প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বেঞ্চ
বৃহস্পতিবার আদেশের এই দিন ঠিক করে দেয়।
আদালতে জোবায়দার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, দুর্নীতি
দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
গত বছরের ১ এপ্রিল জোবাইদা রহমানের লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে
আবেদন) শুনানি শেষে আদেশের জন্য ৮ এপ্রিল দিন রেখেছিল আপিল বিভাগ। কিন্তু মহামারীর
মধ্যে আদালতের কার্যক্রম সীমিত হয়ে গেলে সেই আদেশ আর হয়নি।
এক বছর পর বিষয়টি আবার আদালতে উঠলে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল
বেঞ্চ আদেশের জন্য ১৩ এপ্রিল দিন ধার্য করে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা
রহমান ও শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে চার কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার
সম্পদের তথ্য গোপন ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কাফরুল থানায়
এ মামলা দায়ের করে দুদক।
মামলায় তারেক রহমানকে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয় জোবাইদা ও তার
মায়ের বিরুদ্ধে। সেখানে বলা হয়, তারেক তার স্ত্রীর নামে ৩৫ লাখ টাকার দুটি এফডিআর করে
দেন। এভাবে জোবাইদা তার স্বামীকে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহায়তা করেছেন।
২০০৮ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। এরপর
জোবাইদা রহমানের মামলা বাতিলের আবেদনে হাই কোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল
দেয়।
ওই রুল শুনানির জন্য ২০১৬ সালে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চে তোলা হলে বিচারক
বিব্রত বোধ করেন। পরে প্রধান বিচারপতি মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি ওবায়দুল হাসান
ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেব নাথের হাই কোর্ট বেঞ্চে পাঠান।
সেখানে রুল শুনানির পর আদালত ২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি বিষয়টি রায়ের জন্য
অপেক্ষমাণ রাখে। পরে ওই বছরের ১২ এপ্রিল মামলাটির বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজ
করে রায় দেয় হাই কোর্ট। তাতে মামলা চলার বাধঅ কাটে। আট সপ্তাহের মধ্যে জোবাইদা রহমানকে বিচারিক আদালতে
আত্মসমর্পণের নির্দেশও দেওয়া হয় রায়ে।
সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন জোবাইদা রহমান, যার
শুনানি শেষে বিষয়টি এখন আদেশের জন্য অপেক্ষমান।
নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান
মাহবুব আলী খানের মেয়ে জোবাইদা ১৯৯৫ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়েছিলেন।
তার দুই বছর আগে তারেকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক
২০০৮ সালে কারামুক্তির পর স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান। ছুটি নিয়ে যাওয়ার পর
আর কর্মস্থলে না ফেরায় ২০১৪ সালে জোবাইদাকে বরখাস্ত করে সরকার। তারা এখন সেখানেই থাকেন।
বিদেশে থেকেই বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তারেক, তার
মা খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাগারে যাওয়ার পর থেকে তিনিই
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
এর মধ্যেই চারটি মামলায়
তার বিরুদ্ধে সাজার রায় এসেছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে দুই বছর, অর্থ
পাচারের দায়ে সাত বছর, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং একুশে অগাস্টের
গ্রেনেড মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে আছেন তারেক।
পুরানো খবর
জোবাইদা আপিল করতে পারবেন কিনা, জানা যাবে ৮ এপ্রিল