রঙ-তুলির আঁচড়ে বাঘ, সিংহসহ বিভিন্ন প্রাণির মুখোশ তৈরিতে তখনও ব্যস্ত সময় পার করছেন একদল শিক্ষার্থী। হাতপাখা কিংবা চরকি তৈরি করছেন কেউ কেউ।
মহামারীর ধাক্কা সামলে দুই বছর পর বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নিতে মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার নগরীর বাদশ মিয়া রোডে চারুকলা ইনস্টিটিউট ঘুরে জানা গেল, মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন ঘিরে সপ্তাহখানেক ধরেই সেখানে চলছে নানা কর্মযজ্ঞ।
শিক্ষার্থীরা জানান, এবারের শোভাযাত্রায় ঘোড়া এবং পাখির দুইটি বড় মোটিফ থাকবে। ইনস্টিটিউটের ভেতরে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই বাঁশ-কাঠ দিয়ে মোটিফগুলোর কাঠামো তৈরি করছেন।
এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ইতোমধ্যে বিভিন্ন রঙের মুখোশ, সরা এবং নানারকম ফেস্টুনও তৈরি করেছে। এছাড়া চারুকলার প্রাচীরগুলো রাঙানো হয়েছে আলপনায়।
শিক্ষার্থীদের আঁকা জল রংয়ের ছবিগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছে। পাশেই সরাচিত্র, মুখোশসহ নানান ধরনের ঘর সাজানোর সরঞ্জাম। ১০ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে এই প্রস্তুতি পর্ব।
চারুকলা ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী অনুপ রায় জানান, শোভাযাত্রার প্রস্তুতির জন্য প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
পহেলা বৈশাখে সকাল ১০টায় চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে বের হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাজীর দেউড়ি গিয়ে শেষ হবে।
এরপর ক্যাম্পাসে গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। বিকেলে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রণব মিত্র চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আবহমান বাঙালি সংস্কৃতিকে তুলে ধরতেই এ শোভাযাত্রার আয়োজন।
“মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বর্ণিল করতে আমাদের শিক্ষার্থীরা বেশ কিছুদিন যাবৎ পরিশ্রম করে যাচ্ছে। বাংলা নতুন বর্ষকে বরণ করতে তারা ক্যাম্পাসকে রঙিন করে তুলছে।”
তিনি জানান, বাঙালি জাতির ঐতিহ্যকে ধারণ করে ‘শিল্পের প্রয়োজন বিবেকের জন্য, জীবনের জন্য’- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রা।
“বিশ্বব্যাপী মহামারীর প্রকোপ থাকায় গত দুই বছর মঙ্গল শোভাযাত্রা করা যায়নি। এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বর্ণিল আয়োজনে নববর্ষ উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
প্রণব মিত্র চৌধুরী জানান, এবারও ঘোড়া, বিশাল বাঘের মুখ, সমৃদ্ধির প্রতীক হাতি, মুক্তির প্রতীক পাখি আর টেপা পুতুল থাকবে শোভাযাত্রায়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বর্ষবরণ অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।