ক্যাটাগরি

পাকিস্তানের নির্বাচন ব্যবস্থা ‘অনুসরণ করা যেতে পারে’: আকবর আলি

শনিবার এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির
আয়োজনে এক ছায়া
সংসদে
নিজের এমন মত তুলে ধরেন তিনি।

“ভালো নির্বাচনের
জন্য পাকিস্তানের বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থা অনুসরণ করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যেতে
পারে, যেখানে সাবেক প্রধান বিচারপতি সরকার প্রধান হিসেবে কাজ করেন
এবং বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা নির্বাচন পরিচালনায় সম্পৃক্ত থাকেন।”

সাবেক এই সচিব
বলেন, “অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে জেলা প্রশাসকের
পরিবর্তে জেলা জজদের
রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা যেতে
পারে।”

নির্বাচনকালীন সরকারসহ জাতীয় পর্যায়ে অমীমাংসিত বিষয়ে গণভোটের বিধান চালু করলে
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজতর হবে বলেও
মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থায় সরকারি দল না চাইলে নির্বাচন ব্যবস্থার পরিবর্তন ‘সহজ নয়’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তবে দীর্ঘস্থায়ী গণআন্দোলনের মাধ্যমে পরিবর্তন আনা সম্ভব, সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরি।

“…নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করলে সরকার
ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অংশগ্রহণমূলক
নির্বাচনের জন্য বিদেশিদের পরোক্ষ
চাপ থাকবে। তবে বিদেশিদের চাপ
সরকার কিভাবে নিবে তা বলা কঠিন।”

বাংলাদেশে শতভাগ ভোট পেয়েও
নির্বাচিত হওয়ার নজির রয়েছে
উল্লেখ করে তিনি
বলেন, “এ ধরনের ঘটনায়
নির্বাচন বাতিল করার ক্ষমতা
নির্বাচন কমিশনের থাকলেও তা প্রয়োগ
করা হয়নি বরং
জালিয়াতির সাথে সম্পৃক্তদের
বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। সেই জন্য বর্তমান
কমিশনকে সাহসী হতে হবে।”

রাজনৈতিক সরকারের অধীনে আইন অনুযায়ী
নির্বাহী কর্মকর্তারা নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন। তাতে করে তারা
ক্ষমতাসীনদের নির্দেশনার বাইরে যেতে পারেন
না বলে
মনে করেন আকবর আলি খান।

“আইন অনুযায়ী
নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তারা নির্বাচন পরিচালনায় সম্পৃক্ত থাকেন। রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে নির্বাহী
বিভাগ ক্ষমতাসীনদের নির্দেশনার বাইরে যেতে পারেন
না।

“এমনকি তারা ভবিষ্যত
বেনিফিট নেওয়ার চিন্তা করে। তাই
বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থায় শুধু নির্বাচন
কমিশনের একার পক্ষে
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব
নয়।”

অনুষ্ঠানে নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ১০টি
সুপারিশ তুলে ধরেন
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির
চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

সুপারিশগুলো হল-

>> সর্বশেষ দুই নির্বাচন
কমিশনের ব্যর্থতার বিভিন্ন দিক চিহ্নত
করে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার জন্য
রোডম্যাপ তৈরি করা।

>> মনোনয়নপত্র দাখিল থেকে শুরু
করে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সর্বস্তরে সব প্রার্থীর
জন্য সমতল ক্ষেত্র
তৈরি করা।

>> নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন
নির্মোহ পেশাজীবীদের সঙ্গে আলোচনাকালে যেসব প্রস্তাব এসেছে সেগুলো প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করা।

>> জেলা প্রশাসকদের
বদলে ইসির নিজস্ব
কর্মকর্তাদের নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া।

>> পূর্বের নির্বাচন ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা অথবা অন্য
কোনো ব্যক্তি আইন ভঙ্গ
করে নির্বাচনী অপরাধ করে থাকলে
তা চিহ্নত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।

>> নির্বাচনের আগে
প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধ দূর করতে
ইসিকে সরকারের সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।

>> অকারণে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার মতো পরিবেশ
তৈরি না হয়, সেদিকে ইসিকে দৃষ্টি দেওয়া।

>> যেসব আইনের
দ্বারা নির্বাচনকালীন সময়ে গণমাধ্যম
বাধার সম্মুখীন হতে পারে, সাংবাদিকদের জন্য সে আইন শিথিল করা।

>> নারী ও সংখ্যালঘু ভোটারদের ভোট পূর্ববর্তী
ও পরবর্তী প্রতিহিংসা রোধের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

>> গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে বাধা তৈরি
হলে প্রয়োজনে ইসিকে পদত্যাগের সৎ সাহস
রাখা।

‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হবে’ শিরোনামে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস
ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস
অ্যান্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা অংশ নেন।

এতে বিচারক
ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ
রইস, এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক শাকিলা
জেসমিন ও সাংবাদিক
কাজী জাবেল। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী
দলকে ট্রফি ও সার্টিফিকেট
দেওয়া হয়।