দেশটির সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী শনিবার জাতীয় পরিষদে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।
সম্মান বাঁচানোর চেষ্টায় আস্থা ভোট এড়িয়ে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার কৌশল নিয়েছিলেন ইমরান, কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তার সেই চেষ্টা ভেস্তে গেছে।
পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডন জানিয়েছে, পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষের অনাস্থা ভোটে ইমরানের ক্ষমতাসীন তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে যাচ্ছে, এমন স্পষ্ট সম্ভাবনা সামনে রেখেও দলটি বিরোধীদের মাঠ ছেড়ে না দেওয়ার এবং তাদের পক্ষে যতটা সম্ভব পরিস্থিতি কঠিন করে তোলার কৌশল নিয়েছে।
এ কৌশলের অংশ হিসেবে তারা ভোট প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি বা হাউসের নতুন নেতা হিসেবে বিরোধী দলের মনোনীত প্রার্থী শাহবাজ শরিফের নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা করতে পারে।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়ার চৌধুরির ভাষ্য অনুযায়ী, ‘অনাস্থা প্রস্তাব সফল না হলে পাকিস্তানকে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে’ এ ধরনের হুমকি দেওয়া একটি বার্তা বা এর বিষয়বস্তু পার্লামেন্টের অধিবেশনে উপস্থাপন করতে পারে সরকার এবং এ ইস্যুতে বিতর্ক চেয়ে স্পিকারের কাছে আবেদন জানাতে পারে।
পাকিস্তানে ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরির বিরুদ্ধেও অনাস্থা প্রস্তাব
রায় মানছেন ইমরান খান, মানবেন না ‘আমদানি করা’ সরকার
পাকিস্তানের পার্লামেন্ট পুনরুজ্জীবিত করার রায়, আস্থা ভোটে খেলতেই হবে ইমরানকে
শুক্রবার রাতে এআরওয়াই নিউজকে নিজের মতামত ব্যক্ত করে তিনি বলেছেন, অধিবেশনের বিষয়সূচীতে অনাস্থা ভোটের বিষয়টি থাকলেও শনিবার তা না-ও হতে পারে।
তিনি বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট ৯ এপ্রিলে ডাকা পার্লামেন্টের অধিবেশনে ভোট গ্রহণের নির্দেশনা দিলেও এর মানে এই নয় যে ওই তারিখেই তা করতে হবে।
আস্থা ভোটের মুখোমুখি হওয়ার আগের রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে এসে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় তিনি মেনে নিয়েছেন, তবে তাকে উৎখাত করে ‘আমদানি করা’কোনো সরকার বসানোর চেষ্টা তিনি মেনে নেবেন না।
পার্লামেন্টে সমর্থনের যে হিসাব-নিকাশ দাঁড়িয়েছে, তাতে অনাস্থার লজ্জা নিয়ে ইমরানের প্রস্থান অনেকটাই নিশ্চিত। সেক্ষেত্রে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার প্রায় দেড় বছর আগেই ইমরানের দল পিটিআইকে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে।
সেক্ষেত্রে বিরোধী দলগুলো জোট গড়ে তাদের একজন প্রার্থীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করতে পারবে। ২০২৩ সালের অগাস্টে বর্তমান পার্লামেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে।
গত ২৮ মার্চ পার্লামেন্টে এই অনাস্থা প্রস্তাব তুলেছিলেন প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লীগের (এন) নেতা শাহবাজ শরিফ। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার নামই ঘুরেফিরে আসছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজ বর্তমানে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। তাকেই প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিরোধী জোট।