গভর্নর নিয়োগের বিষয়ে অবগত একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছে, বৃহস্পতিবারই নতুন গভর্নর দায়িত্বভার বুঝে নিচ্ছেন, শুক্রবার তিনি মুদ্রানীতি নিয়ে বৈঠকও করবেন।
ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি সংকট, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘাটতি ও উচ্চমূ্ল্য, দিনে প্রায় ১৫ ঘণ্টার লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ দ্বীপদেশটির জনগণ প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ও তার সরকারের পদত্যাগের দাবিতে কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ করে যাচ্ছে।
এর মধ্যে গোটাবায়ার পুরো মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করলে দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতা নতুন মাত্রা পায়; মন্ত্রিসভার সদস্যদের আগে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অজিত নিভারদ কাবরালও পদত্যাগ করেন।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজাপাকসে একটি ঐক্যের সরকার গঠনের ডাক দিলেও বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি তার জোট সরকারের অংশীদারদের অনেকেও তাতে সাড়া দেয়নি।
ঋণের জন্য চলতি মাসেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা, অথচ এখন পর্যন্ত দেশটি নতুন অর্থমন্ত্রীই ঠিক করতে পারেনি।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর এবারই সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের মোকাবেলা করতে হচ্ছে ভারত মহাসাগরের এ দ্বীপদেশটিকে।
ঋণের ভারে জর্জরিত সোয়া দুই কোটি মানুষের শ্রীলঙ্কার কাছে এখন আমদানির ব্যয় মেটানোর মতো পর্যাপ্ত বিদেশি মুদ্রা নেই; এ কারণে দেশটিতে জ্বালানি, ওষুধ ও নানান নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন গভর্নর হিসেবে নন্দলাল উইরাসিংহে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা।
নন্দলাল একসময় লঙ্কান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ ডেপুটি গভর্নর ছিলেন, তিনি আইএমএফের সঙ্গেও কাজ করেছেন।
“শুক্রবার বিকালে মুদ্রানীতি সংক্রান্ত বোর্ডের বৈঠক হবে। সম্ভবত পরদিন সকালে মুদ্রানীতি নিয়ে ঘোষণা আসবে, নতুন গভর্নরও সংবাদ সম্মেলন করে তার অগ্রাধিকার ও পরিকল্পনার বিষয়ে বিস্তারিত বলবেন,” বলেছেন নাম প্রকাশে রাজি না হওয়া ওই কর্মকর্তা।
মুদ্রানীতি নিয়ে এই বৈঠক সোমবার হওয়ার কথা ছিল। নতুন গভর্নর বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মন্তব্য চাওয়া হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে তাতে সাড়া দেয়নি।
গভর্নর মিললেও রাজাপাকসের সরকার এখন পর্যন্ত নতুন অর্থমন্ত্রী খুঁজে পায়নি।
সর্বশেষ আলি সাবরি ওই পদে ছিলেন, কিন্তু নিয়োগ পাওয়ার একদিন পর মঙ্গলবারই তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দেন।
সরকারঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, নানান স্তরের একাধিক কর্মকর্তা এবং বেসামরিক খাতের অনেককে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে অনুরোধ জানিয়েও প্রেসিডেন্ট এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা সফল হতে পারেননি।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য প্রেসিডেন্টের এক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তার সাড়া মেলেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।