এ ঘটনায় ওই দুই কিশোরের দুই
বন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আরেক বন্ধুকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে মুক্তারপুর
নৌ পুলিশ স্টেশনের পরিদর্শক লুৎফর রহমান জানিয়েছেন।
বুধবার সকালে সদর উপজেলার
মিরকাদিমের কাঠপট্টি এবং নয়াগাঁও থেকে রিয়াম (১৭) ও আলমগীর (১৮) নামে দুই কিশোরের লাশ
উদ্ধার করা হয়।
সোমবার দুপুরে বন্ধুরা বাড়ি
থেকে ডেকে নিয়েছিল তাদের। পরে পাঁচ বন্ধু মিলে গিয়েছিল কাঠপট্টির ধলেশ্বরীর তীরে। এরপর
থেকে দুজন নিখোঁজ ছিল।
মঙ্গলবার তাদের লাশ উদ্ধারের
পর আলমগীরের বাবা আলাউদ্দিন মাদবর বাদী হয়ে মুক্তারপুর নৌ পুলিশ স্টেশনে হত্যা মামলা
দায়ের করেন তিনজনের বিরুদ্ধে।
‘নেশা জাতীয় ট্যাবলেট খায়িয়ে
মারধর করে’ দুজনকে হত্যা এবং লাশ গুম করার অভিযোগ আনা হয় সেখানে।
এদিকে আলমগীর ও রিয়ামের সঙ্গে
থাকা রুবেল (১৯) ও রনিকে (২৩) বুধবারই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের আরেক বন্ধু অপূর্বকে
গ্রেপ্তারে শুরু হয় অভিযান।
পরিদর্শক লুৎফর বলেন, “গ্রেপ্তার
দুজনের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ করা যাচ্ছে
না। অন্য আসামিকে গ্রেপ্তার করা জরুরি।”
ধলেশ্বরীতে লাশ ভেসে ওঠা ২ কিশোরকে হত্যার অভিযোগ
নিহত রিয়াম ও আলমগীরের মত
রুবেল ও রনি নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন। তবে অপূর্ব বাজারে মুরগির দোকানে কাজ
করতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আলমগীরের মামা আমির হোসেন
বলেন, “অপূর্ব কবুতর চুরি করেছিল, আলমগীর সেটা জানিয়ে দেওয়ায় সালিশ হয়। সে কারণে অপূর্বের
ক্ষোভ ছিল।”
আর রিয়ামের মা ইয়ানুর বেগম
অভিযোগ করেন, ‘জেরে নেশা খাইয়ে পরিকল্পিতভাবে’ হত্যা করা হয়েছে তার সন্তানকে।
বুধবার ময়নাতদন্তের পর আলমগীর
ও রিয়ামের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে এলাকায় নিয়ে তাদের দাফন করা হয়।
আরও দুই লাশ
আলাদা ঘটনায় মুন্সীগঞ্জে
আরও দুটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বুধবার।
বিকালে সদর উপজেলার বায়রা
বকচরের কাছে মেঘনায় আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সী এক যুবকের লাশ ভেসে ওঠে।
ওই যুবকের পরনে ছিল চেক লুঙ্গি
এবং নীল রংয়ের ফুলহাতা শার্ট। লুঙ্গির কোচায় একটি মোবাইল সিম পাওয়া যায়, সেখান থেকে
তার পরিচয় সম্পর্কে একটি ধারণা পেয়েছে পুলিশ।
চরআব্দুল্লাহ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির
পরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, “ওই সিমকার্ডের মালিক খোকন মিয়া নামের একজন। বাড়ি
মির্জাগঞ্জে, তবে ঢাকার বউবাজারে থেকে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। তার পরিবারকে খবর দেওয়া
হয়েছে। তারা এসে লাশ শনাক্ত করলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
তবে কীভাবে ওই যুবকের মৃত্যু
হল, সে বিষয়ে এখনও কোনো ধারণা পায়নি পুলিশ।
এদিকে বুধবার রাত ১১টার দিকে
মিরকাদিমের এক বাসা থেকে মুন্সীগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত
লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নয়েল নামের ওই শিক্ষার্থী
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের চতুর্থ পর্বে পড়তেন। তার বাড়ি ঢাকার দোহারে। মিরকাদিমের ওই
বাসায় অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মেস করে তিনি থাকতেন।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি
আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে, গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মহত্যা
করেছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।”
নয়েলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।