ক্যাটাগরি

কামিন্সের ব্যাটিং তাণ্ডবে অবিশ্বাসের ঘোর

আইপিএলে বুধবার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও কলকাতা
নাইট রাইডার্স ম্যাচে ব্যাট হাতে ব্যাট হাতে ওই চমক দেখান কামিন্স। এবারের মৌসুমে এটিই
ছিল কলকাতার হয়ে অস্ট্রেলিয়ান টেস্ট অধিনায়কের প্রথম ম্যাচ। মূল কাজ বোলিংয়ে শুরুতে
সফলই ছিলেন তিনি। নিজের প্রথম তিন ওভারে নেন দুটি উইকেট। কিন্তু ইনিংসের শেষ ওভারে
কাইরন পোলার্ডের ব্যাটে তিনি হজম করেন তিনটি ছক্কা। ওভারে দেন ২৩ রান, সব মিলিয়ে ৪-০-৪৯-২।

কে জানত, ঘণ্টা দেড়েক পরই সুদে-আসলে তিনি
পুষিয়ে দেবেন ব্যাটিংয়ে! ১৬৩ রান তাড়ায় যখন আন্দ্রে রাসেল আউট হলেন, কলকাতার আশার সমাধিই
দেখছিলেন অনেকে। তখনও প্রয়োজন ৪১ বলে ৬১ রান। এক প্রান্তে ওপেনার ভেঙ্কাটেশ আইয়ার টিকে
থাকলেও টাইমিং করতেই ধুঁকছিলেন।

কামিন্স নামার একটু পরই দারুণ টাইমিংয়ে
ছক্কা মারেন টাইমাল মিলসকে। পরের বলে চার। তখনও ভাবা যায়নি, সামনে কী অপেক্ষায়। এরকম
টুকটাক চার-ছক্কা তো কতজনই মারেন।

কিন্তু কামিন্সের টর্নেডো এবার থামল না।
পরের ওভারে চার-ছক্কা মারলেন জাসপ্রিত বুমরাহকে। এরপর যখন ৫ ওভারে প্রয়োজন ৩৫ রান,
ড্যানিয়েল স্যামসের এক ওভারেই খেলা শেষ! চারটি ছক্কা ও দুটি চারে অস্ট্রেলিয়ান পেসারের
ওভার থেকেই আসে ৩৫ রান।

কিছু বুঝে ওঠার আগেই যেন সব শেষ। কলকাতার
জয় ২৪ বল বাকি রেখেই। ১৪ বলে ফিফটি কামিন্সের, আইপিএলে যা দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড (যৌথভাবে
লোকেশ রাহুলের সঙ্গে)। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত ৬ ছক্কা ও ৪ চারে ১৫ বলে ৫৬ রান করে।

এমনিতে কামিন্সের ব্যাটিং সামর্থ্য জানা
সবারই। টেস্টে তার দুটি ফিফটি আছে, ব্যাট হাতে কিছু অবদান রাখেন নিয়মিতই। টি-টোয়েন্টিতেও
ছিল দুটি ফিফটি। কিন্তু ম্যাচের এমন পরিস্থিতিতে নেমে এতটা বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ম্যাচ
জিতিয়ে দেবেন, এটা যেন ছাড়িয়ে গেছে সবার কল্পনার সীমানা।

হতাশ মুম্বাই অধিনায়ক রোহিত শর্মা যেমন
ম্যাচ শেষে বললেন, এমন হার মেনে নিতে পারছেন না তিনি।

“কখনোই ভাবতে পারিনি, সে ব্যাটিংয়ে নেমে
এভাবে খেলবে। অনেক কৃতিত্ব তাকে দিতেই হবে, যেভাবে সে খেলেছে। ১৫ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ
আমাদের হাতেই ছিল, ভেবেছিলাম আমরা ওদেরকে বাগে পেয়ে গেছি। কিন্তু কামিন্স যেভাবে খেলল…।”

“শেষ কয়েক ওভার যেভাবে গড়াল… এটা হজম করা
কঠিন। আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।”

কলকাতা অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার শোনালেন আগের
দিনের নেট সেশনের মজার গল্প।

“আমি স্রেফ দেখছিলাম, বল উড়ে উড়ে যাচ্ছে!
অসাধারণ… সে যেভাবে একের পর এক শট খেলছিল, বিশ্বাসই করতে পারছিলান না। কারণ কালকে নেটে
সে একটু পরপরই বোল্ড হচ্ছিল বারবার। পাশের নেটেই আমি ব্যাট করছিলাম।”

শ্রেয়াস তো অবাক হয়েছেনই, কামিন্স বললেন,
তিনি চমকে দিয়েছেন নিজেকেও।

“আমার মনে হয়, সবচেয়ে বেশি অবাক আমি নিজেই!
ভালো লাগছে যে এটা কাজে লেগেছে। আমার পরিকল্পনা ছিল, নিজের আওতায় পেলে ব্যাট চালিয়ে
দেব। বেশি ভেবে জটিল করতে চাইনি। মৌসুমে নিজের প্রথম ম্যাচেই এমন কিছু করতে পারা তৃপ্তিদায়ক।”