ক্যাটাগরি

নিলামের জার্সি মারাদোনার ‘হ্যান্ড অব গড’ গোলের নয়!

১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে আর্জেন্টিনা-ইংল্যান্ড লড়াইয়ে মারাদোনার দুই গোল স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। একটি পরিচিত ‘হ্যান্ড অব গড’ গোল নামে, অন্যটি ‘গোল অব দা সেঞ্চুরি।’

মারাদোনার সেই জার্সির মালিক ইংল্যান্ডের মিডফিল্ডার স্টিভ হজ, যিনি ম্যাচের পর আর্জেন্টিনা ফরোয়ার্ডের সঙ্গে জার্সি অদলবদল করেছিলেন।

নিলামকারী প্রতিষ্ঠান সাদারবিস গত বুধবার জানায়, আগামী ২০ এপ্রিল থেকে অনলাইনে শুরু হবে জার্সিটির নিলাম। ৪ মে পর্যন্ত বিডিংয়ের সময়কালে এটি প্রতিষ্ঠানটির লন্ডন শোরুমে প্রদর্শন করা হবে। জার্সিটি অন্তত ৫২ লাখ ডলারে বিক্রি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পরদিন মারাদোনার মেয়ে রেডিও মেট্রোতে দাবি করেন, হজের কাছে থাকা জার্সিটা পরে মারাদোনা খেলেন প্রথমার্ধে। দ্বিতীয়ার্ধে ওই দুই গোল করার সময় এই জার্সি তিনি পরেননি।

“সেই সাবেক ইংল্যান্ড খেলোয়াড় মনে করেন, তিনি আমার বাবার দ্বিতীয়ার্ধের জার্সি পেয়েছেন। কিন্তু এখানে একটা বিভ্রান্তি আছে। তার কাছে আছে প্রথমার্ধের জার্সি। আমি শুধু পরিষ্কার করতে চেয়েছি যে, যারা এটি কিনতে চায় তারা সত্যিটা জানুক।”

তাহলে দ্বিতীয়ার্ধের জার্সি কার কাছে আছে-এমন প্রশ্নে পরিষ্কার করে কিছু অবশ্য বলেননি দালমা।

“আমার মা জার্সিটি পায়নি। আমি জানি এটি কার কাছে আছে, কিন্তু আমি তার নাম বলতে চাচ্ছি না। কারণ ওই ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করতে চাই না।”

“আমি শুধু বলতে পারি, যে জার্সি নিলামে উঠছে সেটি পরে আমার বাবা গোলগুলো করেনি।”

নিলামকারী প্রতিষ্ঠান সাদারবিস অবশ্য বৃহস্পতিবার দালমার দাবিকে ‘মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

তাদের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “প্রথমার্ধে মারাদোনার পরা একটি ভিন্ন জার্সি ছিল, কিন্তু সেটি এবং গোলের সময় যে জার্সি পরেছিল, তার মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য আছে।”

তিনি দাবি করেন, তারা অনেক পরিশ্রম এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণা করে নিশ্চিত হয়েছেন যে, দ্বিতীয়ার্ধে মারাদোনার দুই গোল করার সময় পরা জার্সি এটি।

“মারাদোনা তার ‘টাচড বাই গড’ বইতে এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন এবং তিনি স্টিভ হজকে জার্সি দেওয়ার কথা স্মরণ করেছেন।”

“২০ বছর ধরে এটি ইংল্যান্ডের জাতীয় ফুটবল জাদুঘরে রয়েছে, সেখানে অসংখ্য মানুষ এটি দেখেছে। এটি সেই জার্সি নয় বলে কখনও দাবি করা হয়নি।”

নিলামে তোলা জার্সিটি  ‘ফটোম্যাচ’ করার জন্য সাদারবিস একটি বিশেষজ্ঞ ফার্মকে নিয়োগ করেছিল। যারা ‘একাধিক প্রমাণ’ পেয়েছে যে, দ্বিতীয়ার্ধে মারাদোনার দুই গোল করার সময়ে পরা জার্সি এটি।

আর্জেন্টিনা ম্যাচটি জেতে ২-১ গোলে। পরে তারা দ্বিতীয়বারের মতো পায় বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ। সেই শিরোপা জয়ের নায়ক ও অনেকের কাছে সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে বিবেচিত মারাদোনা ২০২০ সালের নভেম্বরে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে ৬০ বছর বয়সে মারা যান।