তৃতীয় দিন দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ১৩৬.২ ওভারে ৪৫৩ বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৭৪.২ ওভারে ২১৭ দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: ৩৯.৫ ওভারে ১৭৬/৬ (ডি.) বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ০.৩ ওভারে ১/১ |
বিশাল লক্ষ্য
৪১৩ রানের লক্ষ্য
তড়ায় জিততে
হলে ইতিহাস
গড়তে হবে
বাংলাদেশকে। দুইশর
বেশি রান
তাড়ায়ই তারা
এখনও পর্যন্ত
জিততে পেরেছে
স্রেফ একবার,
খর্বশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০০৯
সালে ২০১৫
রান তাড়ায়
জয়।
পোর্ট এলিজাবেথের এই
সেন্ট জর্জেস
পার্কে সর্বোচ্চ
রান তাড়ায়
জয়ের রেকর্ড
অস্ট্রেলিয়ার। ১৯৯৭
সালে মার্ক
ওয়াহর অসাধারণ
সেঞ্চুরিতে মার্ক টেইলরের দল জিতেছিল
২ উইকেটে।
এই মাঠে আড়াইশ
রান তাড়ায়ও
জয় নেই
আর একটিও।
ইনিংস ঘোষণা
মেহেদী হাসান মিরাজের
দারুণ ডেলিভারিতে
৬ রানে
বোল্ড হলেন
ভিযান মুল্ডার। দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ডিন
এলগার ইনিংস
ঘোষণা করে
দিলেন এই
উইকেটের সঙ্গেই।
৬ উইকেটে ১৭৬
রানে ইনিংস
ছাড়ল দক্ষিণ
আফ্রিকা।
প্রথম ইনিংসের
২৩৬ রানের
লিড মিলিয়ে
তারা এগিয়ে
৪১২ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা
১ম ইনিংস: ৪৫৩
বাংলাদেশ ১ম
ইনিংস: (আগের
দিন ১৩৯/৫) ৭৪.২ ওভারে
২১৭ (মুশফিক
৫১, ইয়াসির
৪৬, মিরাজ
১১, তাইজুল
৫, খালেদ
০*, ইবাদত
০; অলিভিয়ের
১৫-৪-৩৯-২,
উইলিয়ামস ১২-২-৫১-০, হার্মার
১০.২-১-৩৯-৩, মহারাজ
২৪-৬-৫৭-২,
মুল্ডার ১৩-৭-২৫-৩)।
দক্ষিণ আফ্রিকা ২য়
ইনিংস: ৩৯.৫ ওভারে
১৭৬/৬
(ডি.)(এলগার
২৬, এরউইয়া
৪১, পিটারসেন
১৪, বাভুমা
, রিকেলটন ১২, ভেরেইনা ৩৯*, মুল্ডার
৬; ইবাদত
৫-০-২৯-০,
খালেদ ১০-০-৩৮-১, তাইজুল
১৫-২-৬৭-৩,
মিরাজ ৯.৫-৩-৩৪-২)।
রিভিউ হারাল বাংলাদেশ
ইবাদত হোসেনের লেগ
স্টাম্পের বাইরের শর্ট বলে পুল
করার চেষ্টা
করেন কাইল
ভেরেইনা।
ঠিকমতো খেলতে
পারেননি তিনি। বাংলাদেশ আবেদন করে কট
বিহাইন্ডের। আম্পায়ার
আউট না
দেওয়ায় রিভিউ
নেয় বাংলাদেশ।
রিভিউয়ে দেখা যায়
ব্যাট-বলের
মধ্যে দূরত্ব
ছিল বেশ। বাংলাদেশ হারায় একটি রিভিউ।
চারশ ছাড়িয়ে লিড
মেহেদী হাসান মিরাজের
বলে ভিয়ানন
মুল্ডারের দুর্দান্ত শটের বাউন্ডারিতে দক্ষিণ
আফ্রিকার লিড
ছাড়িয়ে গেল
চারশ।
মিরাজের প্রথম
দ্রুত রান বাড়ানোর
চেষ্টায় মেহেদী
হাসান মিরাজকে
স্লগ করার
চেষ্টা করেছিলেন
টেম্বা বাভুমা। কিন্তু বলের নিচে যেতে
