ক্যাটাগরি

ময়মনসিংহে চাঁদার টাকা ভাগের বিরোধে যুবক খুন: পুলিশ

শনিবার দুপুরে জেলা পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছেন তারা।

এরা হলেন- মহানগরীর মো. জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো. শান্ত ইসলাম (২০), সদর উপজেলার পরানগগঞ্জ ভাটিপাড়া এলাকার মো. কেরামত আলীর ছেলে মো. আরিফুজ্জামান আরিফ (২২) ও তারাকান্দা উপজেলার নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. রাকিবুল হাসান তপু (২৫)।

বৃহস্পতিবার ভোরে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় পিবিআই। 

এর আগে বুধবার রাতে মণ্ডল প্লাজা চরপাড়া চৌধুরী ক্লিনিকের গলিতে শান্তকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন তার বাবা শহিদ চৌধুরী বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা মামলা করেন।

শান্তদের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ায়। তবে বাবার ক্লিনিক ব্যবসার কারণে চরপাড়া এলাকাতেই পরিবারের সঙ্গে থাকতেন তিনি।

শান্ত ময়মনসিংহ মহানগরের যুবলীগের কর্মী ছিল বলে পিবিআই দাবি করলেও মহানগর যুবলীগের নেতারা বলছেন, এ নামের দলের কোনো কর্মীকে চেনেন না তারা।

সংবাদ সম্মেলনে গৌতম বলেন, শরীফ চৌধুরী শান্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা সবাই তার বন্ধু। তারা নগরীর চরপাড়া এলাকায় ফুটপাতে অস্থায়ী দোকান থেকে একসঙ্গে সাপ্তাহিক চাঁদা তুলতেন। সম্প্রতি শান্ত আলাদা দল করে চাঁদার টাকা তোলা শুরু করেন। পরে বন্ধুরা শান্তকে অনেক বুঝিয়ে তাদের দলে আসতে বলে এবং চাঁদার টাকা ভাগাভাগি করে নিতে বলেন। কিন্তু এতে অস্বীকৃতি জানায় শান্ত।

এই ক্ষোভ থেকে গ্রেপ্তার তিনজনসহ মোট পাঁচজন শান্তকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সেই অনুযায়ী বুধবার রাতে ১২টার দিকে তারা শান্তকে ১৮ বার বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করে ফেলে রেখে যায়। শান্তর মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য আবার তারা ঘটনাস্থলে যায়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

পরে স্থানীয়রা শান্তকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। আর আরিফের দেওয়া তথ্যে পরাণগঞ্জ ভাটিপাড়া তার বাড়ির পেছন থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি ছুরি উদ্ধার করা হয়।

এদিকে নিহতের বাবা শহিদ চৌধুরীর ভাষ্য, তার ছেলে ও গ্রেপ্তাররা যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। তবে তাদের দলীয় কোন পদ ছিল না।

তিনি বলেন, “অল্প কিছুদিনের মাঝেই আমার ছেলে যুবলীগের পদ পাওয়ার কথা ছিল। ওই পদ নিয়ে দ্বন্দ্বেই আমার ছেলে খুন হয়েছে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল পাঠান বলেন, “শরীফ চৌধুরী নামে কেউ যুবলীগের সঙ্গে জড়িত ছিল না। তাছাড়া আমি ওই ছেলেকে চিনি না।”