ক্যাটাগরি

প্রথম সেশনে দাপুটে দক্ষিণ আফ্রিকা

দ্বিতীয় দিন

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ১১৫ ওভারে ৩৮৪/৭

 

দক্ষিণ আফ্রিকার সেশন

দিনের শুরুতে উইকেটের দেখা
পেতে খুব বেশি
অপেক্ষা করতে হয়নি
বাংলাদেশকে। খালেদ আহমেদ
দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ফেরান কাইল ভেরেইনাকে। কিন্তু পরের
জুটিতেই দারুণ ব্যাটিংয়ে লাগাম নিয়ে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

৭ম উইকেটে ১০০ বলে ৮০ রানের জুটি
গড়েন ভিয়ান মুল্ডার ও কেশভ মহারাজ। সেশনের শেষ দিকে মুল্ডার আউট হলেও ওই জুটির সৌজন্যে সেশনটি দক্ষিণ আফ্রিকারই।

লাঞ্চের সময় রান ৭ উইকেটে ৩৮৪।

সেশনে ২৫ ওভারে রান উঠেছে ১০৬, ওভারপ্রতি রান চারের বেশি। উইকেট
পড়েছে দুটি।

৫৫ রানে ব্যাট করছেন
আটে নামা মহারাজ, সাইমন হার্মার খেলছেন ৩ রানে।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে খালেদ
শুরুটা ভালো করলেও
পরে তা ধরে রাখতে পারেননি। তাইজুল শুরুতে একটু এলোমেলো হলেও
পরে তিনিই যা একটু ভালো করেছেন। ইবাদত ও মিরাজ আগের
দিনের মতোই বিবর্ণ।

অবশেষে উইকেট

বাংলাদেশের জন্য মাথাব্যথার
কারণ হয়ে
ওঠা জুটিতে
অবশেষে ফাটল
ধরাতে পারলেন
তাইজুল ইসলাম। দারুণ ডেলিভারিতে বোল্ড করে
দিলেন  
তিনি ভিয়ান মুল্ডারকে।

স্টাম্পের বেশ দূর
থেকে করা
ফ্লাইটেড ডেলিভারি
পিচ করে
লেগ স্টাম্পে। ডিফেন্স করতে পা বাড়িয়ে
ব্যাট পেতে
দেন মুল্ডার। বল টার্ন করে ব্যাটকে
ফাঁকি দিয়ে
ছোবল দেয়
অফ স্টাম্পে। বাঁহাতি স্পিনারদের জন্য স্বপ্নের
ডেলিভারি বলা
যায়।

মুল্ডার ফিফটি পর্যন্ত
যেতে পারলেন
না দশম
টেস্টেও, ছাড়াতে
পারলেন না
এমনকি নিজের
আগের সর্বোচ্চ
৩৬ রানও। আউট হলেন  ৭৭ বলে ৩৩
রান করে।

কেশভ মহারাজের সঙ্গে
তার জুটি
থামল ৮০
রানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার
রান ৭
উইকেটে ৩৮০।

নতুন ব্যাটসম্যান সাইমন
হার্মার।

মহারাজের পঞ্চাশ

মেহেদী হাসান মিরাজের বলে দারুণ এক শটে ছক্কা মেরে কেশভ মহারাজ পূর্ণ করলেন ফিফটি। টেস্ট ক্রিকেটে তার চতুর্থ ফিফটি এটি।

৪টি চার ও ৩ ছক্কায় ৫০ বলে ৫২ রানে খেলছেন আটে নামা মহারাজ।

জুটির ফিফটি, দক্ষিণ আফ্রিকার ৩৫০

কাইল ভেরেইনাকে ফেরানোর পর চাপটা ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। বরং কেশভ মহারাজের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে নিজেরাই পড়ে গেছে চাপে!

বলের সঙ্গে পাল্লা দিয় রান তুলছেন মহারাজ। তবে এলোমেলো শট খেলে নয়, বরং দারুণ সব ক্রিকেট শটে।

জুটির রান ফিফটি স্পর্শ করেছে স্রেফ ৫৫ বলে। দক্ষিণ আফ্রিকার রানও হয়ে গেছে ৩৫০।

মহারাজ খেলছেন ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৩ বলে ৩৫ রান নিয়ে।

মহারাজের ক্যামিও

কাইল ভেরেইনাকে হারানোর ধাক্কা যেন বুঝতেই দিলেন না কেশভ মহারাজ। উইকেটে গিয়েই খেলতে থাকলেন দারুণ সব শট। খালেদের এক ওভারে দুটি বাউন্ডারির পর তাইজুল ইসলামের প্রথম ওভারে চোখঁধাধানো দুটি শটে মারলেন ছক্কা ও চার।

পানি পানের বিরতির আগে আর কোনো উইকেট হারাল না দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের রান ৬ উইকেটে ৩৩৩।

প্রথম ঘণ্টায় ৫৫ রান এসেছে ১২ ওভারেই। মহারাজ খেলছেন ১৯ বলে ২৫ করে, মুল্ডার ৪৪ বলে ১৬।

খালেদের জয়

কাইল ভেরেইনার সঙ্গে ব্যক্তিগত দ্বৈরথে শেষ পর্যন্ত জয় সৈয়দ খালেদ আহমেদের। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে তিনি বোল্ড করে দিলেন ভেরেইনাকে।

খালেদের রিস্ট পজিশন ও সিম পজিশন ছিল দারুণ। সিমে পিচ করে বলটি চোখের পলকে ঢোকে ভেতরে। ড্রাইভ করার চেষ্টায় থাকা ভেরেইনার ব্যাট-বলের ফাঁক গলে ছোবল দেয় স্টাম্পে।