পারেননি ঠিকমতো,
ব্যাটে-বলেও
হয়নি।
বল লাগে
পায়ে।
আবদনে আঙুল
তুলে দেন
আম্পায়ার।
বাভুমা টিকতে পারেননি
রিভিউ নিয়েও। দল হারায় একটি রিভিউ।
বাভুমা ফিরলেন ৫৬
বলে ৩০
রান করে। দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৫
উইকেটে ১৫৪। এগিয়ে তারা ৩৯০ রানে।
মিরাজ পেলেন ইনিংসে
প্রথম উইকেটের
দেখা।
তাইজুলের আরেক শিকার
শর্ট মিড অন পজিশনে আরও একটি ক্যাচ পেলেন মুমিনুল হক। তাইজুল
ইসলাম দেখা পেলেন আরেকটি উইকেটের।
রায়ান রিকেলটনকে ক্রিজ ছেড়ে বের হতে দেখেই একটু টেনে ডেলিভারি
করেন তাইজুল। রিকেলটন তাতে পৌঁছতে পারেননি বলের পিচ পর্যন্ত। শেষ মুহূর্তে তাই শট খেলতে
গিয়ও থমকে যান। শেষ রক্ষা হয়নি। ব্যাটে আলতো করে লেগে ক্যাচ যায় সেই শর্ট মিড অনে।
১৮ বলে ১২ রান করে আউট রিকেলটন। দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৪
উইকেটে ১১৯। লিড ৩৫৫ রানের।
তাইজুল পেলেন ম্যাচে নবম শিকারের দেখা। বাংলাদেশের দ্বিতীয়
বোলার হিসেবে এক টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯ উইকেট পেলেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
২০০৮ সালে মিরপুরে ৯ উইকেট নিয়েছিলেন পেসার শাহাদাত হোসেন।
এরউইয়ার বিদায়
সৈয়দ খালেদ আহমেদের
বোলিং ও
মুমিনুল হকের
দারুণ ফিল্ড
প্লেসিংয়ে আউট হয়ে গেলেন
সারেল এরউইয়া।
খালেদের দ্বিতীয় স্পেলের
প্রথম ওভার
সেটি।
ফুল লেংথ
বলটি পিচ
করে একটু
থমকে আসে
ব্যাটে।
এরউইয়ার ড্র্রাইভে
তাই টাইমিংয়ের
গড়বড় হয়ে
বল যায়
মিড অনের
দিকে।
নন স্ট্রাইক
প্রান্তের ব্যাটসম্যানের কাছ ঘেষে শর্ট
মিড অনের
মতো পজিশনে
দাঁড়ান মমিনুল। একটু অপ্রথাগত পজিশন, ক্যাচ
যায় সেখানেই!
৬৬ বলে ৪১
করে আউট
এরউইয়া।
দক্ষিণ আফ্রিকার
রান ৩
উইকেটে ৯০। লিড ৩২৬ রানের।
উইকেটে টেম্বা বাভুমার
সঙ্গী রায়া
ন রিকেলটন।
চা বিরতি
কিগান পিটারসেনের আউটের সঙ্গে চা বিরতির ঘোষণাও দেন আম্পায়ার।
প্রথম ইনিংসে ২৩৬ রানের লিডের সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসে ওভারপ্রতি চারের বেশি গতিতে রান তুলে লিড বাড়িয়ে নিচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। চা বিরতির সময় রান ২ উইকেটে ৮৪, লিড ৩২০ রানের।
ওপেনার সারেল এরউইয়া খেলছেন ৪০ রানে।
তাইজুলের আরেকটি
ম্যাচজুড়ে দারুণ বোলিং করা তাইজুল ইসলাম পেলেন আরেকটি শিকারের দেখা। এবার তিনি ফিরিয়ে দিলেন কিগান পিটারসেনকে।
