ চারে এই ওপেনার অপরাজিত থাকেন ৪১ বলে ৫০ রান নিয়ে।
টস হেরে ফিল্ডিং নেওয়া কলকাতার হয়ে বল হাতে দিনটি একদমই ভালো কাটেনি কামিন্সের। পাওয়ার প্লের শেষ ওভার করতে এসে দেন ১২ রান। ইনিংসের শেষ ওভারে তাকে তিন ছক্কা হাঁকান কাইরন পোলার্ড। ৪ ওভার করে ৪৯ রান দিয়ে কামিন্স বোলিং শেষ করেন দুই উইকেট নিয়ে।
মুম্বাইয়ের হয়ে দুই ছক্কা ও ৫ চারে ৩৬ বলে ৫২ রান করেন সূর্যকুমার যাদব। আইপিএল অভিষেকে দুটি করে ছক্কা-চারে ১৯ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেলেন ‘বেবি এবি’ নামে পরিচিত ডেওয়াল্ড ব্রেভিস। শেষ দিকে পাঁচ বলে ৩ ছক্কায় ২২ রান করেন পোলার্ড।
ক্যারবিয়ান অলরাউন্ডারের শেষের ঝড় ছাপিয়ে নায়ক কামিন্স। তার স্বপ্নের এক ইনিংসে ২৪ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে কলকাতা।