দনবাসে বড় একটি আক্রমণের আশঙ্কায়
ইউক্রেইনীয়রা যখন তাদের লোকজনকে সরিয়ে নিচ্ছে সেই সময় রাশিয়ার এ মূল্যায়ন এল।
ইউক্রেইনে ছয় সপ্তাহ ধরে চলা
রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে দেশটি থেকে ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ অন্য দেশে পালিয়ে গেছে,
কয়েক হাজার মানুষ হতাহত হয়েছে, শহরগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আর এর জেরে রাশিয়ার
নেতাদের ও কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ
পরিষদ ‘চলমান মানবাধিকার ও মানবিক সংকটে গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে রাশিয়াকে জাতিসংঘ
মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে বরখাস্ত করে। রাশিয়া তখন কাউন্সিল থেকে বের হয়ে যায়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে,
এর আগে রাশিয়া স্বীকার করেছিল, তারা যত দ্রুত চেয়েছিল তাদের আক্রমণ সেভাবে এগোয়নি
আর বৃহস্পতিবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ ভারাক্রান্ত মনে বাড়তে থাকা মৃত্যুর
কথা স্বীকার করেছেন।
স্কাই নিউজকে তিনি বলেন, “আমাদের
সেনাদের উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমাদের জন্য এটি বিশাল শোচনীয় একটি ঘটনা।”
দেশটির প্রধানমন্ত্রী মিখাইল
মিশুস্তিন বলেছেন, পশ্চিমাদের নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া তিন দশক ধরে সবচেয়ে
কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস রাশিয়াকে
তাদের ‘সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত জাতির’ বাণিজ্যিক মর্যাদা থেকে বাদ দিয়েছে এবং ওয়াশিংটন
রাশিয়ার যুদ্ধ সরঞ্জামে ঘাটতি তৈরির লক্ষ্য নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত একটি জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান
এবং একটি হীরার খনিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে আক্রমণ
শুরু করে রাশিয়া যাকে তারা নিরস্ত্রীকরণ ও ‘নব্য নাৎসীমুক্ত’ করতে চালানো বিশেষ ‘সামরিক
অভিযান’ বলে দাবি করে আসছে। রাশিয়ার এই দাবিকে মিথ্যা অজুহাত অভিহিত করে তা প্রত্যাখ্যান
করেছে কিইভ ও তাদের পশ্চিমা মিত্ররা।
ইউক্রেইনের বুচা শহরে বেসামরিকদের
হত্যাকাণ্ডকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করে এর ব্যাপক নিন্দা করেছে পশ্চিমা দেশগুলো।
এর প্রতিক্রিয়ায় মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে। রাশিয়ার তেল-গ্যাস কেনা
বন্ধ করতে ও কিইভের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেইন।
কিন্তু রাশিয়ার তেল-গ্যাস আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে ইউরোপ বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে দেওয়া এক ভিডিও
ভাষণে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, “যুদ্ধক্ষেত্রে জয়ের জন্য
ইউক্রেইনের অস্ত্র দরকার আর এটিই রাশিয়ার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সবচেয়ে শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞা
হবে।”
তিনি জানান, কিইভের উত্তরপশ্চিমাঞ্চীয়
শহর বরোদিয়াঙ্কায় বুচার চেয়েও ‘আরও ভয়ঙ্কর’ ঘটনা ঘটেছে। রাশিয়ার সেনারা সরে যাওয়ার
পর ইউক্রেইনীয় সেনারা বরোদিয়াঙ্কার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। জেলেনস্কি ওই অভিযোগ করলেও তার
স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ উল্লেখ করেননি।
অপরদিকে মস্কো বেসামরিকদের লক্ষ্য
বানানোর কথা অস্বীকার করে বলেছে, বুচার মৃতদেহের ছবিগুলো সাজানো যা মস্কোর বিরুদ্ধে
আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপকে বৈধ্যতা দিতে ও শান্তি আলোচনাকে লাইনচ্যুত করতে করা হয়েছে।