তাইজুলের ফ্লাইটেড ডেলিভারি মিডল স্টাম্পে পিচ করে টার্ন না করে ভেতরে ঢোকে সোজা। পিটারসেন ব্যাট পেতে দেন টার্নের জন্য, একটু দেরিও করে ফেলেন। বল লাগে প্যাডে। আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার।
পিটারসেন টিকতে পারেননি রিভিউ নিয়েও। আম্পায়ার্স কলে টিকে থাকে সিদ্ধান্ত। আউট হন তিনি ২৫ বলে ১৪ রান করে।
দক্ষিণ আফ্রিকার রান ২ উইকেটে ৮৪।
তাইজুলের শিকার এলগার
অনায়াসেই রান তুলতে থাকা ডিন এলগার নিজের উইকেট উপহার দিলেন বাংলাদেশকে। দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক বোল্ড হয়ে গেলেন তাইজুল ইসলামকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে।
গুড লেংথ বল পিচ করে টার্ন করে ভেতরে ঢোকে বাঁহাতি এলগারের জন্য। আগে থেকেই ঠিক করে রাখা রিভার্স সুইপ খেলার চেষ্টায় তিনি পারেননি ব্যাটে-বলে করতে। বল আঘাত করে লেগ স্টাম্পে।
২৯ বলে ২৬ রান করে আউট এলগার। দক্ষিণ আফ্রিকা ১ উইকেটে ৬০।
শুরুর জুটির আরেকটি ফিফটি
প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও অর্ধশত রানের উদ্বোধনী জুটি গড়লেন ডিন এলগার ও সারেল এরউইয়া। মত্র ৫০ বলেই এলো দুজনের জুটির ৫০।
এগোচ্ছেন দুজন সমান গতিতেই। এরউইয়ার রান ২৪, এলগারের ২২।
দক্ষিণ আফ্রিকার লিড ২৮৬ রানের।
মাঠে ফিরে বোলিংয়ে মিরাজ
মেহেদী হাসান মিরাজের আঘাত শেষ পর্যন্ত গুরুতর কিছু হয়নি। প্রথম ওভারে স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়লেও তিনি মাঠে ফেরেন চার ওভারের পরই। প্রথম ৬ ওভারে পেসারদের ধারহীন বোলিংয়ে সপ্তম ওভারে মিরাজের হাতেই বল তুলে দেন অধিনায়ক মুমিনুল হক।
শুরুতেই সুযোগ হাতছাড়া
ইনিংসের প্রথম ওভারেই ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গেলেন সারেল এরউইয়া। গায়ে বল লাগায় স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়তে হলো মেহেদী হাসান মিরাজকে।
ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ইবাদত হোসেন চৌধুরিকে সজোরে কাট করেন এরউইয়া। বল যায় সোজা পয়েন্টে মিরাজের দিকে। কিন্তু বলের গতিপথই বুঝতে পারেননি মিরাজ, তিনি তাকিয়ে থাকেন বাঁ পাশে। বল সোজা গিয়ে লাগে তার পাঁজরের একটু নিচে।
যেটি হতে পারত সহজ ক্যাচ, সেটিইতে আহত মিরাজ। যন্ত্রণায় তিনি শুয়ে পড়েন মাটিতে। বাংলাদেশের ফিজিও প্রবেশ করেন মাঠে। একটু পর তিনি মাঠ ছাড়েন স্ট্রেচারে।
ক্যাচ হাতছাড়া তো বটেই, মাত্র চার বোলার নিয়ে মাঠে নামা বাংলাদেশের জন্য বড় আঘাতও। বল হাতে যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে মিরাজের!
