বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ক্রমাগত উন্নতিতে এক যুগ আগে যে শ্রীলঙ্কা উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উঠার পথে ছিল, সেই শ্রীলঙ্কা এখন দেনার দায়ে জর্জরিত হয়ে দেউলিয়া হওয়ার পথে।
জ্বালানি তেল কিনতে না পারায় দেশটিতে এখন বিদ্যুৎ মিলছে না, গাড়ি চালানো দুষ্কর হয়ে উঠছে, কাগজের অভাবে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া যাচ্ছে না, দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী। এই পরিস্থিতিতে জনবিক্ষোভে সরকারও পতনের দ্বারপ্রান্তে।
সঙ্কটে পড়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি বাংলাদেশের কাছ থেকেও ঋণ চেয়েছে। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের ঋণ না দেওয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়- শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির ভঙ্গুরতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। শ্রীলঙ্কা অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখে বাংলাদেশের কোনো শঙ্কা আছে কি না?
উত্তরে তিনি বলেন, “এখনও বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক শক্তিশালী। যে বিষয়বস্তু নিয়ে মূল্যায়ন করা হয় সেগুলোতে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো।
“যেসব দেশের জিডিপির তুলনায় ঋণের পরিমাণ বেশি তারা বিপদে আছে। আমরা কিন্তু সেই বিপদে নেই। আমাদের জিডিপির তুলনায় ঋণ এখনও ৩৪ শতাংশ। এজন্য সে সমস্ত দিকে আমরা চিন্তা করি না।”
শ্রীলংকার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন “আমাদের অবস্থান ভালো। আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো এবং অনেক শক্তিশালী এবং আমরা আরও শক্তিশালী হব।
“সামষ্টিক অর্থনীতির এমন কোনো দিক খুঁজে বের করা যাবে না; যেখানে পর্যালোচনা করে বোঝা যাবে যে, সামনের দিকগুলো ভালো নয়।”
শ্রীলংকার সঙ্গে তুলনা হচ্ছে কেন? এতে করে কোনো অস্বস্তি তৈরি হচ্ছে কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে মুস্তফা কামাল বলেন, “কেউ আলোচনা করলে করতে পারে। কিন্তু সেটা আমাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
“আমাদের রিজার্ভ অনেক উপরে আছে। রেমিট্যান্স দিন দিন বাড়ছে, রপ্তানি বাড়ছে, মূল্যস্ফীতির হারও নিয়ন্ত্রিত, টাকাও অবমূল্যায়ন করা হয়নি।”
অর্থনীতির এসব সূচকে বাংলাদেশের ভালো অবস্থানের কথা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, “তাহলে আমাদের সমস্যাটা কোথায়? আমি মনে করি যে আমরা নিরাপদ অবস্থানেই আছি।”