মুম্বাইয়ের ব্রেবোর্ন স্টেডিয়ামে রোববার কলকাতা নাইট রাইডার্সের
বিপক্ষে দারুণ বোলিং উপহার দেন মুস্তাফিজ। তার ৪ ওভার থেকে আইপিএলের দুইবারের শিরোপাজয়ীরা
নিতে পারে কেবল ২১ রান। দিল্লির হয়ে ওভার প্রতি ছয়ের নিচে রান দেন কেবল তিনিই।
মুস্তাফিজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বল হাতে আলো ছড়ান কুলদিপ
যাদব, শার্দুল ঠাকুর, খলিল আহমেদরা। ২১৬ রানের লক্ষ্য দিয়ে কলকাতার বিপক্ষে ৪৪ রানের
জয় তুলে নেয় দিল্লি।
আক্রমণে এসে প্রথম বলেই ভীতি ছড়ান মুস্তাফিজ। তার হালকা
ভেতরে ঢোকা লেংথ বলে কট বিহাইন্ডের আবেদন করেন দিল্লির ক্রিকেটাররা, আঙ্গুল তুলে দেন
আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন অজিঙ্কা রাহানে। রিপ্লেতে দেখা যায় ব্যাটে নয়, প্যাডে
লেগেছে বল। বেঁচে যান কলকাতা ওপেনার।
পরের বলে এবার এলবিডব্লিউর আবেদন, সাড়া দেন আম্পায়ার। আবারও
রাহানে রিভিউ নিলে দেখা যায়, ব্যাটের কানায় লেগে বল আঘাত করে প্যাডে।
তৃতীয় বলে নিশ্চিত আউট ছিলেন রাহানে। অফ স্টাম্পের অনেক
বাইরের বল তাড়া করে ব্যর্থ হন তিনি। বল জমা পড়ে রিশাভ পান্তের গ্লাভসে। কিন্তু বোলার-কিপার
কেউ বুঝতেই পারেননি বল যে ব্যাট ছুঁয়েছে। পরে রিপ্লেতে দেখা যায় তা। হতাশা ফুটে ওঠে
ডাগআউটে দিল্লি কোচ রিকি পন্টিংয়ের ভঙ্গিতে।
শেষ তিন বলে কেবল দুটি সিঙ্গেল দিয়ে ইনিংসের প্রথম ওভার
শেষ করেন মুস্তাফিজ।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভার আবার মুস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন
দিল্লি অধিনায়ক পান্ত। দুর্দান্ত বোলিংয়ে কলকাতার রানের গতিতে রাশ টানেন তিনি। দেন
কেবল তিন রান।
সপ্তদশ ওভারে বোলিংয়ে এসে আন্দ্রে রাসেলের মুখোমুখি হয়ে
প্রথম বলেই চার হজম করেন মুস্তাফিজ। পরের পাঁচ বলে ৫ রান দিয়ে ৯ রান খরচায় শেষ করেন
ওভার।
নিজের কোটার শেষ ওভারটি করতে আসেন তিনি ১৯তম ওভারে। এবারও
প্রথম বলে রাসেল তাকে মারেন চার। ওভারের পরের পাঁচ বলে কেবল তিন রান দেন মুস্তাফিজ।
মাঝে যদিও সিঙ্গেল নেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু স্ট্রাইক ধরে রেখে বড় শট খেলার আশায় নেননি
রাসেল। নিজের পরিকল্পনায় যদিও সফল হননি ক্যারিবিয়ান এই বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান।
টানা দুই ম্যাচ উইকেটশূন্য কাটালেন মুস্তাফিজ। আগের ম্যাচে
লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে ২৬ রান দিয়ে ধরতে পারেননি শিকার। আসরে নিজের প্রথম
ম্যাচে অবশ্য দারুণ সফল ছিলেন ২৬ বছর বয়সী এই পেসার। গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে ২৩
রান দিয়ে নিয়েছিলেন তিন উইকেট।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা দিল্লিকে বিশাল সংগ্রহের ভিত গড়ে
দেন পৃথ্বী শ ও ডেভিড ওয়ার্নার। তাদের উদ্বোধনী জুটিতে ৯৩ রান আসে। ২ ছক্কা ও ৭ চারে
৫১ রান করেন শ। ওয়ার্নারের ব্যাট থেকে আসে ২ ছক্কা ও ৬ চারে ৬১।
শেষ দিকে ঝড় তোলেন আকসার প্যাটেল ও শার্দুল। তাদের অবিচ্ছিন্ন
জুটি ২০ বলে ৪৯ রানের। ৩ ছক্কা ও এক চারে ১১ বলে ২৯ রান করেন শার্দুল। ১৪ বলে এক ছক্কা
ও ২ চারে ২২ রান আসে আকসারের ব্যাট থেকে।
পাহাড়সম রান তাড়ায় কলকাতাকে পথ দেখান শ্রেয়াস আইয়ার। ২
ছক্কা ও ৫ চারে অধিনায়ক ৩৩ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেললেও বাকিরা রাখতে পারেননি অবদান।
দুই বল আগে ১৭১ রানে গুটিয়ে যায় দলটি।
দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৩৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা বাঁহাতি
রিস্ট স্পিনার কুলদিপ। ২৫ রানে ৩ উইকেট শিকার খলিলের, শার্দুলের প্রাপ্তি দুটি।