ফলো-অন নয়
২৩৬ রানের লিড। বোলাররাও খুব ক্লান্ত নয়। আকাশ মেঘলা, কন্ডিশন বোলারদের পক্ষে। তবে সুযোগ পেয়েও বাংলাদেশকে ফলো-অন করাল না দক্ষিণ আফ্রিকা। আবার ব্যাটিংয়ে নেমে তারা চায় রান আরও বাড়িয়ে বাংলাদেশকে রান-চাপা দিতে।
শেষের ধস
মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলির ৭০ রানের জুটির ভাঙার পর বাংলাদেশের ইনিংসও ভেঙে পড়ল হুড়মুড়িয়ে। শেষ ৫ উইকেটের পতন স্রেফ ২৫ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৪৫৩
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ১৩৯/৫) ৭৪.২ ওভারে ২১৭ (মুশফিক ৫১, ইয়াসির ৪৬, মিরাজ ১১, তাইজুল ৫, খালেদ ০*, ইবাদত ০; অলিভিয়ের ১৫-৪-৩৯-২, উইলিয়ামস ১২-২-৫১-০, হার্মার ১০.২-১-৩৯-৩, মহারাজ ২৪-৬-৫৭-২, মুল্ডার ১৩-৭-২৫-৩)।
ইনিংসের সমাপ্তি
মিরাজের আউটের পর শেষ ব্যাটসম্যান ইবাদত হোসেনও বিদায় নিলেন একই ওভারেই। মহারাজকে স্লগ করে তিনি ধরা পড়লেন লিজাড উইলিয়ামসের হাতে।
শুন্য রানে আউট ইবাদত। টেস্টে টানা ৯ ইনিংস অপরাজিত থাকার পর তিনি আউট হলেন। বাংলাদেশের ইনিংস শেষ ২১৭ রানে।
স্লগ করে আউট মিরাজ
একের পর এক সঙ্গীকে হারিয়ে দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় কেশভ মহারাজকে উড়িয়ে মারলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে টাইমিং হলো না যথেষ্ট ভালো। অন সাইডে সীমানায় একজন ফিল্ডারই ছিল। স্লগ সুইপে তিনি বল তুলে দিলেন মিড উইকেটে সেই ফিল্ডারের হাতেই।
৩৫ বলে ১১ রান করে আউট মিরাজ। বাংলাদেশের রান ৯ উইকেটে ২১৭।
তাইজুলের বিদায়
লাঞ্চের পর থেকে আগ্রাসী সব শট খেলার চেষ্টা করছিলেন তাইজুল ইসলাম। খুব বেশিক্ষষ টিকতে পারলেন না সেই পথে।
সাইমন হার্মারের ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারিতে বলের পিচে তা গিয়েই উড়িয়ে মারেন তাইজুল। বল টার্ন করে তার ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে সহজ ক্যাচ উঠে যায় মিড অফে।
১৪ বলে ৫ রান করে আউট তাইজুল। ফলো-অনের আরেকটু কাছে বাংলাদেশ। রান ৮ উইকেটে ২১৬।
লাঞ্চের পর খেলা শুরু
লাঞ্চের পর দুই স্পিনার সাইমন হার্মার ও কেশভ মহারাজকে দিয়ে বোলিং শুরু করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশের হয়ে ব্যাট করছেন দুই স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম।
লাঞ্চ বিরতি
দিনের শুরুটা ছিল বাংলাদেশের জন্য দারুণ। প্রথম ঘণ্টায় কোনো উইকেট হারায়নি তারা, দ্বিতীয় ঘণ্টায়ও ইয়াসির আলি ও মুশফিকর রহিম এগোচ্ছিলেন ভালোই। কিন্তু সেশনের শেষ দিকে সব গড়বড়।
ফিফটির কাছে গিয়ে আলগা শটে আউট হলেন ইয়াসির, ফিফটি পেরিয়েই উইকেট বিলিয়ে ফিরলেন মুশফিক।
লাঞ্চের সময় বাংলাদেশের রান ৭ উইকেটে ২১০। ফলো-অন এড়াতে হলে প্রয়োজন আরও ৪৪ রান।
উইকেটে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ৯ রান নিয়ে, তাইজুল ইসলাম আছেন শূন্য রানে।
আত্মঘাতী মুশফিক
ফিফটি করেই হয়তো নিজের কাজ শেষ মনে করলেন মুশফিকুর রহিম। আউট হয়ে গেলেন ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় অবিশ্বাস্য এক শট খেলে।
