শনিবার ১০ সদস্যের
একটি প্রতিনিধি দল উপজেলার বিজয়পুর সাদা মাটির পাহাড় ও সোমেশ্বরী নদী এলাকা পরিদর্শন
করে। পরে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বেলা সোয়া ১১টা থেকে সোয়া ১২টা পর্যন্ত দুর্গাপুর প্রেসক্লাবে
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
‘আমার প্রকৃতি আমার
অহংকার’ শিরোনামে এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন দুর্গাপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি
রফিকুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের
শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস।
এতে বক্তব্য দেন
নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন, আইনজীবী ও সাংবাদিক প্রকাশ
বিশ্বাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জোবাইদা নাসরিন, সাংবাদিক
নজরুল কবির, সাংবাদিক ও গল্পকার রাজীব নূর, অনুবাদক ও সাংবাদিক মুহাম্মদ হাবিব, বাংলাদেশ
আদিবাসী ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের
নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী অনামিকা আহমেদ।
সভায় নাগরিক উদ্যোগের
জাকির হোসেন বলেন, “দেশের অন্যতম খনিজ সম্পদ সাদামাটি নেত্রকোণার প্রধান সম্পদ। মানুষের
পরিবেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে এখান থেকে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এ অবস্থায় অপার
সৌন্দর্যের পথিকৃৎ সাদামাটি এলাকা ও সোমেশ্বরী নদীর পরিবেশ রক্ষার জন্য সরকারকে উদ্যোগী
হতে হবে।
তিনি ১০ দফা দাবি
তুলে ধরে বলেন, অপরিকল্পিত ধ্বংসাত্বক উপায়ে খনিজ সম্পদ আহরণের যে আয়োজন চলছে তা বন্ধ
করতে হবে। দুর্গাপুরে সাদা মাটি উত্তোলন বন্ধ হয়েছে; আবার ধোবাউড়ায় তা মহাআয়োজনে চলছে। আদালতের রায়কে ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। একটা জায়গাকে
বাদ দিয়ে একটু দূরত্বে আরেকটা জায়গায় শুরু করা হচ্ছে। ধোবাউড়া ক্ষতিগ্রস্ত হলে দুর্গাপুরও
ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এখানে ক্ষতিগ্রস্ত
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বাঙালি পরিবারের পূর্ণাঙ্গ তালিকা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ
করতে হবে। পরিবেশ-প্রতিবেশের ক্ষতির প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করতে হবে। এর জন্যে যারা দায়ী
ছিল তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
যেসব কোম্পানি প্রটোকল
না মেনে, অপরিকল্পিতভাবে এসব জায়গায় খানাখন্দ করেছে তাদের দায়িত্বে এসব খানাখন্দ ভরাট
করে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের ক্ষেত্রে
স্থানীয় জনজীবন ও পরিবেশের উপর যেন প্রভাব না পড়ে এজন্য রাষ্ট্র এবং সরকারকে দায়িত্ব
নিতে হবে।
দুর্গাপুরে বালি
পরিবহনে যে অরাজকতা চলছে তাতে পরিবেশ হুমকিতে পড়েছে। অবিলম্বে বিকল্প রাস্তা নির্মাণ
করে বালি পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।