এ ছাড়া, ভারত থেকে
বাংলাদেশগামী কিংবা বাংলাদেশ ভারতগামী ভারতীয়দের এই পরীক্ষা করাতে হচ্ছে না বলে বেনাপোল
আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশ জানিয়েছে।
এই পরীক্ষার জন্য প্রতি
যাত্রীর এক হাজার পাঁচ শত টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এ নিয়ে বাংলাদেশি যাত্রীদের ক্ষোভ
প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ
মহামারীর কারণে প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর সোমবার থেকে বেনাপোল আন্তর্জাতিক
চেকপোস্ট দিয়ে ভ্রমণ ভিসায় ভারত-বাংলাদেশ যাত্রী পারাপার
শুরু হয়েছে।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট
ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি মোহাম্মদ রাজু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ভ্রমণ
ভিসা চালু হওয়ায় বেনাপোল দিয়ে যাত্রী পারাপার বেড়েছে।
তবে নতুন করে যারা ভিসা নিয়েছেন তারাই কেবল ভারতে যেতে পারছেন। পুরনো ভ্রমণ ভিসায়
যাতায়াত আপাতত বন্ধ রয়েছে।
“ভারত ভ্রমণে বাংলাদেশিদের
করোনার ডাবল ডোজ টিকা নেওয়া থাকলেও পেট্রাপোলে তাদের করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সনদ
লাগছে। তবে বুস্টার ডোজ দেওয়া থাকলে এই পরীক্ষা করাতে হবে না।”
তিনি আরও জানান, ভারত
থেকে ফেরার সময় করোনা পরীক্ষা করতে হবে না এবং ভারতীয়দের ডাবল ডোজ টিকা নেওয়া
থাকলে তাদেরও এই পরীক্ষা করাতে হবে না।
ওসি রাজু বলেন, কলকাতার
সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল দিয়ে চিকিৎসা, ব্যবসা ও ভ্রমণে সবচেয়ে
বেশি মানুষ ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করে থাকে। স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর
বেনাপোল দিয়ে প্রায় ১০ লাখ যাত্রী পারাপার হয়ে থাকে। বছরে ভ্রমণ কর বাবদ সরকারের
রাজস্ব আসে প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
পেট্রাপোলে ‘কোভিড
পরীক্ষার নামে হয়রানি’ করা হচ্ছে বলে কুষ্টিয়ার আবুল কালাম (৩৭) ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন,
ভারতীয়রা ডাবল ডোজ টিকায় করোনা নেগেটিভ সনদ বাদেই বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করছে। অথচ
বাংলাদেশিরা ডাবল ডোজ টিকায় ভারতে ঢুকতে পারছে না। পেট্রাপোলে ১৫শ’ টাকা খরচা করে
করোনা পরীক্ষা করাতে হচ্ছে।”
আরও ক্ষোভ প্রকাশ করেন
যশোর সদরের পবিত্র দাস (৪০), মনিরামপুরের হায়দার আলি (৪৫), কুষ্টিয়ার রওশন-আরা
বেগম (৫০)।
কলকাতায় অবস্থিত
বাংলাদেশ দূতাবাস ২৫ মার্চ থেকে ভারতীয়দের ভ্রমণ ভিসার আবেদন গ্রহণ করছে। ৩০ মার্চ
থেকে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসগুলো বাংলাদেশিদের ভ্রমণ ভিসা প্রদান করছে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের
উপপরিচালক আব্দুল জলিল জানান, ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম বাংলাদেশে করোনাভাইরাস
সংক্রমণ দেখা দিলে ১৩ মার্চ সীমান্ত বন্ধ করে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত সরকার।
এতে বন্ধ হয়ে যায় যাত্রী পারাপার। সংক্রমণ কমলে ৬ মাস পর মেডিকেল ও বিজনেস ভিসা
চালু হয়। তবে এসব ভিসায় পারাপারে বিধিনিষেধ থাকায় ভ্রমণে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে দুই
দেশের মানুষের দাবি অনুযায়ী ভ্রমণ ভিসা চালু করা হয়েছে।
অনলাইনে ভিসা কার্যক্রম
করেন এমন এক উদ্যোক্তা ইকবাল হোসেন বলেন, সহজে ভিসা মেলায় ভারত ভ্রমণেচ্ছুদের ভিসা
আবেদন বেড়েছে। বাংলাদেশিদের ভিসা দিতে ভারতীয় দূতাবাস ৮৪০ টাকা চার্জ নিচ্ছে। আর
বাংলাদেশ দূতাবাস ভিসা ফি নিচ্ছে ৮২৫ রুপি।
সীমান্ত পারাপারের সময়
বাংলাদেশ সরকার ভ্রমণ কর বাবদ ১২ বছরের ঊর্ধ্বে প্রত্যেক যাত্রীর কাছ থেকে ৫০০
টাকা, ৫ থেকে ১২ বছরের মধ্যে প্রতি যাত্রীর জন্য ২৫০ টাকা আদায় করছে। আর ৫ বছরের
নিচে শিশুদের ভ্রমণ কর মওকুফ রয়েছে।