সাইমন হার্মারের প্রথম বলে চার মেরে ফিফটি করেন মুশফিক, পরের বল লাগে প্যাডে। জোরাল আবেদনে আউট দেননি আম্পায়ার। দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো রিভিউ তখন বাকি নেই। রিপ্লেতে দেখা, আউট ছিলেন মুশফিক।
তবে প্রোটিয়াদের আক্ষেপে পুড়তে হয়নি একটুও। পরের বলেই উইকেট উপহার দেন মুশফিক। হার্মারের ফুল লেংথ বলে তিনি রিভার্স সুইপ করার চেষ্টা করলেন। ব্যাটের নিচ দিয়ে গিয়ে বল লাগল স্টাম্পে। বিশ্বাস করতে পারছিলেন না বোলার নিজেও।
১৩৬ বলে ৫১ রানে আউট মুশফিক। বাংলাদেশের রান ৭ উইকেটে ২১০।
মুশফিকের ফিফটি
তৃতীয় দিনে প্রথমবারের মতো বল হাতে পেলেন সাইমন হার্মার। এই অফ স্পিনারের প্রথম বলেই সুইপ করে বাউন্ডারি মেরে মুশফিক পূর্ণ করলেন ফিফটি।
১৯২ মিনিট ক্রিজে থেকে ১৩৪ বলে মুশফিক করলেন ফিফটি। টেস্টে এটি তার ২৫তম ফিফটি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০ টেস্টে মাত্র তৃতীয় ফিফটি। আগের দুটিতেই রান ছিল ৬৫, প্রথমটি ২০০৮ সালে সেঞ্চুরিয়নে, পরেরটি ২০১৫ সালে মিরপুরে।
বাংলাদেশের ২০০
ডুয়ানে অলিভিয়েরের শর্ট বলে মেহেদী হাসান মিরাজের দারুণ পুল শটের বাউন্ডারিতে বাংলাদেশে রান পেরিয়ে গেল দুইশ।
৬৬.৩ ওভারে এলো ২০০ রান।
মুশফিক খেলছেন ৪৫ রানে, মিরাজ ৮।
ইয়াসিরের বিদায়
এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে হয়তো মনোসংযোগে চিড় ধরে গিয়েছিল ইয়াসির আলি চৌধুরির। দারুণ খেলতে থাকা ব্যাটসম্যান হুট করেই খেললেন আলগা শট। খেসারত দিলেন উইকেট হারিয়ে।
কেশভ মহারাজের ঝুলিয়ে দেওয়া ফুল লেংথ ডেলিভারিতে বলের পিচে না গিয়েই আলতো করে ফ্লিক করার চেষ্টা করেন ইয়াসির। টার্নিং ডেলিভারি ব্যাটের কানায় লেগে সহজ ক্যাচ যায় বোলারের কাছেই। মহারাজ শুরুতে ঠিকঠাক নিতে পারেননি, বল তার হাতে লেগে বাহু দিয়ে গড়িয়ে পেটের কাছে আটকে যায়।
হতাশায় মাঠ ছাড়েন ইয়াসির। তার ইনিংস শেষ ৮৭ বলে ৪৬ রানে। মুশফিকের সঙ্গে জুটির সমাপ্তি ৭০ রানে।
বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১৯২।
সব রিভিউ শেষ দক্ষিণ আফ্রিকার
কেশভ মহারাজের টার্নিং ডেলিভারি ইয়াসির আলি চৌধুরি ব্যাট ফাঁকি দিয়ে লাগে পেছনের পায়ে। দক্ষিণ আফ্রিকার জোরাল আবেদনে আঙুল তোলেননি আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস। ডিন এলগার নেন রিভিউ।
রিভিউয়ে দেখা যায়, বল পিচ করেছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে। তিন রিভিউয়ের সবকটি হারাল দক্ষিণ আফ্রিকা।
স্বস্তির ঘণ্টা
প্রবল চাপ নিয়ে দিনের খেলা শুরুর পর বাংলাদেশ এগোচ্ছে শক্ত পদক্ষেপে। মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলি চৌধুরির দৃঢ়তায় প্রথম ঘণ্টায় হারাতে হয়নি কোনো উইকেট। ১৪ ওভারে রান এসেছে ৪৪।
দিনের প্রথম পানি পানের বিরতির সময় বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ১৮৩। ইয়াসির খেলছেন ৪০ রানে, ৩৮ রানে মুশফিক।
জুটির পঞ্চাশ
