ক্যাটাগরি

ইউএনওর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, তদন্তে কমিটি

বর্তমানে তিনি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের
ইউএনওর দায়িত্ব পালন করছেন। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার মহেড়া ইউনিয়নের এক তরুণী
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার পর তদন্ত শুরু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কমিটি।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে ইউএনও
মনজুর বাসাইলে দায়িত্বে থাকার সময় ফেইসবুকের মাধ্যমে তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে
মনজুর তার সরকারি বাসভবনে নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন। একাধিক
বিয়ের প্রস্তাব এলেও মনজুর হোসেনের পরামর্শে তা প্রত্যাখ্যান করেন তরুণী। পরে তারা
টাঙ্গাইল শহরে ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করেন। তিনি বিয়ের চাপ দিলে
মনজুর তাকে ভারতে বেড়াতে যাওয়ার প্রস্তাব দেন এবং ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে বিয়ে করবেন
বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

ইউএনও গাড়িচালক বুলবুল হোসেন
সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘ইউএনও স্যারের হুকুম পালন হিসেবে’ তিনি ইউএনও এবং ওই
তরুণীসহ তিনজনকে বেনাপোল সীমান্তে পৌঁছে দেন।

ইউএনওর সরকারি বাসভবনে এই তরুণী
একাধিকবার গিয়েছেন বলেও জানান বুলবুল হোসেন।

তরুণীর দাবি, তিনি জানতেন না ইউএনও
বিবাহিত এবং তার দুটি সন্তান রয়েছে।

তিনি বলেন, “ভারতের হায়দারাবাদে বাসা
ভাড়া নিয়ে থাকার সময় হঠাৎ একদিন ইউএনওর ব্যাগ থেকে পাসপোর্ট বের করে জানতে পারি
ইউএনও মো. মনজুর হোসেন বিবাহিত এবং তার দুটি সন্তান রয়েছে। ইউএনও নিজেও সে সময় তা
স্বীকার করেন।

“এরপর দেশে ফিরে ইউএনও আবার
স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাসের প্রস্তাব দেন। আমি প্রত্যাখ্যান করি।”

চলতি বছর ৩ ফেব্রুয়ারি তরুণী
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন বলে জানান।

তিনি বলেন, “আমি সামাজিকভাবে হেনস্তা
হচ্ছি। কিন্তু আমি তো এখানে দোষী না। আমার সঙ্গে তার যে সম্পর্ক ছিল, তিনি বলতে
পারবেন না তার কাছে কখনও টাকা চেয়েছি।”

মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন জানিয়ে তিনি
বলেন, “আমি তো একটা মানুষ, তাই না? নিজের সম্মান হারানোর ঘটনা আপনাদের কাছে বলতে
তো আমার নিজেরও কষ্ট হয়। নিজের লজ্জার কথা আমি কিভাবে বলব, বলেন?”

তিনি জানান, ব্যারিস্টার সুমন তাকে
আইনি সহায়তা দিচ্ছেন। সুমন লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন ইউএনওকে।

“তদন্ত কমিটি আমাকে এবং ইউএনও মনজুর
হোসেনকে বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত ডিসির (রাজস্ব) কার্যালয়ে ডেকেছিল। আমরা
সেখানে উপস্থিত হয়েছিলাম। আমি সব প্রমাণ উপস্থাপন করেছি।”

ইউএনও মনজুর হোসেনের মোবাইল ফোনে
একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত ডিসি (রাজস্ব) ও
তদন্ত কমিটির সদস্য সোহানা নাসরিন সাংবাদিকদের বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে
তদন্ত চলছে। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে তদন্ত কমিটির শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো যাবে।