উল্লাসে গর্জন করেন খালেদ। বাংলাদেশ পেল প্রত্যাশিত উইকেট।

৪৮ বলে ২২ রানে ফিরলেন ভেরেইনা। দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে ৩০০।

নতুন ব্যাটসম্যান কেশভ মহারাজ।

দক্ষিণ আফ্রিকার তিনশ

খালেদ আহমেদের আলগা বলে কাইল ভেরেইনার বাউন্ডারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার রান স্পর্শ করল তিনশ। ৫ উইকেটে ২৭৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা দল আর কোনো উইকেট না হারিয়েই ছুঁয়ে ফেলে তিনশ

একটু উত্তেজনা

খালেদ আহমেদের লেংথ বল ডিফেন্স করে ক্রিজেই ছিলেন কাইল ভেরেইনা। রান নেওয়ার চেষ্টা করেননি, বলের দিকে তাকিয়েও ছিলেন না। বোলার খালেদ তবু বল তুলে ছুঁড়ে মারেন, বল গিয়ে লাগে ভেরেইনার গ্লাভসে। তিনি চমকে যান, তেতেও ওঠেন।

খালেদ অবশ্য হাত উঁচিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন দ্রুতই। তবে ভেরেইনা তখন বেশ ক্ষিপ্ত। স্লিপ থেকে ইয়াসির আলি দৌড়ে গিয়ে ভেরেইনাকে থামান। আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস কথা বলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হকের সঙ্গে।

ইনিংসের সেটি ৯৫ তম ওভার।

মুল্ডারের রান

প্রথম দিন শেষে ১৯ বল খেলে রানের দেখা না পাওয়া ভিয়ান মুল্ডার দ্বিতীয় দিনে পেলেন রানের দেখা। নিজের খেলা তৃতীয় বলে তিন রান নিয়ে শুরু হলো তার যাত্রা।

প্রথম ওভারেই রিভিউ হারাল বাংলাদেশ

সৈয়দ খালেদ আহমেদকে দিয়ে দিনের শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই ছড়ায় খানিকটা উত্তেজনা।

বেশ ভালো লাইন-লেংথে শুরু করেন খালেদ। খানিকটা মুভমেন্টও আদায় করে নেন। ওভারের পঞ্চশ বলটি বাইরে নেওয়ার পর শেষ বলটি তিনি ভেতরে ঢোকান। বল লাগে ব্যাটসম্যান কাইল ভেরেইনার পায়ে।

জোরাল আবেদনে আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। রিভিউয়ে দেখা যায়, বল একটু বেশিই ভেতরে ঢুকে বেরিয়ে যাচ্ছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে।

দিনের প্রথম ওভারে রিভিউ হারাল বাংলাদেশ। টিকে রইল কেবল এখন আর একটি রিভিউ।

দক্ষিণ আফ্রিকার চাওয়া

রান আরও বাড়ানোর জন্য কাইল ভেরেইনা ও ভিয়ান মুল্ডারের দিকেই মূলত তাকিয়ে থাকবে দল। ভেরেইনা কিপার হলেও বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানও। মুল্ডারকে অলরাউন্ডার হিসেবেই নেওয়া হয় দলে। যদিও এখনও ব্যাটিং সামর্থ্য টেস্টে সেভাবে দেখাতে পারেননি তিনি। তার দশম টেস্ট চলছে এটি, সর্বোচ্চ স্কোর মাত্র ৩৬। সুযোগ আর হয়তো বেশি পাবেন না। তার নিজেরও তাগিদ থাকবে ব্যাট হাতে নিজেকে মেলে ধরার।

এখনও ব্যাটিংয়ের অপেক্ষায় থাকা দুই স্পিনার কেশভ মহারাজ ও সাইমন হার্মারের ব্যাটের হাত যথেষ্টই ভালো। দক্ষিণ আফ্রিকা তাই চাইবে, প্রথম ইনিংসে রান যত বেশি সম্ভব বাড়ানো।

একটু আক্ষেপ একটু আশা

প্রথম দিনে প্রথম সেশনে দাপট ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। পরের দুই সেশনে বাংলাদেশ লড়াই করে অনেকটা সমান তালেই। তবে দিন শেষের সমীকরণে এগিয়ে যায় প্রোটিয়ারা। তিন উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের প্রথম দিনের নায়ক তাইজুল ইসলাম দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, চাপটা ধরে রাখতে না পারায় রান একটু বেশি হয়ে গেছে প্রতিপক্ষের। আর দু-একটু উইকেট বেশি চাওয়া ছিল তাদের।

সেই চাওয়া থাকবে নতুন দিনের শুরুতেও। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান কাইল ভেরেইনা ও ভিয়ান মুল্ডার এখনও থিতু নন। দ্বিতীয় নতুন বল এখনও বেশ চকচকে। শুরুতে একটি-দুটি উইকেট তাই বাংলাদেশের জন্য খুলে দিতে পারে আরও উইকেটের দুয়ার।

১ম দিন শেষে সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২৭৮/৫ (এলগার ৭০, এরউইয়া ২৪, পিটারসেন ৬৪, বাভুমা ৬৭, রিকেলটন ৪২, ভেরেইনা ১০*, মুল্ডার ০*; খালেদ ২০-৪-৫৯-২, মিরাজ ১৯-২-৫৮-০, ইবাদত ১৬-২-৭৫-০, তাইজুল ৩২-৭-৭৭-৩, শান্ত ৩-০-৯-০)।