বিশ্বে গম, উদ্ভিজ্জ তেল, ভুট্টাসহ বেশ কয়েকটি শস্যের প্রধান রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেইন। যুদ্ধের কারণে এইসব শস্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দাম বেড়ে যাচ্ছে।
এফএও শুক্রবার জানায়, প্রধান শস্য ও উদ্ভিজ্জ তেলের বাজারে ধাক্কা লগায় মার্চে খাদ্যের দাম প্রায় ১৩ শতাংশ বেড়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে।
খাদ্যমূল্য নিয়ে নিয়মিত সূচক প্রকাশ করে এফএও। সংস্থাটি বলছে, তাদের খাদ্যমূল্য সূচক ফেব্রুয়ারিতেই রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল, গত মাসে দাম সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
ফ্রেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে খাদ্য মূল্যসূচক ১২ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। একে ‘মহাকায় মূল্যবৃদ্ধি’ বলে বর্ণনা করেছে এফএও।
বিশ্বে ৩০ শতাংশ গম আসে ইউক্রেইন এবং রাশিয়া থেকে। যুদ্ধের কারণে এই শস্যের রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। আবার রাশিয়া পটাশ এবং ফসফেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ সারের উপাদানও প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন করে।
এফএও গতমাসে বলেছিল, ইউক্রেইনে যুদ্ধের কারণে খাবার ও ভোজ্যপণ্যের দাম ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। সেই হিসাবে মার্চে এফএও’র খাদ্য মূল্যসূচকে সিরিয়ালের দাম রেকর্ড ১৭ শতাংশ এবং সবজির দাম ২৩ শতাংশ বাড়তে দেখা গেছে।
বিশ্বে শস্য উৎপাদন ঠিকমত না হওয়ার কারণে ইউক্রেইন যুদ্ধের আগে থেকেই খাদ্যর দাম ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে ছিল। আর এখন যুদ্ধের কারণে কৃষ্ন সাগর অঞ্চল থেকে খাদ্য সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় দাম আরও অতিরিক্ত বেড়েছে।
চিনি এবং দুগ্ধজাত পণ্যের দামও মার্চ মাসে একলাফে অনেক বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে এফএও।
জাতিসংঘের এই সংস্থা এবং ইউক্রেইন সরকারের হিসাবমতে, ইউক্রেইনের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ জমিতে শীতকালীন শস্য এবং সূর্যমুখী উৎপাদন হয়। কিন্তু সেখানে যুদ্ধ ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় এবারের শস্যবীজ বপনের মৌসুমে উৎপাদন ব্যাহত হবে।
ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও ভোজ্যপণ্যের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় আন্তর্জাতিক বাজারে খাবারের দাম আরও ৮ থেকে ২২ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এফএও।
মার্চের খাদ্যমূল্যসূচকে সবচেয়ে দ্রুত বাড়তে দেখা গেছে উদ্ভিজ্জ তেলের দাম। এক বছর আগের তুলনায় উদ্ভিজ্জ তেলের দাম রেকর্ড ৫৬ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ‘দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস’।
বিশেষ করে বেড়েছে সূর্যমুখী তেলের দাম।ইউক্রেইন বিশ্বে সূর্যমুখী তেলের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক দেশ।