ইয়াসির আলি চৌধুরির সৌজন্যে দিনের শুরুটা দারুণ করেছে বাংলাদেশ। দিনের প্রথম তিন বলে বাউন্ডারির পর ইয়াসির ধরে রেখেছেন তার ইতিবাচক ব্যাটিংয়ের ধারা। উইকেট আগলে আছেন মুশফিকুর রহিম।
দুজনের জুটিতে পঞ্চাশ এসেছে ৮৪ বলে। তাতে ইয়াসিরের অবদান ৩৫।
বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ১৭২।
খেলা শুরু, বাংলাদেশের দেড়শ
বৃষ্টি খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষায় রাখল না দুই দলকে। মিনিট ১৫ পরই শুরু হলো খেলা।
দিনের প্রথম তিন বলেই লিজাড উইলিয়ামসকে টানা তিনটি বাউন্ডারি মারলেন ইয়াসির আলি চৌধুরি। প্রথমটি ছিল ব্যাটের কানায় লেগে, পরের দুটি দারুণ শটে।
তৃতীয় বাউন্ডারিতে বাংলাদেশের রান পেরিয়ে গেল দেড়শ।
বৃষ্টির হানা
দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডাররা মাঠে নামার পরই বিপত্তি। শুরু হলো গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। মাঠকর্মীরা উইকেট ঢেকে দিলেন কাভারে। ক্রিকেটাররা মাঠ ছেড়ে আশ্রয় নিলেন ড্রেসিং রুমে। সময়মতো শুরু হতে পারল না খেলা।
গুমোট সকাল
খেলা শুরুর আগে ধারাভাষ্যকার মার্ক নিকোলাস টিভিতে জানালেন, রাতে বৃষ্টি হয়েছে অনেক। সকাল থেকেও আকাশ কালো মেঘে ঢাকা। চারপাশ বেশ গুমোট। সেন্ট জর্জেস পার্কের ফ্লাড লাইট জ্বলে উঠেছে সকালেই।
মেঘলা আকাশের নিচে তাই বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জটা হবে আরও কঠিন।
ভরসা মুশফিক, সঙ্গী ইয়াসির-মিরাজ
ফলো-অন এড়িয়ে লড়াইয়ে ফেরার চেষ্টায় বাংলাদেশ তাকিয়ে থাকবে মুশফিকুর রহিমের অভিজ্ঞ ব্যাটে। দ্বিতীয় দিনের কঠিন শেষ সময়টায় দারুণ লড়াই করে তিনি মাঠ ছাড়েন ৩০ রানে অপরাজিত থেকে।
আগের দিনের আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলি চৌধুরিকেও রাখতে হবে বড় ভূমিকা। বাইরে অপেক্ষায় মেহেদী হাসান মিরাজ। ব্যাট হাতে বেশ ভালো ফর্মে থাকা অলরাউন্ডারের ওপরও নির্ভর করবে দল।
ফলো-অন এড়ানোর অভিযান
প্রথম দিন শেষে লড়াইয়ে ভালোভাবেই ছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনে বদলে গেছে পুরো চিত্র। দাপুটে দিনের শেষে বলা যায় ম্যাচ জয়ের ক্ষেত্রও তৈরি করে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ পড়েছে ফলো-অনের শঙ্কায়।
৫ উইকেটে ১৩৯ রান নিয়ে শনিবার দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। ফলো-অন এড়াতে প্রয়োজন আরও ১১৫ রান।
২য় দিন শেষে সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ১৩৬.২ ওভারে ৪৫৩ (এলগার ৭০, এরউইয়া ২৪, পিটারসেন ৬৪, বাভুমা ৬৭, রিকেলটন ৪২, ভেরেইনা ২২, মুল্ডার ৩৩, মহারাজ ৮৪, হার্মার ১৯, উইলিয়ামস ১৩, অলিভিয়ের ০*; খালেদ ২৯-৬-১০০-৩, মিরাজ ২৬.২-৪-৮৫-১, ইবাদত ২৮-৩-১২১-০, তাইজুল ৫০-১০-১৩৫-৬, শান্ত ৩-০-৯-০)।
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪১ ওভারে ১৩৯/৫ (তামিম ৪৭, জয় ০, শান্ত ৩৩, মুমিনুল ৬, মুশফিক ৩০*, লিটন ১১, ইয়াসির ৮*; অলিভিয়ের ৯-৪-১৭-২, উইলিয়ামস ৮-২-৩০-০, হার্মার ৭-১-৩১-০, মহারাজ ১১-১-৪২-০, মুল্ডার ৬-৩-১৫-৩)।