বাংলাদেশের প্রথম
প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে রোববার বিকালে সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া
এভিনিউ থেকে এই পদযাত্রা শুরু করেন। তার সঙ্গে ছিলেন বোন মাহজাবিন আহমদ মিমি,
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ।
ব্যানার-ফেস্টুনসহ
শতাধিক মানুষের সেই মিছিল শুরুর ১৫ মিনিট পর বিকাল পৌনে ৫টার দিকে গণভবনের সামনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ
সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া ফটকে উপস্থিত হয়ে সোহেল তাজকে অতিথি কক্ষে বসার আহ্বান জানান।
পরে সোহেল তাজ বোন মাহজাবিন, তাদের পরিবারের দুই শিশু ও তুরিন আফরোজ গণভবনের ফটকে
অতিথি কক্ষে বসেন।
১০ এপ্রিলকে প্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষণাসহ ৩ দাবিতে রোববার বিকালে সংসদ ভবনের সামনে থেকে পদযাত্রা নিয়ে গণভবনে যান বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ।
সোহেল তাজকে গণভবনে
ইফতার করার আমন্ত্রণ জানান বিপ্লব বড়ুয়া ও গণভবনের কয়েকজন কর্মকর্তা। তবে আরেকদিন এসে
ইফতার করবেন বলে এড়িয়ে যান তিনি।
গণভবন থেকে বেরিয়ে
সোহেল তাজ সাংবাদিকদের বলেন, “আজকে ১০ এপ্রিল। ১৯৭১ সালের এই দিনে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ
পরিচালনা করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার
ঘোষণার মাধ্যমে আমাদের প্রথম সরকার গঠিত হয়। এই প্রথম সরকার আমাদের মুক্তিযুদ্ধের
নয় মাস নেতৃত্ব দিয়ে আমাদের মহান স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে।
“এক কোটি শরণার্থী থেকে শুরু করে, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ থেকে
শুরু করে আন্তর্জাতিক, ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে, নানান ষড়যন্ত্রকে
মোকাবেলা করে আমাদের চূড়ান্ত বিজয় ছিনিয়ে আনে। এবং পরবর্তীতে আমাদের জাতির জনক
বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত করে বাংলাদেশের স্বাধীন মাটিতে নিয়ে আসেন।”
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল
বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন হয়েছিল, তার সাতদিন পর ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার
বৈদ্যনাথতলায় সেই সরকারের শপথ অনুষ্ঠান হয়। ওই স্থানটির নাম পরে মুজিবনগর হয়, আর
১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস হিসেবে আওয়ামী লীগও পালন করছে, যে দলটির সংসদ সদস্য হয়ে
২০০৯ সালে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন সোহেল তাজ।
১০ এপ্রিলকে
প্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষণার পাশাপাশি জাতীয় চার নেতা হত্যার দিন ৩ নভেম্বর জাতীয় শোক
দিবস এবং মুক্তিযুদ্ধের সব বেসামরিক ও সামরিক সংগঠক, পরিচালক, শহীদ ও বীর
মুক্তিযোদ্ধাদের নাম, অবদান ও জীবনীসহ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস
গুরুত্বের সঙ্গে সর্বস্তরের পাঠ্যপুস্তকে এবং সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি
জানান সোহেল তাজ।
১০ এপ্রিলকে প্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষণাসহ ৩ দাবিতে রোববার বিকালে সংসদ ভবনের সামনে থেকে পদযাত্রা নিয়ে গণভবনে যান বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ।
তিনি বলেন, “গণভবন
থেকে খুবই চমৎকারভাবে আমাদের রিসিভ করা হয়েছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে
স্মারকলিপিটি দিয়েছি, উনার রিপ্রেজেন্টেটিভ সেটা গ্রহণ করেছে।
“আমি আশা করছি- আমাদের প্রধানমন্ত্রী একমাত্র ব্যক্তি বাংলাদেশে,
যিনি তিনটি দাবিই পূরণ করতে পারবেন। আমার সম্পূর্ণ আস্থা উনার প্রতি আছে, আমি আশা
করছি, ভবিষ্যতে উনি তিনটি দাবি পূরণ করবেন।”
২০০৯ সালে শেখ হাসিনার
সরকারে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন, তবে পাঁচ মাস পরই পদত্যাগ
করেন। পরে রাজনীতিই ছেড়ে দেন তিনি।
রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলে
আরও সহজে এসব দাবি বাস্তবায়ন করতে পারতেন কি না- এ প্রশ্নের উত্তরে সোহেল তাজ
বলেন, “বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমরা যে যেখানে আছি, সেই অবস্থান থেকে
অবদান রাখতে পারি। আমি সেই বিশ্বাসেই আজকে এসেছি।
“রাজনৈতিক নয়, ব্যক্তি হিসেবে আমি কী করতে পারি- এই প্রতিবাদ, এই সচেতনতা
সৃষ্টির মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় আমরা এই দাবিগুলো পূরণ করতে পারব
বলে আশা করছি।”